|
|
|
|
পুলিশের রিপোর্টে দায় সংবাদমাধ্যমকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
আদালতের নির্দেশে পুলিশ-হেফাজতে থাকা ‘অভিযুক্ত মাওবাদী’ অভিজিৎ মাহাতোর সঙ্গে সাংবাদিকেরা কী ভাবে কথা বললেন তা জানতে চেয়েছিল আদালত। জবাবে তদন্তকারী অফিসার দায় চাপালেন সংবাদমাধ্যমের উপর।
মাওবাদী স্কোয়াড সদস্য সন্দেহে ধৃত ওই অভিযুক্তের আইনজীবীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তকারী অফিসার তথা বিনপুর থানার সাব-ইন্সপেক্টর মিলন ঘোষের কাছে গত ২৯ জানুয়ারির মধ্যে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছিল ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালত। ‘অসুস্থতার’ জন্য ওই দিন রিপোর্ট দাখিল করতে পারেননি মিলনবাবু। তিনি আদালতে সময় চান। ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মিলনবাবুকে অভিযোগের জবাব-সহ ওই রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দেন বিচারক।
বুধবার দু’পাতার রিপোর্ট দাখিল করেন মিলনবাবু। রিপোর্টে মিলনবাবু দাবি করেছেন, “গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত অভিজিৎ মাহাতোর পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়। পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন গত ২১ জানুয়ারি দুপুরে তাঁকে ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার সদর দফতরে এসপি অফিসের দোতলায় দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ প্রহরা দিয়ে নিয়ে আসা হয়। ওই সময় আচমকা সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা সেখানে ঢুকে পড়ে অভিজিৎ মাহাতোকে প্রশ্ন করতে থাকেন। এরপর অভিজিৎকে এসপি’র অফিস ঘরে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেও জোর করে দরজা ঠেলে একদল সাংবাদিক ঢুকে পড়েন। স্থানীয় ওই সাংবাদিকেরা পরিচিত মুখ হওয়ায় এসপি ভদ্র ভাবে তাঁদের অভিযুক্তের সঙ্গে কথা না বলার জন্য অনুরোধ করেন এবং চলে যেতে বলেন। তা সত্ত্বেও কয়েকজন সাংবাদিক অভিজিতের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। এরপরই বিরক্ত এসপি অত্যন্ত কড়াভাবে সংবাদমাধ্যমকে বেরিয়ে যেতে বলেন। ওই সময় দু’টি সংবাদমাধ্যম (আনন্দবাজার ও বর্তমান) জানিয়েছিল, অভিযুক্তের কথাবার্তার রেকর্ডিং ব্যবহার করা হবে না।” রিপোর্টে মিলনবাবু আরও লিখেছেন, “ঝাড়গ্রাম পুলিশের সদর দফতরে সংবাদমাধ্যমের অবাধ যাতায়াত রয়েছে। সংবাদিকেরা নিজেদের ইচ্ছায় আসেন ও চলে যান। এই পরিস্থিতিতে সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা দুষ্কর। ওই দিন অযাচিত ভাবে সংবাদমাধ্যম চলে আসায় ঘটনাটি ঘটে।” ১২ ফেব্রুয়ারি এই রিপোর্টের শুনানি করবে আদালত। ওই দিন অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
১৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বিনপুর থানার ভুরসাতোড়া গ্রামের বাসিন্দা অভিজিৎ মাহাতো নামে বছর আটচল্লিশের এক প্রৌঢ়কে মাওবাদী সন্দেহে শিলদা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১৯ জানুয়ারি অভিযুক্তকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। অভিজিৎবাবু পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন গত ২১ জানুয়ারি দুপুরে তাঁকে ঝাড়গ্রাম এসপি অফিসে এক সাংবাদিক বৈঠকে হাজির করা হয়। সাংবাদিকদের এসএমএস করে সাংবাদিক বৈঠকে ডেকেছিলেন এসপি ভারতী ঘোষ। ওই সাংবাদিক বৈঠকের ভিডিও ফুটেজ ও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর-সহ অভিযোগপত্র দাখিল করে গত ২৪ জানুয়ারি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন অভিযুক্তের আইনজীবী সুমন সেন। এ দিন সুমনবাবু বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশাবলি লঙ্ঘনের দায়ভার এড়াতে সংবাদমাধ্যমকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন।” |
|
|
|
|
|