এক কিশোরকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের স্টেডিয়াম লাগোয়া এলাকায়। রবিবার সকালে বাড়ি থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে গঙ্গারামপুর স্টেডিয়াম চত্বর থেকে কিশোরের দেহ পুলিশ উদ্ধার করে। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম মিলন মাহালি (১২)। তার গলায় চাদর পেঁচানো ছিল। গালে কামড়ের দাগ রয়েছে। গঙ্গারামপুরের আইসি অসীম গোপ জানান, চাদর পেঁচিয়ে কিশোরকে শ্বাসরোধ করে খুন করে দেহটি এনে স্টেডিয়ামের একধারে ফেলা হয় বলে মনে হচ্ছে। মিলনের জিন্সের প্যান্টটি কিছুটা দূরে পড়ে ছিল। খুনের কারণ জানার চেষ্টা চলছে। পরিবারের তরফে এখনও কোনও অভিযোগ করা হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় সেন্ট যোশেফ হাইস্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া ওই কিশোর শনিবার রাত ৮টা নাগাদ বাড়ি থেকে বার হয়। তারপরে আর তার খোঁজ মেলেনি। কোনও রকম যৌন নির্যাতনের পর ওই কিশোরকে খুন করা হয়েছে কী না তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শত্রুতার জেরে ঘটনাটি ঘটছে কী না দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে সব পরিষ্কার হবে।”
গঙ্গারামপুরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণপল্লি এলাকার বাসিন্দা ছিল মিলন। মা, বিধবা ভ্যালেন্টিনা মাহালির ছোট ছেলে ১২ বছরের মিলন এবং বড় ছেলে ১৫ বছরের মধুকে নিয়ে সংসার। তিন বছর আগে তাঁর স্বামী দুর্ঘনায় মারা যান। ভ্যালেন্টিনাদেবী গঙ্গারামপুরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি হোটেলে কাজ করেন। বড় ছেলে মধু গ্যারাজের কর্মী। ভ্যালেন্টিনাদেবী জানান, রাত ৯টা নাগাদ হোটেলের কাজ সেরে বাড়ি ফিরে ছেলেকে না দেখে ভেবেছিলাম আশপাশে কোথাও টিভি দেখতে গিয়েছে। ফিরলে একসঙ্গে খাব। এই ভেবে শুয়ে পড়ি। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ খুঁজতে বার হই। কিন্তু কোথাও পাইনি। তিনি বলেন, “আমাদের কারও সঙ্গে কোনও শত্রুতা ছিল না। কী হল কিছুই বুঝতে পারছি না।” স্থানীয় সিপিএম কাউন্সিলর অসিত হালদার বলেন, “বুঝতে পারছি না ছোট ছেলেটিকে কেন খুন করা হল। পুলিশকে দ্রুত অভিযুক্তদের ধরতে বলা হয়েছে।”
এ দিন সকালে হোটেলের কাজে গিয়ে ভ্যালেন্টিনাদেবী জানতে পারেন স্টেডিয়াম চত্বরে একটি ছেলের মরদেহ পড়ে রয়েছে। তিনি গিয়ে দেহটি সনাক্ত করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্টেডিয়ামের একদিক খোলা রয়েছে। সেই সুযোগ নিয়ে দুষ্কৃতীরা দেহটি ফেলে রেখে গিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। |