এক বধূকে বাজারে নিয়ে যাওয়ার নাম করে ফুঁসলিয়ে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতে ওই বধূ শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এমনকী তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। পুলিশ জানায়, ওই গৃহবধূর বাড়ি প্রধাননগরের পাতিকলোনি এলাকায়। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে দু’দিন শিলিগুড়ি থানার রথখোলা এলাকায় একটি বাড়িতে আটকে রাখা হয়। পরে একটি অচেনা জায়গায় আরও একদিন তাঁকে আটকে রাখা হয়। সেখানেই তাঁকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। এ দিন বিষয়টি পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছে আঁচ করে একজন অভিযুক্ত অটোতে করে তাঁকে প্রধাননগর এলাকায় নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় বলে তিনি দাবি করেছেন। ওই ঘটনায় তিনি এক মহিলা ও দুই যুবকের নামে অভিযোগ করেছেন। রাতে পুলিশ রথখোলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।
শিলিগুড়ির অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার এ রবীন্দ্রনাথ বলেন, “ঘটনায় একটি ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাঁকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলেও বধূ অভিযোগ করেছেন। তদন্ত হচ্ছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি হচ্ছে।” পুলিশ জানায়, বধূর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য শিলিগুড়ি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, পাতিকলোনি এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে মা ও স্বামীর সঙ্গে ওই বধূ থাকতেন। ওই বাড়িতে আরও এক মহিলা ভাড়াটে রয়েছেন। কয়েকদিন আগে তাঁর মেয়ে ওই বাড়িতে যান। গত সোমবার সে ওই বধূকে বিধান মার্কেটে যাওয়ার নাম করে তাঁকে নিয়ে বের হন। বাজারে না গিয়ে তাঁকে নিয়ে ওই অভিযুক্ত রথখোলা এলাকায় একটি বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার ওই বাড়িতে এক যুবক যায়। রাতে সে তাঁকে নিয়ে একটি গাড়িতে উঠিয়ে অচেনা জায়গায় নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। সেখানেও একটি বাড়িতে তাঁকে আটকে রাখা হয়। সেখানেই এক যুবক তাঁকে কিনে নিয়েছে বলে দাবি করে জোর করে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। তিনি বলেন, “আমাকে এক যুবকের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে একটি বাড়িতে আমাকে আটরে রেখে ধর্ষণ করা হয়েছে। বহুবার তাদের হাতে পায়ে ধরেছি। আমাকে ছেড়ে দেয়নি।”
অভিযোগকারিণীর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, বধূ তিন দিন ধরে না ফেরায় তাঁরা ওই ভাড়াটে মহিলাকে চাপ দেন। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হবে বলে সতর্ক করেন। পরে ওই ভাড়াটে মহিলা তাঁর মেয়ের সঙ্গে যোগোযাগ করে। এর পরেই এ দিন তাঁকে অটোতে করে প্রধাননগর এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী মৌমিতা মজুমদার এবং এলাকার সিপিএম নেতৃত্বকে জানানো হয়। মৌমিতা দেবী ওই বধূর সঙ্গে থানায় যান। তিনি বলেন, “ওই মহিলার সঙ্গে কথা বলছি। পরে সব জানাব।” ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা সিপিএম নেতা নুরুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার উপযুক্ত তদন্তের দাবি করছি।” |