নড়বড়ে বরাকর ২
সুরাহা এখনও বালির গর্ভেই
সপ্রবণ বরাকরে বাসিন্দাদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুললেই খনি কর্তৃপক্ষ থেকে প্রশাসন, সাংসদ থেকে বিধায়ক সকলেই এক নিঃশ্বাসে রুটিন উত্তর দেন, “উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কী ব্যবস্থা? প্রশাসনের দাবি, ওই এলাকা যাদের আওতায় রয়েছে সেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ভারত কোকিং কোল লিমিটেডের (বিসিসিএল) সঙ্গে তারা আলোচনা শুরু করেছে। আসানসোলের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক অন্তরা আচার্য জানান, ডিরেক্টর জেনারেল-মাইনস সেফটি (ডিজিএমএস) কর্তৃপক্ষকে গোটা অঞ্চল ভাল করে নিরীক্ষণ করতে বলা হয়েছে। কোন অঞ্চল ধসপ্রবণ তা চিহ্নিত করে মানচিত্র বানাতে বলা হয়েছে। তাঁর কথায়, “আমি গোটা বিষয়টির দেখভাল করে খনি কর্তৃপক্ষকে জলবালির মিশ্রণ দিয়ে গর্ত ভরাট করতে বলেছি।”
শুধু জলবালির মিশ্রণ দিয়ে গর্ত ভরাট করলেই যে ধসপ্রবণ বরাকরের স্থায়ী সমাধান হবে না, তা অবশ্য এত দিনে বিলক্ষণ টের পেয়েছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, যে পদ্ধতিতে জলবালির মিশ্রণ ঢালা হচ্ছে তা বৈজ্ঞানিক নয়। বালির গুণমানও ভাল নয়। স্থানীয় সিটু নেতা সুজিত ভট্টাচার্য এবং আইএনটিইউসি নেতা চন্ডী চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, পদ্ধতি ও গুণমান বজায় রেখে মাটির তলার ফাঁপা অংশে বালি ভরাট করে স্থায়ীকরণ করা হচ্ছে। বিসিসিএলের খনি বিশেষজ্ঞেরা অবশ্য এই সব অভিযোগ মেনে নিয়েছেন। তাঁদের মতে, মাটির তলার ফাঁপা অংশে বালি ভরাট করতে হলে জলের যে পরিমাণ বেগ দিতে হয় তা এখানে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে বালি মাটির গভীরে যেতে পারছে না।
দ্বিতীয়ত, নিয়ম অনুযায়ী ধসপ্রবণ এলাকার একাধিক জায়গায় গর্ত করে বালি জলের মিশ্রণ ভূগর্ভে পাঠাতে হয়। এতে সর্বত্র বালি ভরাট করা সম্ভব। কিন্তু তা-ও হচ্ছে না। রাস্তার মাঝখানে তৈরি হওয়া গর্তেই শুধু বালি ঢালা হচ্ছে। ভূগর্ভে ফাঁপা অংশে বালি যাচ্ছে না। বিসিসিএলের চাঁচ ভিক্টোরিয়া এরিয়ার জিএম তারাশিস মণ্ডল অবশ্য দাবি করেন, “আমরা পদ্ধতি মেনেই বালি ভরাট করছি। ধীরে-ধীরে সব ঠিক হবে। বাসিন্দারা কারিগরি বিষয়টি জানেন না বলে বুঝতে পারছেন না।”
চাঁচ ভিক্টোরিয়া এরিয়ার জিএম দাবি করেন, “প্রশাসনের অনুরোধে জলবালির মিশ্রণ দিচ্ছি। কিন্তু স্থায়ী সমাধানের জন্য স্থায়ীকরণ বা পুনর্বাসন প্রক্রিয়া করবে এডিডিএ। এটা ওদের দায়িত্ব।” এডিডিএ-র সিইও অন্তরা আচার্যের পাল্টা দাবি, “আমরা শুধু ইসিএলের এলাকার পুনর্বাসন বা স্থায়ীকরণের দায়িত্বে রয়েছি।”
এডিডিএ-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান, আসানসোলের সিপিএম সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী অবশ্য জানান, এলাকাবাসীর সঙ্গে বারবার বৈঠক করে স্থায়ীকরণের খসড়া প্রকল্প হয়েছিল। অনেককে পুনর্বাসনের ব্যাপারে রাজিও করিয়েছিলেন।
কিন্তু তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আর ভিটের টানের টানাপোড়েনে কত দিন দুলবেন বরাকরবাসী? কোটি টাকার এই প্রশ্নের এখনও জবাব নেই।

(শেষ)



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.