এ বছরটাই হয়তো জকোভিচের
জয় হে
জকোভিচ শ্যাম্পেনে ভেজা। আজারেঙ্কা নাচের ছন্দে।
তো এই অবধি পড়ে সবার হয়তো মনে হবে, আমি দুই পরাজিত ফাইনালিস্টের হয়ে সাফাই দিচ্ছি। ভুল। আমি ঠিক উল্টোটাই বলব। দু’জনের হারেই ওদের এই চোট-টোট অজুহাত হতে পারে না। আজারেঙ্কা আর জকোভিচকারও থেকেই এক বিন্দুও জয়ের কৃতিত্ব কেড়ে নেওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। লি বা মারে কারও চোট না লাগলেও রড লেভার কোর্টে দু’টো ফাইনাল আজারেঙ্কা আর জকোভিচই জিতত। ফাইনালে দু’জনই প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে নিজের খেলাকে অন্য লেভেলে তুলে নিয়ে গিয়েছে।
বরং মারের ক্ষেত্রে আমার মনে হয়েছে, ওর বাঁ পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ে ফাইনালে একটু টান লেগে থাকলেও লাগতে পারে। দ্বিতীয় সেটটা ম্য্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। টাইব্রেকারের আগে পর্যন্ত ওই সেটে জকোভিচকে সামান্য আড়ষ্ট দেখাচ্ছিল। কিন্তু এক বার ১-১ করে ফেলতেই জকোভিচ স্বমূর্তিতে ফেরে। অনবদ্য সার্ভ। তৃতীয় সেটে মারেকে ম্যাচে প্রথম ব্রেকও করে। চতুর্থ সেটে তো দু’বার ব্রেক। মারের সুযোগ ছিল টেনিস ইতিহাসের প্রথম প্লেয়ার হিসেবে জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার পরপরই দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। কিন্তু মাস চারেক আগে যে মারে যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ফাইনালে পাঁচ সেটে জকোভিচকে হারিয়েছিল, তাঁকে এ দিন পুরোপুরি দেখতে পেলাম না। বরং অনেকটা সেই আগের ভয়ে-ভয়ে থাকা স্কটিশ যুবক। আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে ফেডেরারের সঙ্গে পাঁচ সেট খেলার ধকলে যে হয়তো ক্লান্ত ছিল!
• ৬ বছরে ৬ গ্র্যান্ড স্ল্যাম: (অস্ট্রেলীয় ওপেন ২০০৮, ’১১,’১২, ’১৩)
উইম্বলডন (২০১১), যুক্তরাষ্ট্র ওপেন (’১১)
• গ্র্যান্ড স্ল্যামের ওপেন যুগে (১৯৬৮-পরবর্তী) প্রথম প্লেয়ার হিসেবে অস্ট্রেলীয়
ওপেন খেতাব জয়ের হ্যাটট্রিক করার গৌরব (২০১১-’১৩)
• বিশ্বের এক নম্বর: (সব মিলিয়ে ৬৫ সপ্তাহ)
জোকারের ঝুলি

বরিস বেকার: ফাইনালে দু’জনের মধ্যে যে বেশি ভাল প্লেয়ার, সে-ই জিতেছে। দ্বিতীয় সেট জেতার পর জকোভিচ নিজের খেলা অন্য লেভেলে তুলে নিয়ে গিয়েছে। সত্যিকারের আক্রমণাত্মক ছিল। তুলনায় বেশি ঝুঁকি নিয়েছে, বেশি ভাল ফলও পেয়েছে।
জন ম্যাকেনরো: জকোভিচের একটা বাড়তি গিয়ার আছে। ফাইনালের শেষে দেখে মনে হচ্ছিল, আরও পাঁচ ঘণ্টা এ রকমই খেলে দিতে পারে। মারের পায়ে ব্যথা ছিল। যদিও সেটা ওর হারের অজুহাত হতে পারে না। জকোভিচ সত্যিই অসাধারণ খেলেছে।
ফেডেরার আর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে পারবে বলে মনে হয় না। নাদাল হাঁটুর চোট সারিয়ে ফিরেও মনে হয় না, আগের সেই অবিশ্বাস্য পাওয়ার গেম খেলতে পারবে। মারেও দেখাল, মেলবোর্নের মনোরম সন্ধেতেও ও পরপর দু’টো মেগাম্যাচ জিতবে যে, তার কোনও গ্যারান্টি নেই। তা হলে? বিশ্ব টেনিসে জকোভিচ-রাজই এখন, অন্তত এ বছরটা চলবে বলে আমার ধারণা।
নাদালের মতোই পাওয়ার গেম কিন্তু নাদালের মতো জকোভিচ পুরোপুরি শরীর নিংড়ে খেলে না। ফলে, যখন-তখন বড় ধরনের চোটের ভয় নেই জকোভিচের। নাদাল ভীষণ পেশিবহুল। প্রায় সারাক্ষণ বেসলাইনের পাঁচ-ছয় ‘স্টেপ’ পিছনে দাঁড়িয়ে বড়বড় টপস্পিনে খেলে চলে। সেখানে জকোভিচের অনেকটা ফেডেরারের মতো শরীর। ছিপছিপে অথচ দারুণ শক্তিশালী। গ্রাউন্ডস্ট্রোক দুর্ধর্ষ। অনবদ্য ব্যাকহ্যান্ড। মানসিক ভাবে প্রচণ্ড শক্তিশালী। ক্ষুধার্ত এবং কোর্টে মজা করার আড়ালে এই জোকার কিন্তু সময়-সময় প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রতি নির্মমও। বয়স সবে পঁচিশ। এই ছেলেকে এখন রোখা ভীষণই কঠিন। প্রায় অসম্ভব।
ছবি: রয়টার্স
চ্যাম্পিয়ন যখন দর্শক
অস্ট্রেলীয় ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চব্বিশ ঘণ্টা পরে অন্য ভূমিকায় ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা। মেলবোর্ন পার্কে রবিবার তিনি নিছকই দর্শক। এবং গ্যালারিতে তাঁর সঙ্গী তাঁর বয়ফ্রেন্ড, বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় ডিজে এবং গায়ক রেডফু। অস্ট্রেলীয় ওপেনে পুরুষদের সিঙ্গলস ফাইনালে অ্যান্ডি মারে বনাম নোভাক জকোভিচ লড়াই চুটিয়ে দেখলেন দু’জনে। শনিবার রড লেভার এরিনায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে আজারেঙ্কাকে কোর্ট থেকেই জড়িয়ে ধরে লকাররুমে নিয়ে যান তাঁর বয়ফ্রেন্ড। দর্শকদের টিটকিরির মধ্যেই। এ দিন আজারেঙ্কাকে প্রশ্ন করা হয়, বাকি তিনটে গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যে কোনটা জিততে চান তিনি? উত্তর আসে, “সব ক’টাই জিততে চাই! আমি নামি জেতার জন্য।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.