ঠিক মতো ভজনা করলে হাটে হাটে বিকিকিনি হওয়া গরুও কামধেনু হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার!
গরুর লাইসেন্স ফি বাবদ রাজ্যের বার্ষিক আয় এখন ৫০ লক্ষ টাকার মতো। এই ফি চার-পাঁচ গুণ বাড়ালে এবং ঠিক মতো আদায়ের ব্যবস্থা করলে ওই বাবদ আয় ১০০ কোটিও ছুঁয়ে ফেলবে বলে মনে করছে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর। দফতরের এক কর্তার বক্তব্য, মূলত ‘স্লটার হাউসে’ যে সব গরু আসে তা থেকে প্রাপ্য লাইসেন্স ফি।
এ ছাড়া, শহরের বাড়িতে গরু পোষার জন্য লাইসেন্স নিতে হয় গৃহস্থকে। আর আইন অনুযায়ী হাটে বিক্রি হওয়া গরু পুর এলাকার মধ্য দিয়ে নিয়ে যেতে হলেও ফি দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু নজরদারির অভাবে ওই তিনটির কোনওটি থেকেই বিশেষ আয় হয় না।
প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের হাতে রয়েছে ১৯৮৯ সালে তৈরি ‘ক্যাটল লাইসেন্স অ্যাক্ট’। তাতে বলা রয়েছে, পুর এলাকায় কোনও গৃহস্থ সর্বাধিক দু’টি গরু পুষতে পারেন। এক-একটি গরুর জন্য বছরে ১০ টাকা লাইসেন্স ফি বাবদ জমা দিতে হয় প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরে। এখন ওই ফি ৫০ টাকা করার কথা ভাবছে দফতর। অন্য দিকে বিভিন্ন হাটে যে সব গরু বিক্রি হয়, তাদের পুর এলাকার মধ্য দিয়ে নিয়ে যেতে হলে লাইসেন্স ফি দিতে হয় গরু-পিছু ২৫ টাকা। সেই ফি বাড়িয়ে গরু-পিছু ১০০ টাকা করার ভাবনা রয়েছে।
প্রয়োজনীয় অনুমতি পেলে আগামী আর্থিক বছরেই দফতর বর্ধিত হারে ফি চালু করতে চায়।
দফতরের এক কর্তা জানান, রাজ্যের বিভিন্ন শহরে গৃহস্থের বাড়িতে কত গরু রয়েছে, তার হিসাব সরকারের কাছে নেই। কারণ বেশির ভাগ গৃহস্থই নিয়মিত লাইসেন্স করান না। আর পরিকাঠামোর অভাবে লাইসেন্স ফি আদায় করাও যায় না। এখন শহরে শহরে কোথায় কত গরু রয়েছে, তার হিসাব সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। দফতরের হিসাব, রাজ্যে প্রায় ১৬০টি গরুর হাট রয়েছে, যেখান থেকে প্রচুর ফি আদায় সম্ভব। ওই কর্তাটি জানান, প্রতিটি ব্লকে দফতরের এক জন করে কর্মী রয়েছেন। হাটের দিন তাঁদের সেখানে হাজির থাকতে বলা হবে।
দফতরের ওই কর্তা জানান, এতগুলি হাটের কোনওটিই সরকারি নয়। প্রতিটি হাটে যত গরু কেনাবেচা হচ্ছে, তার উপর হাটের মালিক নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পান। তেমনই আইন অনুযায়ী সরকারেরও প্রতিটি গরুর জন্য ২৫ টাকা করে পাওয়ার
কথা। কিন্তু তার সামান্যই মেলে। কারণ, সরকারের ওই টাকাও তোলার দায়িত্ব থাকে হাটের মালিকের হাতে। এখন দফতরের কর্মী সেখানে বসে থেকে টাকা আদায় করবেন, সেই ব্যবস্থার কথা ভাবা হচ্ছে। সব দিক থেকে নয়া হারে ঠিকমতো ফি আদায় করলে এই সংক্রান্ত আয় ১০০ কোটি ছাড়াতে পারে বলে দফতরের কর্তারা মনে করছেন। পুরসভাগুলির পরিকাঠামোও উন্নত করা দরকার। সে জন্য তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের কর্তারা। এখন তাঁরা বিষয়টি নিয়ে সরকারি ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষা করছেন। |