আগামী কাল শুক্রবার থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ভিডিওকনের কারখানা। সংস্থা কর্তৃপক্ষের দাবি, ফিলিপ্স-এর কাছ থেকে কিনে নেওয়া এই কারখানার খোলনলচে বদলাতে এক বছর তা বন্ধ রাখা হবে। এই এক বছর বেতন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি মিললেও এই সিদ্ধান্তে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন কর্মীরা।
১৯৯৯ সালে ডাচ সংস্থা ফিলিপ্স-এর কারখানাটি অধিগ্রহণ করে ভিডিওকন। ৯ কোটি টাকায় কেনা হয় ১১ একর জুড়ে তৈরি এই কারখানা। তারাতলায় আছে আরও একটি। সব মিলিয়ে রয়েছেন ৩০০-র বেশি কর্মী। এর মধ্যে সল্টলেকেই রয়েছেন ২০৫ জন। সোমবার সল্টলেক কারখানা বন্ধ রাখার নোটিস ঝোলানো হয়। তারাতলায় অবশ্য এখনও এ রকম নোটিস পড়েনি। |
বস্তুত, গত ১৫ মাস সল্টলেক কারখানায় উৎপাদন হয়নি। তারাতলাতেও তা চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। সল্টলেকে তৈরি হত সাবেকি রঙিন টেলিভিশন। ভিডিওকন কর্তৃপক্ষের দাবি, এ ধরনের টেলিভিশনের বাজার তলানিতে ঠেকেছে। সংস্থার পূর্বাঞ্চলীয় কর্তা গৌতম সেনগুপ্ত জানান, গ্রামের বাজারে এই টেলিভিশন বিক্রির চেষ্টা করা হলেও লাভ হয়েনি। তাঁর মতে বাজার ঝুঁকছে এলসিডি টেলিভিশনের দিকে। সেই চাহিদা মেনেই এই কারখানায় এ বার এলসিডি টেলিভিশন ও মোবাইল ফোন উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে তাঁর দাবি। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে আমূল বদলাতে হবে উৎপাদন ব্যবস্থা।
কর্তৃপক্ষের যুক্তি অবশ্য মানতে নারাজ কর্মীরা। তাঁদের দাবি, ধাপে ধাপে কারখানা সংস্কার করা হোক। সে ক্ষেত্রে তা বন্ধ রাখতে হবে না। একটি শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা সন্তোষ ভট্টাচার্যের দাবি, “কারখানা সংস্কারের পক্ষে আমরাও। কিন্তু গোটা বিষয়ে স্বচ্ছতার অভাব আছে। সংস্কার পরিকল্পনা নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি কর্তৃপক্ষ।” একই সঙ্গে কর্মীদের অভিযোগ, ত্রিপাক্ষিক আলোচনায় রাজ্যকে শরিক করার আর্জিও মানেনি সংস্থা। গৌতমবাবুর অবশ্য দাবি, অধিকাংশ কর্মী সবেতন এক বছর বাড়ি বসে থাকতে রাজি হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ফিলিপ্স কারখানা কেনার সময়ে রাজ্যের থেকে দীর্ঘ দিন করছাড় পেয়েছে ভিডিওকন। কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, সেই ছাড়ের সময়সীমা পেরনোর পরেই উৎপাদন কমতে শুরু করে। এই ১১ একরে ইতিমধ্যেই হোটেল, তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক, শপিং মল গড়ার কাজ শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক হোটেল সংস্থা হিলটন-এর বাজেট ব্র্যান্ড এখানে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। |