বহুতল ভবন তৈরি করতে মাটিগাড়ার হিমাঞ্চল বিহার উপনগরী লাগোয়া একটি ঝোরা বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠল একটি প্রোমোটার সংস্থার বিরুদ্ধে। রবিবার মাটিগাড়ার হিমাঞ্চল বিহার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে ওই অভিযোগ করা হয়েছে। পশুপ্রেমী সংগঠন ন্যাফ এবং অ্যানিম্যাল লিঙ্কের সদস্যরা জানান, জানিয়েছেন, হিমাঞ্চল বিহার এবং উত্তরায়ণ উপনগরীর মাঝে ঝোরাটি রয়েছে। সম্প্রতি উপনগরী কর্তৃপক্ষ ঝোরা লাগোয়া বিরাট এলাকার জমি একটি নির্মাণ সংস্থার হাতে তুলে দেন। ওই সংস্থার তরফে বহুতল তৈরির কাজ শুরু করেছেন অনিল অগ্রবাল। এর আগেও শহরের শেঠ শ্রীলাল মার্কেটে অবৈধ নির্মাণ, সেবক রোডে বহুতল বাণিজ্যিক ভবনে ‘গ্যাংওয়ে’ লাগানোর অভিযোগ আছে অনিলবাবুর সংস্থার নামে।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রোমোটার সংস্থার কর্ণধার অনিলবাবু। তিনি বলেন, “উত্তরায়ণ কর্তৃপক্ষ আমাকে যতটুকু জমি দিয়েছেন তাতেই ভবন তৈরি করা হচ্ছে। সীমানা প্রাচীরের মধ্যেই মাটি ফেলা হয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে ঝোরা বুজিয়ে দেওয়ার ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে। ওই ধরনের কোনও কাজই করা হচ্ছে না।” হিমাঞ্চল বিহারের আবাসিকেরা চাইলে তারা বরং ঝোরাটির সংস্কার করে দিতে পারেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
ঝোরা বুঝিয়ে নির্মাণ কাজের অভিযোগ পেয়ে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তরফেও ওই এলাকা পরিদর্শন করা হয়। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তাঁরা চিন্তিত। এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “ঝোরাটি বুজিয়ে দিতে চেষ্টা করছে কোনও নির্মাণ সংস্থা। পুলিশকে জানানো হয়েছে।” হিমাঞ্চল বিহার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সন্তোষ অধিকারী জানান, ওই এলাকায় ১০ তলা ভবন তৈরি করা হচ্ছে। প্রথমে ঝোরা লাগোয়া সীমানা প্রাচীর ভেঙে দেওয়া হয়। এর পর মাটি ফেলে ঝোরাটি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। ভবনের নির্মাণের শ্রমিকেরা ঝোরাটিকে শৌচাগার হিসাবে ব্যবহার করেছেন। অথচ ঝোরাটি চামটা নদীতে গিয়ে পড়েছে। ঝোরা ঘিরে থাকা গাছগুলিতে প্রচুর পাখি আসে। তাই সংরক্ষিত পক্ষিনিবাস তৈরির পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। অথচ বহুতল নির্মাণকারী সংস্থা এলাকার পরিবেশ নষ্ট করে দিতে চাইছে। স্থানীয় প্রশাসন, শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হলে এখনও কেউ সদর্থক ব্যবস্থা নেয়নি। আবাসিকদের সংগঠনের সদস্য রীতা দত্ত জানান, আমরা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বুঝতে পারছি না। এ দিকে, মাটিগাড়ায় মহানন্দা ব্যারেজ এলাকায় পক্ষিনিবাস গড়ার দাবি তুলল নর্থ ইস্টার্ন ওয়াইল্ড উইংস সোসাইটি। রবিবার সংগঠনের সভাপতি অভিযান সাহা জানিয়েছেন, এলাকাটি শিলিগুড়ির খুবই কাছে। শুধু শীতের মরসুমে নয়, বছরের অন্য সময়ে পাখিরা ভিড় করে থাকে এই জলাভূমিতে। কিন্তু নদীর জল দূষণ, শব্দ দূষণের জন্য এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এর জন্য বন দফতর, সেচ দফতর এবং প্রশাসন-সহ বিভিন্ন মহলে বিষয়টি জানানো হচ্ছে। |