|
|
|
|
|
সিমলাপালে আত্মঘাতী ছাত্রী, সুইসাইড
নোটে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ
নিজস্ব সংবাদদাতা • সিমলাপাল |
|
পাড়ার এক যুবককে শাস্তি দেওয়ার কথা সুইসাইড নোটে লিখে আত্মঘাতী হল এক স্কুল ছাত্রী। লক্ষ্মীপ্রিয়া গরাই (১৪) নামের নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীর বাড়ি সিমলাপাল বাসষ্ট্যান্ড এলাকায়। বুধবার রাতে বাড়ির ভিতর তার গলায় দড়ির ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের অভিযোগ ইভটিজিংয়ের শিকার হয়েই সে আত্মহত্যা করেছে। ওই কিশোরীর বাবা শান্তিনাথ গরাই বৃহস্পতিবার সিমলাপাল থানায় সুখেন ধীবর নামে ওই যুবকের বিরুদ্ধে তাঁর মেয়েকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত যুবক পলাতক।
পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “সিমলাপালের এক কিশোরীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে ওই যুবককে খোঁজা হচ্ছে। ওই কিশোরীর বাড়ি থেকে একটি ‘সুইসাইড’ নোট পাওয়া গিয়েছে। কী কারণে কিশোরী আত্মঘাতী হল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পিছনে আরও কেউ জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
সিমলাপাল বাসস্ট্যান্ডে শান্তিনাথবাবুর মনোহারী দোকান রয়েছে। তাঁর তিন মেয়ের মধ্যে বড় ছিল লক্ষ্মীপ্রিয়া। সে সিমলাপাল মঙ্গলময়ী বালিকা বিদ্যালয়ে পড়ত। তার মা শ্যামলীদেবী জানান, বুধবার রাত ৮টায় তিনি দোকানে যান। তখন তিন মেয়ে বাড়িতে পড়াশোনা করছিল। পরে মেজ ও ছোট মেয়ে দোকানে যায়। বাড়িতে বড় মেয়ে একা ছিল। রাত সাড়ে ৯টায় তাঁরা বাড়ি ফিরে দেখেন ঘরের ভিতর বড় মেয়ের দেহ ঝুলছে। তাঁর অভিযোগ, “গত কয়েকদিন ধরেই সুখেন ধীবর আমার বড় মেয়েকে রাস্তায়, স্কুলে যাওয়ার পথে উত্যক্ত করছিল। বুধবার দুপুরে ফোন করে সুখেন লক্ষ্মীপ্রিয়াকে হুমকি দেয় ওর মোবাইলে তার খারাপ ছবি তোলা রয়েছে। লক্ষ্মীপ্রিয়া কান্নাকাটি করছিল। এ সব নিয়ে ওকে চিন্তা করতে বারণ করেছিলাম। কিন্তু ও যে এ ভাবে আত্মহত্যা করবে তা ভাবতে পারিনি।”
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে খবর, বিছানায় সুইসাইড নোট পড়েছিল। তাতে লেখা ছিল, সুখেনের জন্যই তাকে মরতে হচ্ছে। ওই যুবকের শাস্তি হলে তার আত্মা শান্তি পাবে। শান্তিনাথবাবুর অভিযোগ, “দিন পনেরো আগে টিউশন পড়তে যাওয়ার পথে ওই যুবক আমার মেয়ের উপর অত্যাচারের চেষ্টা করে। এখন এ সব জানতে পারছি। এ সবের জন্যই আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হল।” যদিও পুলিশ জানিয়েছে, এ ব্যাপারে আগে কোনও অভিযোগ হয়নি। সিমলাপালের আটচালা মোড়ের বাসিন্দা, পেশায় লটারি বিক্রেতা অভিযুক্ত সুখেনের হদিশ মেলেনি। চেষ্টা করেও তার পরিবারের অন্য কারোর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
বৃহস্পতিবার সকালে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই কয়েকশো বাসিন্দা থানায় গিয়ে অভিযুক্তকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানান। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, সম্প্রতি এলাকায় ইভটিজিংয়ের দৌরাত্ম্য বেড়ে গিয়েছে। কিছু যুবক দিনে-দুপুরে মোটরবাইক নিয়ে মেয়েদের উত্যক্ত করছে। পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, রাস্তায় তাদের টহল রয়েছে। তা আরও বাড়ানো হবে। |
|
|
|
|
|