বন্দিদের ভোটাধিকার চেয়ে
কমিশনকে চিঠি আইজি-র
দেশে হিজড়েদের ভোটাধিকার রয়েছে। যৌনকর্মীরাও ভোট দেওয়ার সুযোগ পান। এ বার জেলবন্দিদের ক্ষেত্রে সেই ভোটের অধিকার চেয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিল রাজ্যের আইজি (কারা) রণবীর কুমার। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সুনীল গুপ্তকে চিঠি লিখে এই আবেদন জানিয়েছেন আইজি। তাঁর মতে, বন্দিদের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ইতিমধ্যেই তাদের ভোটের অধিকার দিয়েছে। মানবাধিকার রক্ষার স্বার্থেই ভারতও যেন জেলবন্দিদের সেই সুযোগ করে দেয়। চিঠিতে আইজি জানিয়েছেন, সরকার নীতিগত ভাবে সম্মত হলে এ রাজ্যের বিচারাধীন এবং সাজাপ্রাপ্ত মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার বন্দি ভোট দেওয়ার অধিকার পাবে। সারা দেশে যে সংখ্যাটা প্রায় ৫ লক্ষেরও বেশি।
কারা দফতর সূত্রে খবর, ১৯৯২ সালের সংশোধন পরিষেবা আইন (ওয়েস্ট বেঙ্গল কারেকশনাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট, ১৯৯২) অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত বন্দিদেরই ভোটের অধিকার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে এই অধিকার দেওয়া নেই। কেন্দ্রের আইন অনুযায়ী, শুধু সাজাপ্রাপ্ত বন্দিরাই নয়, পুলিশি হেফাজতে থাকা কোনও অভিযুক্তকেই ভোটের অধিকার দেওয়া হয়নি। কারা দফতরের এক মুখপাত্র জানান, রাজ্য এবং কেন্দ্রের আইনে বৈপরীত্য থাকলে কেন্দ্রের আইনই বলবৎ থাকে। সেই কারণেই রাজ্য আইনে থাকলেও কেন্দ্রের আইন মেনে বন্দিদের ভোটের অধিকার দিতে পারে না রাজ্য সরকার।
নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া চিঠিতে আইজি বলেছেন, “বর্তমানে কারা-প্রশাসনের ভাবনা হল, অপরাধীদের সংশোধন, সংস্কার এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। সেই লক্ষ্যে দেশ জুড়ে বন্দিদের বিভিন্ন অধিকার ও সুযোগ সুবিধে দেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় বন্দিদের ভোটের অধিকার দিলে তাঁদের আত্মমর্যাদাবোধ বাড়বে।” বিচারাধীন বন্দিদের অবিলম্বে ভোটের অধিকার দেওয়ার দাবি জানিয়ে আইজি বলেছেন, “বিচারাধীন বন্দিদের পুলিশ গ্রেফতার করলেও তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয় না। তাই তাঁদের জন্য অবশ্যই ভোটের অধিকার থাকা উচিত।”
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সুনীল গুপ্ত অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “চিঠি দেখার পরেই আমি এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারব।” তবে নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, বন্দিদের ভোটাধিকার দেওয়ার প্রশ্নে দ্বিমত রয়েছে। এক পক্ষের মত, মানবাধিকারের অঙ্গ হিসেবে বন্দিদের ভোটাধিকার থাকা উচিত। অন্য পক্ষের মত, সমাজের চোখে অপরাধী হওয়ার কারণেই বন্দি যারা, তাদের যেখানে খুশি যাওয়া-সহ অনেক অধিকারই নেই। সেই হিসেবে ভোটাধিকারও না-ই থাকতে পারে। এই অংশের মতে, বন্দিদের ভোটাধিকার দিলে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অপরাধীকরণকে উৎসাহ দেওয়া হবে। কমিশনের এক আধিকারিকের মতে, “নির্বাচন কমিশন সব সময়েই অপরাধীকরণের বিরুদ্ধে সওয়াল করে এসেছে। সেই কারণে বন্দিদের ভোটাধিকার দেওয়ার ব্যাপারেও কমিশনের মধ্যে একাংশের জোরালো আপত্তি আছে।”
আইজি (কারা)-র আবেদনকে অবশ্য স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর মতে, “আইজি-র লেখা চিঠি আমি দেখিনি। দেখার পরে বিস্তারিত মন্তব্য করতে পারব। তবে তিনি যে দাবি তুলেছেন, তা যথেষ্ট সঙ্গত। এই দাবিকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.