|
|
|
|
নাগাল্যান্ডের ভোটে এ বার নামলেন দুই নারী |
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি |
অন্য ক্ষেত্রে যত মতপার্থক্যই থাকুক, মেয়েদের যে রাজনীতি করা বা শাসন করার কোনও ক্ষমতা এবং অধিকার নেই তা নিয়ে নাগাল্যান্ডের জঙ্গি-আমলা-গ্রামের মোড়ল বা উপজাতি গোষ্ঠীর প্রধান সকলেই একমত। সেই পুরুষতান্ত্রিকতাকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে নামছেন দুই কন্যা। এম রাখিলা লাখিউমং ও খেঘোলি সুমি।
প্রতিবেশী অসম বা ত্রিপুরা যেখানে পঞ্চায়েত নির্বাচনে মেয়েদের জন্য ৫০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত রেখেছে, সেখানে পুরুষ শাসিত নাগা সমাজ কেন্দ্রের চাপের সামনেও অনড় হয়ে জানিয়ে দিয়েছে, পঞ্চায়েত বা বিধানসভা নির্বাচনে মেয়েদের জন্য ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণ তারা মানবে না। আজ অবধি কোনও মহিলা বিধায়ক পায়নি নাগাল্যান্ড। মেয়েদের হাতে ক্ষমতা বলতে, তিন দশক আগে প্রথম ও শেষ বারের মতো রানো সাইজার সাংসদ হওয়া। রক্ষণশীল সমাজের রক্তচক্ষুর বিরুদ্ধে মহিলা সংগঠনগুলির ভরসা ছিল প্রগতিশীল মুখ্যমন্ত্রী ও রাজনৈতিক দলগুলি। কিন্তু বিধানসভা ভোটের আগেই বিধানসভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, নাগা হো হো এবং জঙ্গি সংগঠনগুলির আপত্তি উড়িয়ে মেয়েদের হাতে সংরক্ষণের ক্ষমতা তুলে দিয়ে অশান্তি বাড়ানোর কোনও অর্থ হয় না।
মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ নয়, রাজ্যে শান্তি বজায় রাখাই বেশি কাম্য। কেউ পাশে নেই জেনেও তুয়েনসাং সদর ২ নম্বর কেন্দ্রে বিজেপি টিকিটে প্রার্থী হয়েছেন প্রয়াত মন্ত্রী এ লাখিউমং-এর স্ত্রী রাখিলা। আর খেঘোলি কংগ্রেসের হয়ে ঘাসপানি থেকে দাঁড়াচ্ছেন। তাঁর লড়াই রাজ্যসভার সাংসদ তথা এনপিএফ প্রার্থী খেকিহো জিমোমির বিরুদ্ধে।
প্রাক্তন মন্ত্রী হেকিয়া সুমির স্ত্রী খেঘোলি বলেন, “ভোটে জিতলে মেয়েদের অধিকারের জন্য লড়াই চালানোই হবে প্রধান ব্রত।” ৬১ বছর বয়সী রাখিলাও নাগাল্যান্ডে মেয়েদের সম্মান প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী। রাখিলা ও খেঘোলি জানেন, নাগা সংগঠনগুলির চোখা রাঙানি উপেক্ষা করে মহিলারাও তাঁদের ভোট দেওয়ার সাহস পাবেন না। দলীয় বিভেদ পাশে সরিয়ে দু’জনেরই আহ্বান, ‘যত দিন নাগা মেয়েরা ভয় ও অসম্মানের খোলস থেকে বের হয়ে একজোট না হবেন, তত দিন পুরুষরা এ ভাবেই মেয়েদের পদানত করে রাখবে।’ আমলা থেকে সেনা অফিসার, পুলিশ থেকে পদ্মশ্রী, কী হননি নাগা মেয়েরা? এমন কী গত বছর রাজ্যের হয়ে প্রথম বার এভারেস্ট জয়ের কৃতিত্বও এক নাগা রমণীর। কিন্তু এ রাজ্যে মেয়ে হয়ে জন্মে বিধায়ক হওয়া এভারেস্টের চূড়ার চেয়েও দুর্গম! |
|
|
|
|
|