|
|
|
|
|
|
স্বপ্নময় চক্রবর্তী |
|
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য |
প্রতি রবিবারে হাবুল আসত একটা বেশ বড় বালতি নিয়ে। বালতি ভর্তি জামাকাপড়। ওর দাদাদের, ভাইপো-ভাইঝিদের। হাবুলকে ও-সব কাচতে হত। বিরাটির এক শান-বাঁধানো পুকুরঘাটে সঙ্গিন বদনে রঙিন বালতি নিয়ে এসে কাচতে বসত, এবং ধারাবিবরণী দিত। এটা শালা বড়দার প্যান্ট। টেরিকট। গোয়ালিয়র ডবল প্লেট। মক্ষিচুস। কিপ্পুস। পকেট ভোম্ ভা। কক্ষনও ভুল করে একটা আধলাও রাখে না। এক দিন এইসা হিড়িক দেব না শ্শ্শালা... বলেই প্যান্টটাকে এক আছাড়। বড় বউদির শাড়ি। রান্নার শাড়ি। হলুদ-টলুদ লাগানো। হলুদের দাগ পোস্কার না হলে বলবে কী কাচলে গো হাবুল, দাগ রয়ে গেছে... তুমি কী মাছের টুকরোটা আমার পাতে দিলে গো বউদি, ন্যাজার দিকের, সবচে’ বেশি কাঁটা, সবচে’ ছোট। শোধ নোবো, শোধ। কচাত্। শাড়িটা ভাঁজ করে গায়ের সমস্ত জোর দিয়ে আছাড়। মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে। ছুড়ে দেয় পুকুরে। অবশ্য শাড়ির এক প্রান্ত ধরা থাকে, তাই আবার টেনে আনতে পারে। প্রতি হপ্তায় সিনেমা যাওয়া চাই। রমা সিনেমায় পোসেনজিতের সিনেমা এসেছে রে হাবলু, দুটো টিকিট নিয়ে আসিস তো... মা আর মেয়ে সিনেমা যায়। খুচরো পয়সাগুলো পর্যন্ত ফেরত নিয়ে নেয়। কখনও বলে না হাবলু, চার আনা রাখ, বিড়ি খাস। আমিও হাবলু। মা-কা দুধ পিয়া। মেরা নাম হ্যায় হাবলু। বহুত রস হুয়া তুম্হারা। দোবো সব রস বার করে... শাড়িটা থেকে রস বার করতে থাকে পেঁচিয়ে, চিপে। হাবলুর মুখ থেকে জিভ বেরিয়ে যায়। চেপা হয়ে গেলে ছুড়ে ফেলে দেয় চাতালে যাঃ, ফোট। অ্যাইশ্সালা, সাবানেও গন্ধ যায়নি। মেজদার। মেজদার গায়ে কী বিটকেল গন্ধ মাইরি! রোজ মাল খায়। জামায় গিরিসের দাগ। গাড়ি চালায়। রোজ দুপুরে বাড়িতে খেতে আসে আর ট্যাংকি থেকে রবারপাইপ দিয়ে টেনে পেট্রোল ঝাড়ে। আমিও শালা কমতি নাকি? মায়ের দুধ খেয়েছি...। এই যে, ছোটকুর। জিন্স। পায়ের তলায় ফাটা। ছোট ভাইটা একটু ভোলেভালা আছে। পকেটে পাঁচ-দশ টাকা থেকে যায়। জিন্স-এর ওপর পাঞ্জাবি চাপায়। পাঞ্জাবিতে বাত্তেলা লেখা। পাঞ্জাবিটা চাতালে চিত করে দিয়ে বাত্তেলা পড়ে আমরা কেউ মাস্টার হতে চেয়েছিলাম, কেউ ডাক্তার, কেউ উকিল/ অমলকান্তি সে-সব কিছু হতে চায়নি।/ সে রোদ্দুর হতে চেয়েছিল। হাবুল বলতে থাকে ও তো রোদ্দুর হতে চেয়েছিল, তুই কদ্দুর হলি? বহুত বাত্তেলাবাজ। একটা পাঞ্জাবির গায়ে লেখা আছে কাল রজনীতে ঝড় হয়ে গেছে রজনীগন্ধা বনে। তাতে কার বাপের কী, কে জানে। ফুলের বাজারে যা একটু ঝামেলা। ছোটকুটা আছে বেশ। কাঁধে ঝোলা বোম্ ভোলা। কোবতে লেখে, কোনও পারমেন কাজ করে না, তবু শালা ঠিক মেয়েছেলে জুটিয়ে নেয়। কী করে পাত্তি জোগাড় করে কে জানে! দাদাদের ভাত খায় না, হোটেল মারে। প্যান্ট-পাঞ্জাবির পকেটটা ভাল করে হাতড়ায়। আজ নেই। ওর জামা-প্যান্ট থুপে-থুপে কাচতে-কাচতে বলে: জিন্স-এর ওপর পাঞ্জাবি...জর্দা দিয়ে পান খাবি...। বেশ মোলায়েম করে কাচে। এটা সেজদার। সাদা জামা, সাদা প্যান্ট। এয়ারপোর্টে চাকরি। হেভি ফাঁট, লাটের বাঁট, উইল্স ফোঁকে, গগল্স চোখে। পকেট হাতড়ায়। পকেট হাতড়ে একটা নোট পায়। গেয়ে ওঠে লে গয়ে দিল গুড়িয়া জাপান কি, পাগল মুঝে কর দিয়া... একটা পাঁচ ডলারের নোট। হাবলুর সেজদা এয়ারপোর্টের পোর্টার। টিপ্স পায়। বিদেশিদের বদান্যতা।
হাবলুর পুলকের অংশীদার হয়ে আমিও হাততালি দিই। হাবলু ডলারটা প্রথমে কপালে ছোঁয়ায়, তারপর মাথায়-চুলে মুছে শুকনো করে নিয়ে ওর হাফপ্যান্টের পকেটে ঢোকায়। গেয়ে ওঠে: দেখুক পাড়াপড়শিতে, কেমন মাছ গেঁথেছি বঁড়শিতে...।
হাবলু ওর দাদাদের ঘরে পালা করে খায়। মাসে দশ দিন প্রতি দাদার ঘরে। সব দাদাদের সংসারের যাবতীয় কাজকর্ম করতে হয়। শুধু বাসনটা মাজতে হয় না। আমায় বলে, আমার জীবনটা একদম ভিত্তাল হয়ে গেল স্বপনদা। জীবনে কোনও শখ মিটল না।
কী শখ, জিজ্ঞাসা করাতে বলেছিল একটা ড্রেস বানাতে পারছি না স্বপনদা। দুটো পকেট, পকেটে বোতাম। প্যান্টের পিছনে পকেট, পকেটে মানিব্যাগ... দাদারা তো খালি পাজামা দেয়। আর কী শখ? বলেছিল আছে। প্রাইভেট।
এক দিন মনখারাপ মুখে স্টেশনে বসে আছে হাবলু। কী হয়েছে? বলল, সুইসাইড করব। আর পারছি না। গায়ে পেট্রোল ঢেলে দেশলাই মেরে দেব। মেজদা গাড়ির তেল ঝাড়ে, ওখান থেকে আমিও একটু করে ঝাড়ি। দু’লিটার হয়ে গেছে। সুইসাইডের পক্ষে যথেষ্ট।
এক দিন দেখি ওকে, ওর স্বপ্নের পোশাকে। জামার দুটো পকেট, পকেটে বোতাম। রমা সিনেমা হলের সামনে।
বলি এই তো হাবলু। শখ মিটে গেল তো...।
ও বলল আমেরিকার দয়ায়।
মানে?
ডলারের দাম বাড়ল কিনা। ডলারগুলো বেচে দিলাম ছানুদার কাছে। ও বাংলাদেশে বিজনেস করে। আর পেট্রোলের দামও দিন-কে-দিন বাড়ছে। আর একটু বাড়ুক শালা।
বাড়লে?
বেচে দেব। এখন সুইসাইড করব না। এখুনি গার্লফ্রেন্ড আসবে। দু’পকেটে দুটো টিকিট। দিল দিয়া দর্দ লিয়া।
|
|
শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় |
|
• বাড়িতে যাচ্ছেতাই খাবার হবে ভেবে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় গান্ডেপিন্ডে গিলে বাড়ি ফিরে
দেখেন ন’কাকু এসেছেন, আর তাঁর অনারে বিরিয়ানি, ফিশ ফ্রাই, রেজালা, তন্দুরি চিকেন। |
|
|
• প্রেমিকাকে মেসেজ করলেন, ‘খুব শীত হচ্ছে’।
প্রত্যাশিত উত্তর ‘ও ছোনামোনা, আমাকে জড়াও’,
তার বদলে লিখল ‘নরফ্লক্স টি-জেড খাও’। তখন
বুঝলেন, ইংরেজি হরফে ‘শীত’ লেখার কী জ্বালা। |
• ঘুমিয়ে পড়েছিলেন, উঠে দেখেন সিনেমাটা শুরু হতে
জাস্ট আধ ঘণ্টা। এই মেট্রোটা পেলে তবু চান্স আছে।
চলন্ত
সিঁড়িকে হারিয়ে পাঁইপাঁই দৌড়ে নেমে, নাকের
ডগায়
দরজা বন্ধ। কাচের ও-পার থেকে সেডিস্ট মুচকি। |
|
|
|
|
• দেশ জুড়ে বেড়ে চলেছে কন্যাভ্রূণ হত্যা, কুকর্মে এগিয়ে মহারাষ্ট্র। সে রাজ্যেই ব্যক্তিগত সামর্থ্য-সংকল্প অন্যের মধ্যে চারিয়ে নজির গড়লেন ডাঃ গণেশ রাখ, তাঁর হাসপাতালে কোনও কন্যাসন্তান জন্ম নিলেই মা ও শিশুর চিকিৎসায় লাগছে না একটি পয়সাও। একুশ শতকেও ছন্নমতি এ দেশ সংসারে কন্যার জন্মকে মনে করে অভিশাপ, মা-মেয়ের খরচা বইতে রাগেঘেন্নায় রি-রি পুরুষতন্ত্রের গা আগে থাকতে ভেড়ে সেই সব গাইনি-রেডিয়োলজিস্টদের দরজায় যারা এক্সট্রা ক’টা টাকার বিনিময়ে চুপি চুপি জানিয়ে দেয় গর্ভস্থ ভ্রূণটির লিঙ্গ, মেয়ে শুনলেই রুদ্ধদ্বার ক্লিনিকে গর্ভপাতের গোপন প্যাকেজ পাকা। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হাত-মেলানো ও ‘ডাক্তার’ বলে নিজেদের দাবি করা কতিপয় বদ লোকের হাতেই হয়ে চলেছে লক্ষকোটি ভবিষ্যতের বীভৎস খুন, তাকেই রুখতে আর সেই সঙ্গে চিকিৎসকদের শুভ, সুন্দর ভাবমূর্তি উদ্ধারের লক্ষ্যে ডাঃ রাখ-এর এই ‘কন্যাসন্তানের জন্ম=ফ্রি ট্রিটমেন্ট’ নীতি-অনুসরণ। গোড়ায় নিজে পয়সা নিতেন না, অ্যানেস্থেটিস্ট-সহ অন্য ডাক্তারদের ফি দিতেন পকেট থেকে। এখন তাঁরাও সহব্রতী, দেশের আরও এগারোশো ডাক্তার জানিয়েছেন, সঙ্গে আছি। এ পোড়া সময়েও ব্যষ্টির জীবিকার সঙ্গে মানবিকতাকে মেলালে সমষ্টিও জাগ্রত হয় শুভ বোধে, প্রমাণ হল।
• আমেরিকার বস্টনে মারা গেলেন প্রবাদপ্রতিম সার্জন ডাঃ জোসেফ মারে। ১৯৫৪ সালে বিশ্বে তিনিই প্রথম সফল ভাবে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করেছিলেন, এক ভাইয়ের কিডনি রোগাক্রান্ত অন্য ভাইয়ের দেহে বসিয়ে তাঁকে বাঁচিয়েছিলেন। সার্জারির অশেষ সম্ভাবনার দোর খুলে দিয়েছিল এই অঙ্গ প্রতিস্থাপন পদ্ধতি, সে পথেই গবেষণা-অবদানের হাত ধরে ১৯৯০-এ আসে নোবেল। আজ দুনিয়ায় অন্তত ছ’লক্ষ মানুষ অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পর আনন্দে বেঁচে আছেন, তাই সহকর্মী-শিষ্যদের গর্বিত বয়ান: এই সুঠাম সুন্দর পৃথিবী ডাঃ মারে-র উপহার। ডেস্কে লিখে রেখেছিলেন Difficulties are opportunities, কাজে নিয়ত আসা বাধাবিঘ্নে এতটুকু হার না-মানার জেদই এনে দিয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে গুরুতর জখম সেনার শুশ্রূষা থেকে শুরু করে চিকিৎসায় বিপ্লব আনা প্লাস্টিক সার্জারির মতো অগুন্তি সাফল্যের পালক, এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকায় সশ্রদ্ধ উল্লেখ। বলতেন, আরও দশ জন্ম পৃথিবীতে আসবেন, পাঁচটি কাটবে ভ্রূণবিদ্যা-জেনেটিক্স-ফিজিক্স-অ্যাস্ট্রনমি-জিয়োলজি চর্চায়, বাকিগুলোয় হবেন তুখড় পিয়ানিস্ট, টেনিস প্লেয়ার, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক-এর লেখক! |
|
|
|
৩৮০
ক্যানসার-বিরোধী প্রচার অভিযানে
চার দিনে যত মাইল সাইকেল
চালালেন আইরিশ ক্রিকেটার গ্যারি উইলসন ও উইলিয়াম পটারফিল্ড |
৬৫
নারী নির্যাতন রুখতে
পশ্চিমবঙ্গে
যতগুলো মহিলা
থানা তৈরির
পরিকল্পনা
নিয়েছে রাজ্য সরকার |
১৫০০০
বাড়ির সামনে জল জমে
থাকলে সর্বোচ্চ যত টাকা পর্যন্ত
জরিমানা হতে পারে বলে ঘোষণার
পরিকল্পনা করছে কলকাতা পুরসভা |
১৫৬০০০০০০
নাইকি-র সঙ্গে দশ বছরে যত
পাউন্ড বিজ্ঞাপনী রোজগারের
চুক্তি করলেন বিশ্বের এক
নম্বর গল্ফার রোরি ম্যাকিলরয় |
|
৭০০
মাতৃদুগ্ধে অন্তত যত
রকমের ব্যাকটিরিয়ার
সন্ধান পেলেন
স্পেনের গবেষকরা
|
৪৫০৪৮
গত দু’বছরে সিরিয়ায়
সরকার ও বিদ্রোহীদের
সংঘর্ষে যত জন
মানুষ মারা গিয়েছেন
|
৬৩৩০০০০০০০০০
এ বছর প্রতিরক্ষা
খাতে যত ডলার
খরচ
করবে
মার্কিন সরকার
|
২৮.৩
এ রাজ্যের যত শতাংশ প্রথম
শ্রেণিতে পাঠরত পড়ুয়া বাংলা
বর্ণমালার একটিও অক্ষর চেনে না
বলে অ্যানুয়াল স্টেটাস অফ এডুকেশন
রিপোর্ট ২০১২-র সমীক্ষায় প্রকাশ |
|
|
|
|
|
|
অ
সী
ম
চৌ
ধু
রী |
|
|
সামনেই ভোট, শোন গোয়েন্দা দফতর
ভোটে জেতানোর দায় জেনে রাখ সব তোর
চুপি চুপি ছকে দিবি শুরু থেকে তার শেষ ‘সিটি অব ভয়’-এ ওড়ে স্যাটানিক ভার্সেস |
উত্সবে যাই... হরেক মেলায়। কেউ দিয়ো না বাগড়া।
শিল্পী পাবেন শাল দোশালা, পায়ে জরির নাগরা!
উড়বে পটের ময়ূরছানা ‘বিশিষ্ট’রা খাবেন দানা।
শিল্প এটাই। দরকার নেই গুজরাত বা আগ্রা। |
|
|
|
লেটারিং বেটারিং |
|
খাঁচার বাইরে আসলি চিড়িয়া |
|
|
|
|
এই ছবির সংলাপ লিখেছেন সৌমেন ঘোষাল, লেক গার্ডেনস
|
|
|
|
পাশের ছবির দু’জন কী বলছে? সাদা পাতায়
লিখে পাঠান।
প্রতি ডায়লগ ২০ শব্দের মধ্যে।
ঠিকানা:
নয়া সংলাপ,
রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১ |
|
|
|
|
|
|
আপনিও লিখে পাঠাতে চান ভবিষ্যতের একটা রিপোর্ট? ঠিকানা:
টাইম মেশিন,
রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০ ০০১ |
|
|
|
|
|
|
|