কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
তৃণমূলের নেতৃত্বে শ্রমিক বিক্ষোভে ছাই তোলা বন্ধ
ছাই বহনে ডাম্পার ব্যবহারের বিরোধিতা করে বৃহস্পতিবার কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ছাই তোলার কাজ বন্ধ করে দিলেন তৃণমূল সমর্থক শ্রমিকরা।
ছাই খাদানের সামনে এ দিন সকাল থেকে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন মঞ্চ বেধে বিক্ষোভ-অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে দেয়। ফলে তিনটি খাদানে ছাই তোলার কাজ করতে পারেনি প্রায় ৩০০টি ডাম্পার-লরি। বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে কোলাঘাটের তৃণমূল বিধায়ক বিপ্লব রায়চৌধুরী বলেন, “গত ছয় মাস ধরে ডাম্পার ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার ফলে প্রায় ৩০০ জন শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন। এই শ্রমিকরা কাজের দাবিতে এ দিন ছাই খাদানের সামনে বিক্ষোভ-অবস্থান করছেন। আমরা ডাম্পার ব্যবহারের বিরোধিতা করছি না। আমরা চাই ডাম্পারের পাশাপাশি সাধারণ লরিও থাকুক। যাতে শ্রমিকরাও কাজের সুযোগ পান।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বর্জ্য ছাই রাখার জন্য কাছাকাছি এলাকায় মোট ৬টি ছাইপুকুর রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৩টি ছাইপুকুর বা খাদান থেকে ছাই তোলার কাজ চলছে। বাকি ৩টিতে ছাই-জল ফেলা হচ্ছে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের খাদান থেকে এই ছাই অন্যত্র সরাতে তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদ টেন্ডার ডেকে ঠিকাদার নিযুক্ত করেছে। বর্তমানে ৩টি ঠিকাদার সংস্থা ছাই তুলে তা অন্যত্র সরানোর দ্বায়িত্ব রয়েছে।
মঞ্চ বেঁধে বিক্ষোভ তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের। ছাই খাদানে বন্ধ কাজ।
ঠিকাদার সংস্থাগুলি ছাই তুলে অন্যত্র ফেলার জন্য কয়েক বছর আগেও সাধারণ লরি ব্যবহার করত। খুব অল্প সংখ্যক ডাম্পার ব্যবহার হত তখন। সাধারণ লরিতে চালক, খালাসি ছাড়াও ছাই বহন করে নিয়ে গিয়ে ফেলার জন্য তিন জন শ্রমিক প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমানে সাধারণ লরির পরিবর্তে স্বয়ংক্রিয় ডাম্পার ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে শ্রমিক ছাড়াই ছাই ফেলা যায়। ফলে শ্রমিক পিছু খরচ যেমন হয় না, তেমন সময়ও কম লাগে। ছাই সরানোর কাজে নিযুক্ত এক ঠিকাদার সংস্থার কর্তা জানান, নতুন প্রযুক্তি আসায় স্বয়ংক্রিয় ডাম্পারের মাধ্যমে ছাই অপসারণের কাজ দ্রুত হচ্ছে। এতে সময় ও শ্রমিক খরচ দুই-ই বাঁচছে। একটি সাধারণ লরি যেখানে দিনে দু’বার ছাই তুলে নিয়ে গিয়ে অন্যত্র ফেলে, সেখানে একটি ডাম্পার দিনে ৫ বার ছাই তুলে অন্যত্র ফেলতে পারে। ফলে গাড়ি মালিকরাও এখন সাধারণ লরির পরিবর্তে ডাম্পার কিনছে। পাঁচ বছর আগেও যেখানে ২৫০টি সাধারণ লরি ও ৭৫টি ডাম্পার ছিল, এখন সেখানে ডাম্পারের সংখ্যা ২৫০, সাধারণ লরি ৫০টি। এক ঠিকাদারের কথায়, “আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার না করলে পিছিয়ে পড়তে হবে। এতে শ্রমিকদের কাজের সুযোগ কমলেও কিছু করার নেই। রাজ্যের অন্য কোনও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে এখন সাধারণ লরি দিয়ে ছাই ফেলা হয় না।” তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের বিরোধিতার জেরে এ দিন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ছাই তোলার কাজ বন্ধ থাকায় ক্ষুব্ধ ঠিকাদাররা। এক ঠিকাদার সংস্থার কর্তার অভিযোগ, “শ্রমিকরা কাজ হারাচ্ছেন অজুহাতে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের স্থানীয় নেতৃত্ব ডাম্পার পিছু প্রতি দিন টাকা আদায় করছে। তারপরেও এই ধরনের বিক্ষোভ মানা যায় না। আমরা তৃণমূলের উচ্চ নেতৃত্বকে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে বলেছি।” পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি তথা তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক মামুদ হোসেন বলেন, ‘‘দু’দিকেই গুরুত্ব দিতে হবে। সমস্যা মেটানোর জন্য আলোচনায় বসা হবে।”

ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.