খুব জানতে ইচ্ছে করছিল, পিটার সিডল, মিচেল জনসন, জেমস প্যাটিনসন, মিচেল স্টার্কদের শুক্রবার তেন্ডুলকরের ইনিংস দেখার সৌভাগ্য হয়েছে কি না। যদি না হয়, তা হলে ওরা যেন অবশ্যই ইরানির ইনিংসটার ডিভিডি জোগাড় করে ফেলে খুব তাড়াতাড়ি। আমি বলার আগে ডেনিস লিলি হয়তো তা জোগাড় করেও ফেলেছে। কারণ, ও জানে, সচিনের এই ইনিংসটা নিয়ে হোমওয়ার্ক না করলে ভারতে এসে বেশ বিপদে পড়ে যাবে অস্ট্রেলীয় বোলাররা।
এক ওয়েবসাইটে পড়ছিলাম ওদের অফস্পিনার নাথান লিয়ঁ বলেছে, ভারতে আসন্ন টেস্ট সিরিজে তাদের দলে দু’জন স্পিনার রাখা উচিত। তার জন্যও একটা তথ্য, শুক্রবার ওয়াংখেড়েতে যে ১৪০ রান করল সচিন, তার মধ্যে ৭৪ রানই প্রজ্ঞান ওঝা (৪৮) আর হরভজন সিংহের (২৬) ওভারে তোলা। টুইটারে দেখছিলাম স্কাই টিভির অস্ট্রেলীয় শাখা ‘ব্রেকিং নিউজ’ দিয়েছে ইরানি কাপে সচিনের সেঞ্চুরির। মাস্টার ব্লাস্টারের এই সেঞ্চুরিটা যে ওদের হৃদয়ে কিছুটা হলেও কাঁপন ধরিয়েছে, সন্দেহ নেই। |
শুক্রবার সচিন যে ইনিংসটা খেলল, তার পর তার বিরোধী শিবির তো চাপে থাকবেই। যদিও ওকে মদত জোগানোর মতো ব্যাটসম্যান দলে না থাকায় প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে পড়েছে মুম্বই। কিন্তু ভারত এ মাসের শেষেই যখন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নামবে, তখন তো আর তা হবে না। তাই অস্ট্রেলিয়া চিন্তায় পড়তে বাধ্য। এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চাপ ঘাড় থেকে নামিয়ে যে কী ভাল করেছে সচিন, তা এই ইনিংসেই বোঝা গেল। সেই আত্মবিশ্বাস, প্রত্যয়, নিখুঁত টেকনিক আর ফুটওয়ার্ক। সব মিলিয়ে শুক্রবার সচিনের ইনিংস দেখে মনে হল ওয়াংখেড়ে একটা ক্লাসরুম আর সেখানে এক অধ্যাপক তাঁর জ্ঞানের ডালি সাজিয়ে বসেছেন একঝাঁক উৎসাহী ছাত্রের সামনে। ছাত্রদের নাম রোহিত, রাহানে, মনোজ, অভিষেক নায়ার, রায়না, শিখর, বিজয়। ওদের দেখে আমার বড় হিংসে হচ্ছে। এমন ইনিংস সামনে থেকে দেখা যে কী সৌভাগ্যের ব্যাপার, তা বলে বোঝাতে পারব না।
এই মুহূর্তে ভারতীয় ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় খবর এটাই, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ শুরুর ঠিক দু’সপ্তাহ আগে চেনা সচিনকে ফিরে পাওয়া গেল। এ বারও নিজেদের হোমওয়ার্কে সচিনকে নিয়ে আলাদা চ্যাপ্টার লিখতে হবে অস্ট্রেলীয়দের।
|
তবু পিছিয়ে গেল মুম্বই
নিজস্ব প্রতিবেদন |
যোগ্য সঙ্গতের অভাবে সচিন তেন্ডুলকরের সেঞ্চুরি মুম্বইয়ের কাজে লাগল না। ইরানি কাপে অবশিষ্ট ভারতীয় একাদশের ৫২৬ রানের পাহাড় টপকাতে পারল না রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন মুম্বই। প্রথম ইনিংসে বিপক্ষের চেয়ে ১১৭ রান দূরে থাকতেই অল আউট হয়ে গেল তারা। সচিন ১৪০ রানে অপরাজিত থাকলেও উল্টোদিকে তাঁর সঙ্গে টিকে থাকতে পারলেন না কেউ। সচিনের ১৮তম রঞ্জি সেঞ্চুরি তাই প্রায় বিফলে যাওয়ার পথে। যদিও খেলার এখনও দু’দিন বাকি এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা অবশিষ্ট দল দিনের শেষে ২৭ রান তোলার পথে ওপেনার শিখর ধাওয়ানকে খুইয়েছে। শনিবার চতুর্থ দিনে যদি হরভজন সিংহর নেতৃত্বাধীন অবশিষ্ট দলের সবাইকে ড্রেসিং রুমে ফিরিয়ে দিতে পারেন মুম্বই বোলাররা, তা হলে ম্যাচটা ফের ফয়সালার জায়গায় চলে যেতে পারে। আগের দিন অপরাজিত থাকা রাহানে এ দিন ৮৩ রান করে আউট হয়ে যান। সপ্তম উইকেটে অঙ্কিত চবনের (৪৯) সঙ্গে ১০৩ রানের পার্টনারশিপ খেলেন সচিন। কিন্তু উল্টোদিক থেকে ঘন ঘন উইকেট পড়তে শুরু করায় শেষ রক্ষা হয়নি। |