কলকাতা হাইকোর্টে মঙ্গলবার আগাম জামিন পেলেন সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাত্তার মোল্লা। আর এ দিনই আলিপুর দায়রা আদালতে জামিন খারিজ হয়ে গেল প্রাক্তন বিধায়ক তথা ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের।
পুলিশ জানায়, ৮ জানুয়ারি বামনঘাটায় সিপিএমের মিছিলে গুলি ও বোমা চলে। ভাঙচুর করা হয় সিপিএমের কর্মী নিয়ে যাওয়া ন’টি গাড়িতে। অভিযোগ ওঠে, আরাবুল ইসলাম দলবল নিয়ে সিপিএমের কর্মীদের উপরে হামলা চালিয়েছিলেন। ওই দিনই সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর দুই সদস্য সাত্তার মোল্লা ও তুষার ঘোষ-সহ কয়েক জন নেতার বিরুদ্ধে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানায় এফআইআর দায়ের করেছিল তৃণমূল। অভিযোগে বলা হয়েছিল, সাত্তার মোল্লা ও তুষার ঘোষের নেতৃত্বে সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে হামলা চালানো হয়েছে আরাবুল এবং তাঁর দলবলের উপরে। তুষারবাবু আগেই আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন। ২১ জানুয়ারি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র এবং জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ তৃণমূলের দায়ের করা মামলাকে ‘পাল্টা মামলা’ অ্যাখ্যা দিয়ে তুষারবাবুর আগাম জামিন মঞ্জুর করে।
হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি কাঞ্চন চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে এ দিন সাত্তার মোল্লা-সহ সিপিএমের সাত নেতার আগাম জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। বিচারপতিরা সকলেরই আগাম জামিন মঞ্জুর করেন। বামনঘাটায় হাঙ্গামার ঘটনায় আলিপুর দায়রা আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক অজেয় মতিলাল এ দিন অভিযুক্ত আরাবুল ইসলামের জামিনের আবেদন খারিজ করেন। এর আগে ৩০ জানুয়ারি ওই আদালতে জামিনের আবেদন করেন আরাবুল। সে-দিনও তাঁর জামিন খারিজ হয়ে গিয়েছিল। সরকারি আইনজীবী তীর্থঙ্কর রায় আলিপুর আদালতে বলেন, আরাবুলকে আর জেল-হাজতে রাখার দরকার নেই। কিন্তু অভিযোগকারীর আইনজীবী সুশীল চক্রবর্তী গুলিতে আহতদের মেডিক্যাল রিপোর্ট আদালতে পেশ করে বলেন, আরাবুল গ্রেফতার হওয়ার পরে নানা অছিলায় হাসপাতালেই কাটিয়েছেন। পুলিশ তাঁকে জেরা করার সময়ই পায়নি। পুলিশি জেরার জন্যই তাঁকে জেল-হাজতে রাখা দরকার।
আরাবুলের জামিনের আবেদন অগ্রাহ্য করার কারণ হিসেবে জেলা ও দায়রা জজ জানান, কেস ডায়েরি এবং মইদুল মোল্লা ও সুজিত দাসের আঘাতের রিপোর্ট দেখে বোঝা যাচ্ছে, তাঁরা জখম হয়েছেন গুলিতেই। অভিযুক্ত আরাবুলের নেতৃত্বেই যে ওই হাঙ্গামা হয়েছিল, সেই তথ্যও আছে কেস ডায়েরিতেই। তাই অভিযুক্তের জামিনের আবেদন খারিজ করা হল। |