নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
নির্দিষ্ট দিনে রোগীর অস্ত্রোপচার না-হওয়ায় হাসপাতাল সুপারের দফতরে বিক্ষোভ দেখালেন আত্মীয়-পরিজনরা। শুক্রবার দুপুরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, হাসপাতালে রোগীকে ভর্তি নেওয়ার সময় দেরি করা হয়েছিল। এ বার অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রেও দেরি হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, টেবিল সংখ্যা কম থাকার ফলেই এই পরিস্থিতি। টেবিল সংখ্যা বাড়ানোর সব রকম চেষ্টা চলছে।
চলতি মাসের ১৫ তারিখ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন মঞ্জু ওঝা নামে এক মহিলা। তাঁর থাইরয়েডের সমস্যা। অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন রয়েছে। বাড়ি মোহনপুরের আমড়দায়। পরিজনরা জানিয়েছেন, শুরুতে ঠিক ছিল, গত বছরের ১০ অক্টোবর মঞ্জুদেবীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। তবে ওই দিন হাসপাতালে শয্যা খালি না থাকায় তাঁকে ভর্তি করা সম্ভব হয়নি। পরে ঠিক হয়, ডিসেম্বরের ১৯ তারিখ ভর্তি করা হবে। ওই দিনও ভর্তি করা সম্ভব হয়নি। শেষমেশ চলতি মাসের ১৫ তারিখ মঞ্জুদেবীকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোগীর পরিজনদের জানানো হয়, ২৫ জানুয়ারি অস্ত্রোপচার হবে। সেই মতো শুক্রবার সকাল ন’টা নাগাদ তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অস্ত্রোপচার না-করেই ফের দুপুর দেড়টা নাগাদ ওটি থেকে বের করে ওয়ার্ডে আনা হয়। এরপরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে সুপারের দফতরে বিক্ষোভ দেখান রোগীর আত্মীয়-পরিজনরা।
পরিজনদের মধ্যে ছিলেন দীপক পাত্র, সমীর মান্না, সিদ্ধার্থ ঘাঁটা প্রমুখ। সমীরবাবুর কথায়, “শয্যা নেই, এই অজুহাতে ভর্তির সময়ও দেরি করা হয়েছিল।” দীপকবাবু বলেন, “সরকারি হাসপাতাল থেকে এ ভাবে পরিষেবা মিললে রোগীরা যাবে কোথায়? ওটিতে নিয়ে গিয়েও রোগীর অস্ত্রোপচার করা হল না। বলা হল, কর্মী নেই। তাই আজ অস্ত্রোপচার হবে না। এই ভাবে চললে তো সমস্যা।”
হাসপাতালের ওটিতে সার্জারির একটিই টেবিল রয়েছে। কর্মীর সংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় কম। ফলে সমস্যা হচ্ছে বলে মানছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। মেদিনীপুর মেডিক্যালের সার্জারি বিভাগের প্রধান সুকুমার মাইতির বক্তব্য, “ওটিতে টেবিল সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।” অন্য এক আধিকারিকের কথায়, “অন্তত একটি টেবিল বাড়লেও সমস্যার কিছুটা সুরাহা হবে। উধ্বর্র্তন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।”
আগামী মঙ্গলবার মঞ্জুদেবীর অস্ত্রোপচার হতে পারে বলে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। রোগীর পরিজনদেরও এমনটা জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। দীপকবাবু বলেন, “কর্তৃপক্ষের উচিত, যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা। অন্তত, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মতো জায়গায় এই পরিষেবা আশা করা যায় না।” |