কৃষিক্ষেত্র ও মাছ চাষে সফল হওয়ায় উত্তর দিনাজপুর জেলা থেকে ‘কৃষিরত্ন’ পুরস্কার পেতে চলেছেন হেমতাবাদ ব্লকের বিষ্ণুপুর প্রধানপাড়া এলাকার বাসিন্দা সোলেমান আলি প্রধান। রাজ্য কৃষি দফতরের উদ্যোগে বর্ধমান জেলার পানাগড়ে আয়োজিত মাটি উত্সব অনুষ্ঠানে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি সোলেমানবাবুর হাতে কৃষিরত্ন পুরস্কার তুলে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার রাজ্য কৃষি দফতর থেকে সোলেমানবাবুর নাম পাঠিয়ে লিখিতভাবে বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চাষিদের উৎসাহ বাড়াতে এই প্রথম জেলায় জেলায় ‘কৃষিরত্ন’ পুরস্কার চালু করল রাজ্য সরকার। রাজ্যের প্রতিটি জেলা থেকে একজন করে চাষিকে ওই পুরস্কার দেওয়া হবে। ধান, পাট, গম চাষ সহ মাছ চাষ, বীজ ও কেঁচো সার তৈরি, পশু ও হাঁস-মুরগি পালনের কাজে জেলায় সফল চাষিদেরই ওই পুরস্কার দেওয়া হবে। |
সোলেমান আলি প্রধান। ছবিটি তুলেছেন তরুণ দেবনাথ। |
গত ১৭ জানুয়ারি রাজ্য সরকার রাজ্যের সমস্ত জেলার কৃষি দফতরকে কৃষিরত্ন পুরস্কার চালুর বিষয়টি জানিয়ে প্রতিটি জেলা থেকে একজন করে সফল চাষির নাম পাঠানোর নির্দেশ দেয়। সেইমতো উত্তর দিনাজপুর জেলার নয়টি ব্লকে গড়ে ২৫ জন করে চাষিকে নিয়ে ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেয় কৃষি দফতর। নয়টি ব্লক মিলিয়ে ওই পরীক্ষায় সফল মোট নয় জন চাষিকে নিয়ে এরপর গত সপ্তাহে জেলাস্তরে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। ওই পরীক্ষায় হেমতাবাদ ব্লক থেকে সফল হওয়া সোলেমানবাবুর নাম এরপর জেলা প্রশাসনের তরফে রাজ্য কৃষি দফতরে পাঠানো হয়।
হেমতাবাদ ব্লক কৃষি আধিকারিক শ্রীকান্ত সিংহ বলেন, “কৃষি দফতরের সহযোগিতায় অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কৃষিক্ষেত্র ও মাছচাষে সফল হওয়ায় সোলেমানবাবুকে কৃষিরত্ন পুরস্কারের জন্য বিবেচিত করেছে রাজ্য সরকার। তাঁর সাফল্যে হেমতাবাদ ব্লকের চাষিরা উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা পেয়েছেন।”
সোলেমানবাবুর মোট ৮ বিঘা জমি রয়েছে! তারমধ্যে তিনি ৩ বিঘা জমিতে জৈবসার প্রয়োগ করে শ্রীপদ্ধতিতে ৩০ মন তুলাইপাঞ্জি ধান উৎপাদন করেছেন। গত বছরের অগস্ট মাসে বীজ রোপন করে নভেম্বর মাসে তিনি ধান তুলেছেন। নিজস্ব জমিতে ২০ কুইন্টাল কেঁচো সার উৎপাদন করেছেন। ২০০৪ সাল থেকে সোলেমানবাবু তাঁর নিজস্ব ১ বিঘা পুকুরে রুই, মৃগেল, কাতল, মাগুড় সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছচাষ করছেন। ২৪ মন সার্টিফায়েড ধান বীজ উৎপাদন করেছেন। সোলেমানবাবু বলেন, “কৃষি ও প্রাণীসম্পদ দফতরের পরামর্শ ও সহযোগিতা ছাড়া চাষবাস ও মাছ চাষে আমি সফল হতাম না।” |