জলঙ্গির বেসরকারি এক পলিটেকনিক কলেজের শৌচলায়ে মিলল কলেজেরই ছাত্র সৌমেন দাসের (২০) দেহ। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্র। তাঁর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের ছোটজিরাকপুরে। খবর পেয়ে সোমবার সকালে বসিরহাট
|
সৌমেন দাস |
থেকে সৌমেনের কাকা রথীন্দ্রনাথ দাস জলঙ্গি পৌঁছে কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
রথীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “সৌমেনকে খুন করে শৌচাগারে ফেলে দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ নিজেদের আড়াল করতে সৌমেনের নামে নেশা করার মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।” পুলিশ ও কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে হস্টেলের শৌচাগারে ওই ছাত্রকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। প্রথমে তাঁকে সাদিখাঁর দিয়াড় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সৌমেনের দুই সহপাঠী অবশ্য বলেন, “আমরা গভীর রাতে দেখি, সৌমেন শৌচাগারে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। তার মুখে তখন ডেনড্রাইডের আঠা লেগেছিল।”বছর পাঁচেক আগে জলঙ্গির নরসিংহপুর বাজারে বেসরকারি ওই পলিটেকনিক কলেজটি গড়ে ওঠে। বর্তমানে তার ছাত্র সংখ্যা ৭৫০ জন। তাঁদের মধ্যে কলেজের দোতলায় হস্টেলে থাকেন ১৮০ জন। টিউশান-ফি বাবদ প্রতি সেমিস্টারে ছাত্রদের কাছ থেকে নেওয়া হয় ১৯ হাজার টাকা। বাবা মায়ের এক মাত্র সন্তান সৌমেন এলাকায় ও কলেজে ভাল খেলোয়াড় ও শান্ত স্বভাবের বলে পরিচিত ছিল। সৌমেনের বাবা স্নেহাশিসবাবুর অভিযোগ, “গত ডিসেম্বরে সৌমেন বাড়ি এসেছিল। ছেলে নেশগ্রস্ত হলে আমরা বুঝতে পারতাম। আমার ছেলেকে র্যাগিং করে খুন করা হয়েছে।” |
তবে ওই কলেজের ছাত্রদের অনেকেই যে বিভিন্ন ধরনের নেসা করেন তা স্থানীয় বাসিন্দা থেকে কলেজের ছাত্রদের একাংশও স্বীকার করেছে। তার মধ্যে ডেনড্রাইড জাতীয় আঠা খেয়ে নেশা করার প্রবণতা সর্বাধিক। কলেজ লাগোয়া চায়ের দোকান ও মুদির দোকানেও চড়া দামে তা বিক্রি হয় বলে জানা গিয়েছে। তবে সৌমনের বিরুদ্ধে এর আগে নেশা করার তেমন অভিযোগ মেলেনি।
কলেজের সভাপতি প্রসেনজিৎ মণ্ডল বলেন, “সৌমেন ভাল খেলোয়াড়। রবিবার সন্ধ্যাতেও সে কলেজ মাঠে ভলিবল খেলেছে। রাত এগারোট নাগাদ ওর অসুস্থতার কথা জানতে পারি। আমরা সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম।”
ডোমকলের এসডিপিও দেবর্ষি দত্ত বলেন, “ছাত্রের বাড়ি থেকে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সেই মতো মামলা রুজু করা হয়েছে। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। ময়নাতদন্তের আগে মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব নয়।”
|