ইংরেজি শিখতে হবে। হাঁটতে হবে। ফুটবল-ডাংগুলি-পিট্টু খেলতে হবে। গানও গাইতে হবে।
রাজ্যের বিসিএস অফিসারদের এই সহজ পাঠ শুনিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজে করে অন্যকে তা শেখানোর আপ্তবাক্য অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার নজির রেখে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, “আমিও ইংরেজি শিখে নিয়েছি। এতে লজ্জার কিছু নেই। আমিও হাঁটি, খেলি।”
শনিবার টাউন হলে বিসিএস অফিসারদের বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তাঁদের সার্বিক বিকাশের জন্য করণীয় ঠিক করে দেন মমতা। নিজের দৃষ্টান্ত দিয়ে তিনি বলেন, “আমি ছাত্র সংগঠন থেকে উঠে এসেছি। বিএ, এমএ, এলএলবি পাশ করেছি। ভাল করে ইংরেজি বলতে পারতাম না। যখন প্রথম সাংসদ হই, তখন পার্লামেন্টে চুপ করে বসে থাকতাম। খুব খারাপ লাগত। তার পরে আস্তে আস্তে আমি ইংরেজি শিখি। বাম আমলে প্রাথমিক থেকে ইংরেজি তুলে দেওয়ায় আমাদের খুব ক্ষতি হয়েছে। আমাদের ছেলেরা, বাংলায় ভাল। |
ডব্লিউবিসিএস অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার টাউন হলে।—নিজস্ব চিত্র |
মেধা রয়েছে। কিন্তু সাবলীল ভাবে ইংরেজি বলতে পারে না। আমরা চাই সবাই ইংরেজি শিখুক। এতে লজ্জার কিছু নেই।” ইংরেজিতে সাবলীল ভাবে কথা বলা শিখতে বিসিএস অফিসারদের সাত দিনের স্পোকেন ইংলিশ কোর্স করানোর কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বিষয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের সঙ্গে কথা বলার জন্য মঞ্চ থেকেই অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে নির্দেশ দেন তিনি।
বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে ইদানীং অফিসার থেকে শিল্পোদ্যোগী সকলকে হঠাৎ মঞ্চে ডেকে নিয়ে গান গাওয়ানোর রেওয়াজ চালু করেছেন সঙ্গীতরসিক মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন বিসিএস-দের তিনি নিয়মিত গান গাওয়ার কথা বলেন। সভায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে গলা মিলিয়ে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র এবং উপস্থিত অফিসারেরা শোনান ‘পুরানো সেই দিনের কথা’।
মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্য সচেতনতাও যথেষ্ট। নিজে রোজ নিয়ম করে হাঁটেন, মেশিনে অথবা জগার্স ট্র্যাকে। তাই তিনি চান, তাঁর রাজ্যের বিসিএস অফিসারেরাও হাঁটুন। শরীর চনমনে রাখার জন্য ফুটবল খেলার উপযোগিতা ব্যাখ্যা করে তিনি জানিয়ে দেন, “আমি অবশ্য ফুটবল খেলতে পারি না। তবে ফুটবল আমাদের জাতীয় খেলা। উপেক্ষা করলে হবে না। আপনারা ব্যায়াম করুন, ফুটবল খেলুন। দরকার হলে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে অফিসারদের একাদশ করে ম্যাচ খেলার ব্যবস্থা করে দেব।” পাশাপাশি ডাংগুলি-পিট্টু খেলতেও অফিসারদের উৎসাহ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “আপনারা খেলা করুন, গান করুন, হাঁটুন। চাপ নেবেন না। তাহলেই ভাল করে কাজ করতে পারবেন।” মুখ্যমন্ত্রী ‘অভিভাবকের মতো আপন করে’ কথা বলায় স্বভাবতই খুশি ডব্লিউবিসিএস অফিসাররা। অনেকেই বলেছেন, আগে কোনও মুখ্যমন্ত্রী বিসিএস অফিসারদের সঙ্গে এ ভাবে কথা বলেননি। |