পাহাড় থেকে নয়াদিল্লি, পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে নতুন করে চাপ তৈরি করতে চাইছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।
এক দিকে, দিল্লিতে এসে ধর্না দিচ্ছেন রোশন গিরি-হরকাবাহাদুর ছেত্রীরা। বিজেপি-র কাছেও সমর্থন চাইছেন। অন্য দিকে আজ, রবিবার মিরিকে জনসভা করতে চলেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার যুব সংগঠন। যে পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার হুগলির দাদপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের বলেছেন, “দার্জিলিং নিয়ে কেউ কেউ দাঙ্গা করতে চাইছে। আমি আগুন লাগাতে দেব না।”
 ইউপিএ-সরকার যখন তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিকে এগোচ্ছে, ঠিক সেই সময়ে দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে পৃথক রাজ্যের দাবি তুলেছেন মোর্চা নেতারা। এ দিন দার্জিলিংয়ের পাতলেবাসে মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের বৈঠকে সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের উপস্থিতিতেই সিদ্ধান্ত হয়, দিল্লিতে যন্তরমন্তরে যে অবস্থান-বিক্ষোভ চলছে তাতে দার্জিলিংয়ে তিন মহকুমা থেকে ১৪৭ জন সমর্থক যোগ দেবেন। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অবস্থান চলবে। বিজেপি-র বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজের কাছে গিয়েও মোর্চা নেতারা আর্জি জানান, তেলেঙ্গানার মতো গোর্খাল্যান্ডের দাবিও যেন তাঁরা সমর্থন করেন।
বিজেপি-র রাজ্য নেতারা পশ্চিমবঙ্গ বিভাজনের বিরুদ্ধে হলেও মোর্চা নেতারা মনে করছেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁদের পাশে দাঁড়াবেন। তাঁদের যুক্তি, রাহুল সিংহেরা যেখানে দলকে একটাও বিধানসভা আসন দিতে পারেননি, মোর্চা লোকসভা আসন এনে দিয়েছে। সেই দার্জিলিং আসনের সাংসদ যশোবন্ত সিংহ নিজেও গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে সরব। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, “আমরা মনে করি, ওঁর যুক্তি বিজেপি গুরুত্ব দিয়ে দেখবে।” কী বলেছেন সুষমা? রোশনের দাবি, “উনি জানান, যশোবন্তের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন।” হরকাবাহাদুর ছেত্রীর মতে, “বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে রাজ্য শাখার থেকেও আমাদের গুরুত্ব বেশি।” এর পরে অরুণ জেটলি ও রাজনাথ সিংহের সঙ্গেও দেখা করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের।
মোর্চা যখন রাজনীতির আসর তাতিয়ে তুলতে চাইছে, রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন গোর্খাল্যান্ড প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর পাশেই দাঁড়িয়েছেন। এ দিন কলকাতা জাদুঘরে এক প্রদর্শনীর উদ্বোধনে তিনি বলেন, “ছোট-ছোট কিছু রাজ্য তৈরির দাবি রয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তাঁর মত জানিয়েছেন এবং বেশির ভাগ মানুষই মনে করেন দার্জিলিং আমাদের রাজ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ।” স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মমতা হুঁশিয়ারি দেন, “আমি সব সহ্য করব। কিন্তু দাঙ্গা করলে বড় কেস হবে!” |