হাওড়ার বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে চালু হল সিজারিয়ান বিভাগ। বৃহস্পতিবার থেকে এই বিভাগটি চালু করা হয়। এ দিন এই হাসপাতালে বর্ণালী বাগ নামে এক প্রসূতির সিজারিয়ান করে প্রসব করানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত সপ্তাহে এক দিন করে সিজারিয়ান করানো হবে। পরবর্তীকালে পরিস্থিতি এবং চাহিদা বুঝে দিনের সংখ্যা বাড়ানো হবে।
জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পে প্রতিটি গ্রামীণ হাসপাতালেই সিজারিয়ান বিভাগ খোলার কথা। এর আগে ডোমজুড় গ্রামীণ হাসপাতাল এবং জগৎবল্লভপুর গ্রামীণ হাসপাতালে এই বিভাগ খোলা হয়েছে। এ ছাড়া জয়পুরের অমরাগড়ি বি বি ধর গ্রামীণ হাসপাতালে সিজারিয়ান করে প্রসব করানো হচ্ছে। তবে বি বি ধর হাসপাতালের সিজারিয়ান বিভাগটি জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পের অন্তর্গত নয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেদের উদ্যোগেই বিভাগটি খুলেছেন।
বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে বছরে গড়ে ১৫০০ করে প্রসূতি আসেন। তাঁদের মধ্যে বিপজ্জনক অবস্থায় থাকেন ১৩ শতাংশের মতো প্রসূতি। বিপজ্জনক অবস্থায় থাকা প্রসূতিদের মধ্যে ৬ শতাংশের সিজারিয়ান করাতে হয়। এই রকম প্রসূতিদের পাঠানো হয় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে। |
সিজারিয়ান হওয়া প্রথম সদ্যোজাত। —নিজস্ব চিত্র। |
অনেক প্রসূতিকে আবার তাঁদের পরিবারের লোকজন নিজের খরচে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা নার্সিংহোমগুলিতে ভর্তি করান। সেই হিসাবে বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে সিজারিয়ান বিভাগের প্রয়োজনীয়তা অনেক দিন ধরেই ছিল। সিজারিয়ান বিভাগ চালু হওয়ার ফলে প্রসূতিদের সমস্যা অনেকটা কাটবে বলে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের দাবি।
এত দিন ধরে বিভাগটি চালু করা হয়নি কেন?
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, হাসপাতালের তরফ থেকে গত দু’বছর ধরে সিজারিয়ান বিভাগ চালু করার জন্য তদবির করা হচ্ছিল। হাসপাতালে ব্লাড ব্যাঙ্কের লাইসেন্স দেওয়া হয়। তৈরি হয় অপারেশন থিয়েটার। কিন্তু প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, অ্যানেস্থেটিস্ট এবং স্বাস্থ্যকর্মীর অভাবে বিভাগটি চালু করা যায়নি। চিকিৎসক এবং অ্যানেস্থেটিস্ট নিয়োগ করার পরে সিজারিয়ান বিভাগ চালু করার ক্ষেত্রে আর কোনও সমস্যা হয়নি।
এই বিভাগটি সামলানোর জন্য হাসপাতালের সুপার, দু’জন মহিলা এবং প্রসূতি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তথা সার্জেন, একজন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং অ্যানেস্থেটিস্টকে নিয়ে বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। হাসপাতালের সুপার তথা বাগনান ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ইন্দ্রনীল মিত্র বলেন, “অপারেশন থিয়েটার সাজানোর জন্য স্বাস্থ্যভবন থেকে প্রয়োজনীয় টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও স্বাস্থ্য পরিষেবায় উল্লেখযোগ্য সাফল্যের জন্য আমরা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে দেড় লক্ষ টাকা নগদ পুরস্কার পেয়েছি। এই টাকাও অপারেশন থিয়েটারের উন্নতিতে ব্যবহার করা হয়েছে।” এ দিনের সিজারিয়ানের পরে মা এবং সদ্যোজাত সুস্থ আছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, জেলার আরও কয়েকটি গ্রামীণ হাসপাতালে সিজারিয়ান বিভাগ চালু করা হবে। |