|
|
|
|
ফের রেল ভাড়া বাড়ার ইঙ্গিত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
সাম্প্রতিক ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব রেলের যাত্রিভাড়াতেও। গত মাসে রেলে যাত্রিভাড়া বাড়ানো সত্ত্বেও চলতি মাসের বাজেটে ভাড়া বাড়ানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন না রেলমন্ত্রী ।
বছরের শুরুতে যাত্রিভাড়া বৃদ্ধির মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল রেলমন্ত্রী পবন বনশলকে। ফলে প্রায় এক দশক পরে রেলের যাত্রিভাড়া এক লাফে বেড়ে যায় বেশ কয়েক গুণ। সে সময়েই ঘনিষ্ঠ মহলে রেলমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আগামী ছ’মাসের মধ্যে আর কোনও ভাড়া বাড়ানোর দরকার হবে না। কিন্তু যাত্রিভাড়া বৃদ্ধির কয়েক দিনের মধ্যেই ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি আপাতত সেই পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছে রেলমন্ত্রীর। ফলে বাড়তি খরচ সামলাতে আসন্ন বাজেটে ফের এক দফা রেল ভাড়া বৃদ্ধির পক্ষে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে রেলমন্ত্রক।
প্রায় দশ বছর ধরে যাত্রিভাড়া বৃদ্ধি না হওয়া, পণ্য পরিবহণে লক্ষ্যমাত্রা না ছোঁয়া, আয়ের অন্যান্য উৎস ক্রমশ শুকিয়ে আসা ইত্যাদি নানা কারণে নতুন বছরের শুরুতে রেলের ভাঁড়ার প্রায় শূন্য হয়ে পড়েছিল। ফলে দায়িত্ব নেওয়ার তিন মাসের মধ্যেই ভাড়া বৃদ্ধির মতো অপ্রিয় সিদ্ধান্ত নেন বনশল। গত ২১ জানুয়ারি থেকে রেলে যে বর্ধিত ভাড়া নেওয়া শুরু হয় তাতে চলতি আর্থিক বছরের (২০১২-১৩) শেষ দু’মাসে ৬৬০০ কোটি আসবে বলে ধরে রেখেছিল রেলমন্ত্রক। কিন্তু আজ রেলমন্ত্রী জানান, “ওই সিদ্ধান্তের কিছু দিনের মধ্যেই ডিজেলের দাম বাড়ে। যার জন্য রেলের ঘাড়ে অতিরিক্ত ৩৩০০ কোটি টাকার বোঝা এসে চাপে। ফলে যে লক্ষ্য নিয়ে যাত্রিভাড়া বাড়ানো হয়েছিল তা পূরণ হয়নি। উপরন্তু রয়েছে নতুন প্রকল্পের চাপ।”
রেলমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের পরে আজ স্বভাবতই সাংবাদিক সম্মেলনে প্রশ্ন ওঠে তা হলে কি ফের এক প্রস্ত রেলের ভাড়া বাড়তে চলেছে আসন্ন বাজেটে? জবাবে সরাসরি কিছু বলতে চাননি রেলমন্ত্রী। তিনি কেবল জানান, “আরও ১৯ দিন অপেক্ষা করুন। তা হলেই সব জানতে পারবেন।” তবে মন্ত্রকের একাংশের মত, এই ধরনের সিদ্ধান্ত যতটা না আর্থিক, তার থেকে অনেক বেশি রাজনৈতিক। তা ছাড়া, সামনেই লোকসভা নির্বাচন। সুতরাং রেল চাইলেও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের সবুজ সঙ্কেত ছাড়া ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয় পবন বনশলের পক্ষে। তবে আজ রেলমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, লাগাতার ক্ষতিতে চলা রেলের আর্থিক অব্যবস্থা সামলাতে ফের যাত্রিভাড়া বাড়ানো ছাড়া আর কোনও রাস্তা খোলা নেই তা বুঝতে পারছে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বও। তাই আজ জেনেবুঝেই যাত্রিভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে ইঙ্গিতই দিয়েছেন রেলমন্ত্রী।
মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভর্তুকির কারণে চলতি বছরে যাত্রিভাড়ায় ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। যাত্রিভাড়া ছাড়া রেলের সরাসরি আয়ের অন্যতম উৎস হচ্ছে পণ্য মাসুল বাড়ানো। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে জনমোহিনী পথে হেঁটে যাত্রিভাড়ার পরিবর্তে শুধু পণ্য মাসুল বাড়ানোয় এখন অন্য সমস্যার মুখে রেলমন্ত্রক। রেলের এক কর্তার কথায়, “নিয়মিত ভাবে পণ্য মাসুল বাড়ায় রেলে পণ্য পরিবহণ কমে গিয়েছে। যার সুযোগে সড়ক পথে পণ্য পরিবহণ বাড়ছে। বাধ্য হয়ে এ বছরেও পণ্য পরিবহণে বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে এনেছে রেল। |
|
|
|
|
|