|
|
|
|
চিনকে রুখতে প্রস্তুতি |
১০টি যুদ্ধ-কপ্টারের স্থায়ী ঘাঁটি এ বার ব্যারাকপুরে |
সুনন্দ ঘোষ • কলকাতা |
প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সখ্য স্থাপন করে ভারতের উপরে চাপ ক্রমশই বাড়িয়ে চলেছে চিন। এই পরিস্থিতিতে আগাম সতর্কতা হিসাবে দেশের সেনা-ঘাঁটিগুলিকে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্র। তারই অঙ্গ হিসেবে ব্যারাকপুরের সেনা ছাউনিকে এই প্রথম জঙ্গি-হেলিকপ্টারের স্থায়ী ঘাঁটি হিসাবে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। হামলার পাশাপাশি রাতের অন্ধকারে উদ্ধার কাজে দক্ষ রাশিয়া থেকে আনা এমআই-১৭ এবং ভি-৫ হেলিকপ্টারও এ বার থাকছে ব্যারাকপুরে এই সেনা-ঘাঁটিতে। ইতিমধ্যেই বাগডোগরায় এই কপ্টারের ঘাঁটি বানানো হয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক মুখপাত্রের ব্যাখ্যা, এক দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে ভারতের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাড়ানোর চেষ্টা করছে চিন। একই সঙ্গে, ভারতকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও মায়ানমারের মতো পড়শি দেশগুলিতে নৌ ও বিমান-ঘাঁটি তৈরি করছে তারা। এ জন্য ভারতকেও কিছু বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। তারই অঙ্গ ব্যারাকপুরের এই কপ্টারঘাঁটি। এক সেনা অফিসারের কথায়, “ভৌগলিক দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর-পূর্ব ভারত চিনের সব চেয়ে কাছে। তাই ব্যারাকপুর ছাড়াও এ রাজ্যের পানাগড়, কলাইকুন্ডা, হাসিমারা এবং বাগডোগরায় বায়ুসেনার বর্তমান ঘাঁটিগুলিকে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে চাইছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।” শক্তিশালী করা হচ্ছে উত্তর-পূর্বের সেনা-ঘাঁটিগুলিকেও। |
|
ব্যারাকপুরে বায়ুসেনার মহড়া। —নিজস্ব চিত্র |
সূত্রের খবর, ব্যারাকপুরে মোট ১০টি হেলিকপ্টার রাখা হবে। সেনা অফিসারদের কথায়, নতুন এই হেলিকপ্টারগুলি থেকে যেমন ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া যাবে, তেমনই শহরের কোথাও আগুন লাগলে উদ্ধারের কাজেও সাহায্য মিলবে। তাঁরা বলেন, “এই কপ্টারের পেটে এতটা ফাঁকা জায়গা রয়েছে, সেটিকে জলের ট্যাঙ্ক হিসেবেও ব্যবহার করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে আকাশ থেকে এক লপ্তে অনেকটা জল ছিটিয়ে আগুন নেভানোর কাজও করতে পারবে জঙ্গি-কপ্টার। আবার রাতের অন্ধকারেও দিব্যি উড়তে পারে কপ্টারগুলি।”
এক সময় মিগ-২১ এবং ডাকোটা জঙ্গি-বিমানের ঘাঁটি ছিল ব্যারাকপুর। আশির দশকের শুরুতে সেগুলি সরিয়ে দেওয়া হয়। এখন সেখানে হেলিকপ্টার সারানো ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে হিন্দুস্থান এরোনটিক্স। সম্প্রতি বায়ুসেনার কিছু কপ্টারও এখানে সারানো হচ্ছে।
স্থায়ী ঘাঁটির জন্য ব্যারাকপুরে কিছু পরিকাঠামো বানাতে হচ্ছে সেনাবাহিনীকে। ওই সেনা অফিসার বলেন, “গত এক বছর ধরে নতুন অফিস, অফিসারদের জন্য আবাসন ও মেস তৈরি করা হয়েছে। জঙ্গি-কপ্টারের হ্যাঙ্গারও তৈরি হয়েছে।” মহাকরণে স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তা জানান, পানাগড়ের বর্তমান সেনা-ছাউনিতে পাকাপাকি ঘাঁটি বানাতে রাজ্য সরকারের কাছে ১২০০ একর জমি চেয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। মাল বহনকারী সি-১৩০ জে সুপার হারকিউলিস বিমান রাখা হবে এই ঘাঁটিতে। পানাগড়কে জ্বালানি ভরার কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে বায়ুসেনার।
এক সেনা অফিসার জানালেন, “যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে বিমান নীচে নেমে জ্বালানি ভরে ফের উড়ে যেতে পারবে।” পূর্ব ভারতের কোথাও বায়ুসেনার বড়সড় জ্বালানি-ভাণ্ডার নেই। কলাইকুন্ডা এবং হাসিমারাতে সুখোই বিমানের ঘাঁটি করা হবে। প্রতিটি ঘাঁটিতে যাতে রাতে বিমান ওঠানামা করতে পারে, সে জন্য বিশেষ যন্ত্র বসানো হচ্ছে। |
|
|
|
|
|