নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ফের ভোলবদল আবহাওয়ার!
তল্পিতল্পা গুটিয়ে বিদায় নেওয়ার সময় হয়ে গিয়েছিল তার। দিন কয়েক আগে সেই রকম ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন আবহবিদেরা। এ বার তাঁরা বলছেন, বায়ুপ্রবাহের হঠাৎ পরিবর্তনে ফিরতে পারে শীত। তীব্র উত্তুরে হাওয়ার উপস্থিতি শুক্রবার সেই ইঙ্গিত দিয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, আজ, শনিবার থেকে রাজ্যজুড়ে ফের তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী দু’দিনে তা নামতে পারে ১৩-১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যা এ সময়ের স্বাভাবিক সর্বনিম্ন তাপমাত্রা (১৬ ডিগ্রি)-র থেকে অনেকটাই কম। মৌসম ভবন জানিয়েছে, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবেই উত্তর ভারতে গত পাঁচ দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। হাড় কনকনে ঠান্ডাও মালুম হচ্ছে। কিন্তু কী এই পশ্চিমী ঝঞ্ঝা?
আবহবিদেরা জানিয়েছেন, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল থেকে বয়ে আসা বায়ুপ্রবাহই হল পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। যা আফগানিস্তান, পাকিস্তান হয়ে কাশ্মীরে ঢোকে। তার পর নেমে আসে দেশের সমতলের দিকে। এই বায়ুপ্রবাহের প্রভাবেই শীতকালে বৃষ্টি-তুষারপাত হয়। আবহবিজ্ঞানীরা বলছেন, উত্তর ভারতে বৃষ্টি-তুষারপাত ঘটিয়ে এ বার সেই বায়ুপ্রবাহ মধ্য ও পূর্ব ভারতের বিহার, ঝাড়খণ্ড হয়ে ঢুকে পড়েছে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে। সঙ্গে ঢুকেছে মেঘ-ও। যার ফলে আকাশ মেঘলা হয়ে থাকছে দিনের বেশির ভাগ সময়েই। এ দিন মহানগরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা উঠে গিয়েছে ১৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যা স্বাভাবিকের থেকে চার ডিগ্রি বেশি। আবহবিদেরা বলছেন, এটাই আবহাওয়ার স্বাভাবিক চরিত্র। যদিও এ বার তাতে কিছুটা বদল ধরা পড়েছে। কী রকম?
হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, পশ্চিমী ঝঞ্ঝা দক্ষিণবঙ্গে ঢোকার পরে পরিমণ্ডলে একটি উচ্চচাপ বলয় তৈরি হয়েছে। তার জেরে জোরদার হয়েছে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, “দক্ষিণবঙ্গের কোনও কোনও এলাকায় বৃষ্টি হবে। কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রা এক ধাক্কায় অনেকটা কমবে।”
চলতি মরসুমে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা যে ভাবে আবহবিদদের বোকা বানিয়েছে, তাতে এটাই শীতের শেষ ইনিংস কি না তা জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না বিজ্ঞানীরা। দিল্লির মৌসম ভবনের এক আবহবিদ জানাচ্ছেন, একের পর এক পশ্চিমী ঝঞ্ঝা যে ভাবে কাশ্মীর দিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ছে তাতে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিতেই সমস্যা হচ্ছে। ফেব্রুয়ারি প্রথম সপ্তাহে কাশ্মীর, হিমাচলপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডে তুষারপাত হয়েছে! এবং উত্তর ভারতের সমতলে যে হারে বৃষ্টি (কোথাও কোথাও একদিনে ৭০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে) হয়েছে, তাতে শীত সেখানে কত দিন স্থায়ী হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। |