পঞ্চায়েত নির্বাচন এগিয়ে আনতে চেয়েও বিরোধীদের বাধায় তা করা যায়নি বলে বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বলেন, তিনি চেয়েছিলেন ফেব্রুয়ারি মাসে শীতের মধ্যে ভোট হোক। কিন্তু বিরোধীরা তা হতে দেয়নি। এখন নির্দিষ্ট সময়েই ভোট হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতার এই মন্তব্যকে তেমন আমল দিতে চায়নি সিপিএম। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের মন্তব্য, ওটা মুখ্যমন্ত্রীর মুখের কথা।
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে রাজ্য সরকার কোনও ফাইল নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়েছে কিনা, তা নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি। রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে অবশ্য খবর, ফেব্রুয়ারি মাসে ভোট করতে চেয়ে রাজ্য সরকার গত অক্টোবর মাসেই তাদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল।
আর কংগ্রেস জানিয়েছে, তারা পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে পথে কোনও বাধা সৃষ্টি করেনি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেছেন, তাঁদের দাবি ছিল ভোটার তালিকা পুরো সংশোধন করে তার পরে ভোট হোক। মমতা নির্বাচন কমিশনকে কুক্ষিগত করতে চাইছেন বলে পাল্টা তোপ দেগেছে কংগ্রেস।
এ দিন শিলিগুড়িতে সাংবাদিক সম্মেলনে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা শীতের মরসুমে ফেব্রুয়ারি মাসে পঞ্চায়েত ভোট করতে চেয়েছিলাম। কংগ্রেস এবং সিপিএম নির্বাচন কমিশনে এ নিয়ে অভিযোগ করেছে। আমি কী করতে পারি? এখন যখন ভোট হওয়ার হবে।”
মমতার এই অভিযোগের জবাবে রসিকতার ঢঙে সূর্যবাবুর মন্তব্য, “ঠান্ডায় ওঁর হয়তো সুবিধা হয়। আমার তো খুবই অসুবিধা হয়। এত ধড়াচুড়ো নিয়ে বেরোতে হয়। যাদের বেশি জামাকাপড় নেই, গ্রামের সেই সব লোকেদেরও শীতে খুবই অসুবিধা হয়। গরমে সে সব বালাই নেই।”
বিরোধী দলনেতা একই সঙ্গে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এখন যা বলছেন, সেটা সবই মুখের কথা। সরকারি বিজ্ঞপ্তি কিছু জারি হয়েছে কি? মুখ্যমন্ত্রী এই ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে ফাইল পাঠিয়েছেন কি? তবে আসল কথা হল আইন। আইন অনুযায়ী পঞ্চায়েত ভোট নির্ধারিত সময়েই করতে হয়। এগোনো যায় না।”
বস্তুত, আইন অনুযায়ী পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আনলেও পুরনো বোর্ডকে তার নির্ধারিত মেয়াদ পর্যন্ত কাজ করতে দিতে হয়। নতুন বোর্ড আগেভাগে দায়িত্ব নিতে পারে না। সূর্যবাবু সেই কথাটাই বোঝাতে চেয়েছেন বলে বাম শিবিরের ব্যাখ্যা।
সূর্যবাবু রসিকতা করলেও প্রদীপবাবু কিন্তু উল্টে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ সম্পূর্ণ ভুল। উনি রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে দলের কুক্ষিগত করার চেষ্টা করছেন। আমরা তার ঘোর বিরোধী।”
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির মন্তব্য, “আমরা বলেছিলাম, ভোটার তালিকা পুরো সংশোধন না-করে নির্বাচন করা যায় না। আমরা কখনওই ভোট পিছোনোর কথা বলিনি। আসলে তাড়াহুড়ো করে ভোট করাটা ছিল ওদের রাজনৈতিক কৌশল। তা কার্যকর করতে পারেনি বলেই বিষোদ্গার করছে।”
পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে বাস্তব পরিস্থিতিটা আসলে কী? রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে বলা হচ্ছে, অক্টোবরে যখন রাজ্য সরকারের কাছ থেকে চিঠি এসেছিল, তখনও ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের কেন্দ্রগুলির সীমানা পুর্নবিন্যাসের কাজ শেষ হয়নি।
তা করতে কয়েক মাস লাগবে জানিয়ে রাজ্যকে বলে দেওয়া হয় যে, ফেব্রুয়ারিতে ভোট করা সম্ভব নয়।
অন্য দিকে সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্য প্রথমে পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আনতে চেয়েছিল। পরে তা পিছিয়ে নভেম্বরে করার কথা ভাবা হয়। কিন্তু দু’টি ক্ষেত্রেই আইনের কোনও সংস্থান নেই দেখে শেষ পর্যন্ত মে মাসে নির্দিষ্ট সময়েই ভোট করার ব্যাপারে রাজি হয়েছে। তবে ক’দফায় ভোট হবে এবং তার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা কী হবে তা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছে মহাকরণ।
কমিশন তিন দফায় ভোট করতে চাইলেও সরকার এক দিনে ভোট করার পক্ষপাতী। সর্বদল বৈঠক ডেকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি এ দিন জানিয়েছে কংগ্রেস।
|
৯০টি অ্যানালগ চ্যানেলের মধ্যে বৃহস্পতিবার মাঝরাতে বন্ধ হয়ে গেল ৮৪টিই। বাদ কিছু বাংলা সংবাদ ও বিনোদন চ্যানেল এবং দূরদর্শনের অ্যানালগ সিগন্যাল। এমএসও-দের তরফে সুরেশ শেঠিয়া জানান, তাঁরা কেন্দ্রে চিঠি পাঠিয়ে অ্যানালগ বন্ধের কথা জানিয়েছেন। নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের অনুরোধে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছ’টি অ্যানালগ চ্যানেল চালু রাখা হবে। ফিরহাদ বলেন, “আরও ক’টা দিন অ্যানালগ চালু রাখতে অনুরোধ করেছি।” |