দাম মেলেনি পাটে, নালিশ
মন্ত্রীকে প্রশ্ন, ‘প্রাপ্তি’ ধমক
সামনে শিল্পমন্ত্রীকে পেয়ে পাটের দাম না মেলার সমস্যা জানাতে গিয়েছিলেন কৃষক নৃপেন্দ্রনাথ রায়। চিৎকার করে বলেও ফেলেছিলেন তাঁর সমস্যার কথা। সাংবাদিক সম্মেলন চলাকালীন তাঁর প্রশ্ন শুনে, শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এগিয়ে এসে বলেন, সাংবাদিকদের প্রশ্ন করতে দিন। তারপরেই তৃণমূল নেতারা এসে তড়িঘড়ি প্রশ্নকর্তাকে সরিয়ে নিয়ে যান। শিল্পমন্ত্রীকে প্রশ্ন করায় স্থানীয় নেতাদের কাছে ধমকও খেতে হয় তাঁকে। ভাওয়াইয়া উৎসব প্রাঙ্গন থেকে চলে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। জোটে সিপিএম কর্মীর তকমাও। নৃপেন্দ্রনাথবাবু বলেন, “এলাকার সকলেই জানেন আমি তৃণমূল কর্মী। মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে আমাদের সমস্যার কথা জানাতে গিয়েছিলাম. আমি কী অন্যায় করেছি?”
বৃহস্পতিবার বেলাকোবায় ২৩-তম রাজ্য ভাওয়াইয়া প্রতিযোগিতা ও উৎসবের উদ্বোধন সেরে মঞ্চ থেকে নেমে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মন্ত্রীকে দেখার জন্য অনুষ্ঠানের সব দর্শকরাই তখন সেখানে চলে আসেন। আসনে দর্শক না থাকায় কিছুক্ষণের জন্য অনুষ্ঠানও বন্ধ থাকে। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ফাঁকেই পাশে দাড়ানো কৃষক নৃপেন্দ্রনাথ বাবু বলেন, “মরশুমে পাটের দাম পাই না। ঋণের জালে ডুবে থাকতে হয়। জলপাইগুড়িতে জুটমিল করলে ভাল হয়।” নৃপেন্দ্রনাথবাবুর সঙ্গে কয়েকজনও তখন একই অভিযোগে গলা মেলান। পার্থবাবুর পাশে দাড়ানো রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায় থেকে শুরু করে অন্য নেতারা অস্বস্তিতে পড়ে যান। নেতাদের ইশারায় স্বেচ্ছাসেবক ব্যাচ লাগানো কর্মীরা তখন নৃপেন্দ্রনাথবাবুর দিকে তেড়ে যান।
পাটের বিষয়ে প্রশ্ন শুনে পার্থবাবু উত্তর দিতে গেলেও যখন জানতে পারেন তিনি সাংবাদিক নন, তখন প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে নেন। পরে অবশ্য শিল্পমন্ত্রী পার্থবাবু বলেন, “জলপাইগুড়িতে হচ্ছে না ঠিকই তবে কোচবিহারে পাট গবেষণা এবং পাট বিষয়ক শিল্পের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমান রাজ্য সরকারই এই উদ্যোগ নিয়েছে। দ্রুত এই কাজ করা হবে।” সাধারণ কৃষক শিল্পমন্ত্রীর কাছে সমস্যার কথা কেন জানাতে পারবেন না, রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বরবাবুর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “শিল্পমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন করছিলেন। সে সময়ে অন্য কেউ প্রশ্ন করলে বিঘ্ন ঘটবে। সে কারণেই ওই ব্যাক্তিকে চুপ করতে বলা হয়েছে। আর সিপিএম মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নানাভাবে বিঘ্ন তৈরি করতে চাইছে।”
উৎসব প্রাঙ্গন থেকে বার হয়ে এসে দশদরগা এলাকার বাসিন্দা নৃপেন্দ্রনাথবাবু বলেন, “সিপিএম না তৃণমূলই করি। তাও আমাকে জোর করে সরিয়ে দেওয়া হল। হাজার টাকা লাগিয়ে মরসুমে পাটের মণ প্রতি ৮০০ টাকা পেলাম। ঋণে ডুবে গেলাম। জেলায় একটা জুটমিল থাকলে এই অবস্থা হত না। সেটাই তো মন্ত্রীকে বলতে গিয়েছিলাম। কৃষকদের কষ্ট শুধু কৃষকরাই বুঝতে পারবেন।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত এক শিক্ষক মফিজুল মন্ডল বলেন, “সাংবাদিকদেরই কী শুধু মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলার আধিকার আছে? সাধারণ মানুষকে এভাবে দূরে সরিয়ে দিলে আগের সরকারের মত জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.