২৬ বছর হাজতবাসের পরে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড |
নিজস্ব সংবাদদাতা • চুঁচুড়া |
বৌদি এবং পাঁচ বছরের ভাইঝিকে খুনের মামলায় ২৬ বছর ধরে হাজতবাস করছে হরিপালের শেখ জামালউদ্দিন। ওই জোড়া খুনের দায়ে বৃহস্পতিবার তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন চুঁচুড়া আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক সেকেন্ড কোর্টের বিচারক শ্যামলকান্তি বিশ্বাস।
মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী বিদ্যুত্ রায়চৌধুরী বলেন, “বিচারক যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি অপরাধীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছেন। তার মধ্যে ২৫ হাজার টাকা অভিযোগকারীকে (জামালউদ্দিনের দাদা) দেওয়া হবে।” ইতিমধ্যেই জামালউদ্দিনের ২৬ বছর হাজতবাস হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে বিদ্যুত্বাবু জানান, অপরাধীর পরিবার কারা বিভাগকে বিষয়টি জানাতে পারে। সে ক্ষেত্রে কারা বিভাগ আদালতকে তা জানাবে। তখন বিচারক অপরাধীর শাস্তি কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন। |
সাজাপ্রাপ্ত আসামি। —নিজস্ব চিত্র |
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিপালের কনকপুর গ্রামের বাসিন্দা জামালউদ্দিন এবং তার দাদা শেখ বাহাউদ্দিন একই সঙ্গে থাকতেন। পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে দুই ভাইয়ের বিবাদ বাধে ১৯৮৬ সালের গোড়ায়। ওই বছরের ১০ নভেম্বর বিকেলে দাদার অনুপস্থিতিতে তাঁর শোয়ার ঘরে ঢুকে বৌদি সোফিয়া বেগম এবং তাঁর মেয়ে হাসিনা খাতুনকে কাটারি দিয়ে কোপায় জামালউদ্দিন। তাঁদের আর্তনাদে পড়শিরা এসে জামালউদ্দিনকে ধরে ফেলেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা কাটারি-সহ গ্রেফতার করে জামালউদ্দিনকে। বাহাউদ্দিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করে থানায়। তার কিছু দিন পর জামালউদ্দিনের ঠিকানা হয় আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার। দ্রুত পুলিশ মামলার চার্জশিট দেয়। গত মঙ্গলবার বিচারক বছর বাষট্টির জামালউদ্দিনকে দোষী সাব্যস্ত করেন।
এ দিন জামালের স্ত্রী বা দুই মেয়ের কাউকেই আদালতে দেখা যায়নি। সাজা শোনার পরে জামালউদ্দিন বলে, “রাগের মাথায় বৌদি আর ভাইঝিকে খুন করেছিলাম। আর জেলে থাকতে ইচ্ছে করে না। বাকি জীবনটাও ভুলের মাসুল দিতে হবে।” |
|