|
|
|
|
বাবা জ্ঞান দিয়ো না |
আমি ভুল করেও ঠিক
প্রথমে ‘রক-অন’। তার পর ‘কাই পো ছে’। বলিউডের জন্য কলম ধরেছেন
কলকাতার পুবালি চৌধুরী। তাঁর মুখোমুখি প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত |
শুধু একটা ভুল।
সেট-এ ঢুকতে দেরি হয়ে গিয়েছিল। এটাই একজনের কেরিয়ার তৈরি করে দিল বলিউডে।
তিনি পুবালি চৌধুরী। বয়স ৩৭। ‘রক-অন’ আর ‘কাই পো ছে’-র সহলেখিকা। ইতিমধ্যেই পেয়েছেন অতি সম্মাননীয় ‘চার্লস ওয়ালেশ ফেলোশিপ’। আর দু’মাসের মধ্যেই উড়ে যাবেন ইউ কে-তে। আশা, সেখানে গিয়ে এক নর্তকীর জীবন নিয়ে চিত্রনাট্য লিখবেন। যার ভিত্তিতে হয়তো সিনেমাও হবে একদিন।
কী ভাবে শুরু হল জিজ্ঞেস করাতে বললেন, “পোর্টালের হয়ে কনটেন্ট রাইটিং করতে করতে বোরড্ হয়ে গিয়েছিলাম।” ছেড়ে দিয়ে অ্যাডভার্টাইজিং ফিল্মস-এর কাজে ঢুকে পড়েন তিনি। ওখানে খুঁটিনাটি শেখা। কাজটা এনজয়ও করেন। কিন্তু ওই একদিন সেটে দেরি করে আসার পরে অ্যাড-এর দুনিয়া থেকে ছুটি। |
পুবালি চৌধুরী |
পুবালি অবশ্য মনে করেন, এই অভিশাপটাই আশীর্বাদ হয়ে উঠেছিল তাঁর জীবনে। চলে যান এফটিআইআইতে পড়তে। তার পর মুম্বই। চোখে চিত্রনাট্যকার হওয়ার স্বপ্ন। ‘রক-অন’-এ দেখানো ব্যান্ডের পরিবেশটার সঙ্গে পুবালি ভালমতোই পরিচিত ছিলেন। “গাট্টু (পরিচালক অভিষেক কপূর) যখন আমাকে বলল রক ব্যান্ড নিয়ে একটা সিনেমা বানাতে চায়, আমি তো তখন জানতামই যে ওই ক্ষেত্রটার অনেকটাই আমার জানা।” কলকাতায় থাকতে ‘ক্যাকটাস’-এর সঙ্গে খুব যোগাযোগ ছিল। “ক্যাকটাসের পুরনো এক সদস্য পিঙ্কি মজা করে বলেছিল যে ওর জীবনটাকেই না কি সিনেমার পর্দায় দেখিয়েছি আমি। কিন্তু এটা বলে ও একটু বেশিই ক্রেডিট নিতে চেয়েছে! সে রকম কোনও অনুপ্রেরণার কথা যদি বলতেই হয়, তা হলে তো শুভায়নকেই দিতে হয় ক্রেডিটটা। অর্জুন রামপালের চরিত্রটা একজন আদর্শবাদীর। শুভায়ন মোটেই সে রকম ছিল না। তবে ফিল্মে অর্জুনের চরিত্রের মতোই ব্যান্ডের একজন সদস্য হওয়া সত্ত্বেও শুভায়ন খুব তাড়াতাড়ি কাজ করতে শুরু করেছিল।”
‘রক-অন’-এর সিকোয়েলের চিত্রনাট্যও লেখা শেষ। “প্রথমে লিখতে চাইনি। পরে দেখলাম পুরনো আর নতুন চরিত্র দিয়ে বেশ ভাল একটা গল্প তৈরি করা গেছে। লেখার পরেই ফারহানকে (আখতার) বললাম যদি ছবিটা ১৫ অগস্টে রিলিজ করা যায়। ফারহান হেসে বলে: ‘এত তাড়াতাড়ি তো ছবি রিলিজ করা যাবে না। তা হলে চিত্রনাট্যটাই স্বাধীনতা দিবসে রিলিজ করে দিই আমরা।” |
|
‘কাই পো ছে’-র সিনেমা হয়ে ওঠার গল্পটাও দারুণ মজার। “যাদবপুর ইউনিভার্সিটির তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের ছাত্রী আমি। হিন্দি ছবির চিত্রনাট্য লিখি ইংরেজিতে। তার পর সংলাপ লেখক হিন্দি লাইনগুলো লেখেন। লেখক চেতন ভগত আর আমার দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। তবে চেতন স্ক্রিপ্টের খাতিরে ওঁর গল্পটা পাল্টালে কিছু মনে করেন না। তবে আর ‘মুচ্ছার’ বন্ডিং নিয়ে ছবি লিখব না। পরবর্তী দশ বছর বন্ধুদের নিয়ে লিখতে চাই না।”
এর মধ্যে কাজ করেছেন মুকুল দেওরা আর মহেশ মাথাই-এর ছবির স্ক্রিপ্টে। চান টলিউডে একটা অ্যাডপটেশনের কাজ করতে। বা নিজের গল্প নিয়ে বাংলাতে স্ক্রিপ্ট লিখতে। আর আছে শ্রীরাম রাঘবনের সঙ্গে কাজ করার শখ।
এত কাজ করেও মুম্বইতে এখনও শুনতে হয় যে তাঁর লেখার ধরনটা নাকি বেশি আঁতেল। “আমি বিশ্বাস করি না যে, বুদ্ধিদীপ্ত লেখা হলে দর্শক সেটা দেখবে না। মুখেই বলা হয় যে, স্ক্রিপ্টই রাজা। ছবির ক্রেডিট লাইনে সব থেকে ছোট হরফে চিত্রনাট্যকারের নাম থাকে। অন্য কেউ স্ক্রিপ্ট রাইটারের সঙ্গে কৃতিত্ব ভাগ করে নেওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এটা কিন্তু সম্পাদক বা সিনেমাটোগ্রাফারদের ক্ষেত্রে হয় না।”
শীঘ্রই ইংল্যান্ড যাচ্ছেন। “বলিউডে বোধ হয় আমিই প্রথম চিত্রনাট্যকার যে এই ফেলোশিপটা পেয়েছি।” আর বিয়ে? “পাত্র পেলেই করব।” তার পর মুচকি হেসে বলেন, “আমি ধুমধাম করে বিয়ে করার বিপক্ষে ছিলাম। তবে সাইত্রিশ বছরেও যখন বিয়ে করে উঠতে পারিনি, এ বার যদি ছাঁদনাতলায় যাই, তা হলে একেবারে লাল বেনারসি পরে হাজার লোক খাইয়ে করব!” |
|
|
|
|
|