দোমহনির কাছে তিস্তা রেল সেতু পর্যন্ত ঘুরে গভীর রাতে উধাও হয়ে গেল বিবাগী গন্ডার ঘাড় মোটা। নিরুপায় হয়ে রাতভর তিস্তার চরে দাঁড়িয়ে কাটল শিলাবতি, সূর্য ও ফুলমতিদের। ভোর হলে পায়ের ছাপ অনুসরণ করে কুনকিরা কাঠামবাড়ি জঙ্গলে খুজে বার করল বুনোটিকে, স্বস্তি ফিরে পেলেন বনকর্মীরা।
সোমবার সকালে তিস্তা নদীর পশ্চিম প্রেমগঞ্জের চরে প্রথম দেখা যায় গণ্ডারটিকে। সেখানে এক চাষিকে গুঁতিয়ে জখম করে তাড়া খেয়ে চর সংলগ্ন এক ব্যক্তির জলাশয়ে নেমে পড়ে। |
কাঠামবাড়ি জঙ্গলে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক। |
লোকজনের ভিড়ের জন্য সেখানেও থাকতে পারেনি। পালিয়ে আশ্রয় নেয় হোগলার জঙ্গলে। দুপুর থেকে চেষ্টা করেও তিনটি কুনকি হাতি বুনোটিকে বাইরে বার করতে পারেনি, জানা সম্ভব হয়নি সে কোথা থেকে তিস্তার চরে ঢুকেছে। বিকেলের পরে এলাকা ফাঁকা হতে বন কর্মীরা সার্চ লাইট ফেলে বুনোটিকে হোগলা জঙ্গলের বাইরে বার করে। ওই সময় তারা নিশ্চিন্ত হন দু’বছর আগে গরুমারা জঙ্গল থেকে বৈকুন্ঠপুর জঙ্গলে বিবাগী হয়ে যাওয়া দুটি গণ্ডারের একটি এটা। দশাসই চেহারা ও এক রোখা মেজাজ দেখে যার নামকরণ করা হয়েছিল ঘাড় মোটা। জলপাইগুড়ি বন বিভাগের (বন্যপ্রাণ-২) সুমিতা ঘটক তা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “এটাই ঘাড় মোটা। ওকে কাঠামবাড়ি সংলগ্ন আফালচাদ জঙ্গলে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ।” বন দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, কান হেলা নামে অন্য বিবাগী গণ্ডারটিকে দুֽ’দিন আগে চেল নদীর আশপাশে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে।
সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত ন’জন বন কর্মী তিস্তার চরে ঘাড় মোটাকে ঘরে ফেরানোর চেষ্টা করেন। প্রথমে বুনোটি কাঠামবাড়ির দিকে এগোন শুরু করলেও পরে তাড়া করে উল্টো দিকে হাটা শুরু করে। এক সময় দোমহনির কাছে তিস্তা রেল সেতুর কাছে পৌঁছে যায়। চিন্তায় পড়েন বন কর্মীরা। সেখান থেকে অনেক চেষ্টার পরে ফের কাঠামবাড়ির দিকে ঠেলে পাঠান সম্ভব হয়। কিন্ত কিছু পরে বুনোটি উধাও হয়ে যায়। এর পরে বন কর্মীরা কুনকিদের চরে রেখে সেখানেই এক বাড়িতে আশ্রয় নেন। ভোর হলে ফের শুরু হয় অভিযান। পায়ের ছাপ অনুসরণ করে কুনকিরা সকাল ৯ টা নাগাদ কাঠামবাড়ি জঙ্গলে পৌঁছে যায়। |