চাই থানা ভাগ, নইলে বারাসত থাকবে
বারাসতেই, বলছে পুলিশ
বারবার বারাসত। পরপর অপরাধের ঘটনা (যার মধ্যে ২০১১-য় রাজীব দাস হত্যাকাণ্ডও রয়েছে) ঘটছে। আর আঙুল উঠছে পুলিশের দিকে। কিন্তু বারাসত থানার বক্তব্য, পরিকাঠামোর দিক থেকে তারা প্রকৃতপক্ষে ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’। বারাসত থানাকে একাধিক ভাগে ভাঙার প্রশাসনিক প্রস্তাব কার্যকরী না হলে, এই পরিস্থিতি বদলাবে কি না, নিশ্চিত নয় পুলিশেরই একাংশ।
২০১২ সালে বারাসত থানায় অভিযোগ জমা পড়েছে ছ’হাজারের বেশি। মামলা হয়েছে ২,৮০৮টি। থানা এলাকায় প্রায় ১৫ লক্ষ বাসিন্দা রয়েছেন। তবে থানার মোট পুলিশকর্মী ১২৮ (আউটপোস্ট, ক্যাম্প বাদ দিলে বারাসত থানায় ৬০ জন)। অফিসার ১৮ জন। অর্থাৎ, প্রায় ১২ হাজার বাসিন্দাপিছু থানায় পুলিশকর্মী এক জন।
প্রতিদিন একশোরও বেশি সাধারণ অভিযোগ (জেনারেল ডায়েরি) জমা পড়ে বারাসত থানায়। তার মধ্যে চুরি-ডাকাতি, রাজনৈতিক সংঘর্ষসবই রয়েছে। বারাসতেই রয়েছে জেলাশাসক, পুলিশ সুপারের অফিস, জেলা পরিষদ, বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা হাসপাতাল, আদালত, স্টেডিয়াম থেকে শুরু করে সমস্ত সরকারি বিভাগের জেলা সদর দফতর।
প্রতিদিন সেই সব দফতরে ঘেরাও, বিক্ষোভ বা স্মারকলিপির মতো ঘটনা লেগেই থাকে, যেখানে ব্যস্ত থাকে পুলিশ। তা ছাড়া, প্রতিদিন মন্ত্রী ও ভিআইপি-দের যাতায়াত, ৩৪ ও ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনার ঝামেলা এবং থানার রুটিন কাজকর্মও রয়েছে। পুলিশের একাংশের তা-ই প্রশ্ন, এ সব সামাল দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে কখন নজর দেবেন গুটিকয়েক পুলিশকর্মী?
২৮৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই থানার মধ্যে আছে পাঁচটি বিধানসভা এলাকা। যেখানে রয়েছে বারাসত ও মধ্যমগ্রাম পুরসভা ছাড়াও ২০টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ২০০টি গ্রাম। রয়েছে শাসন, খড়িবাড়ি, দেগঙ্গার মতো নিত্য গণ্ডগোলের জায়গা। রয়েছে মধ্যমগ্রাম, দত্তপুকুর, নীলগঞ্জ, আমডাঙা (একাংশ)-র মতো জনবহুল গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। চারটি টাউন আউটপোস্ট এবং তিনটি পুলিশ ক্যাম্পের মাধ্যমে এই বিস্তীর্ণ এলাকা সামাল দিতে গিয়ে হিমসিম অবস্থা বারাসত থানার। চুরি-ডাকাতির খবর পেলে এলাকায় পুলিশ পৌঁছচ্ছে।
কিন্তু চুরি-ডাকাতি রুখতে আগাম সতর্কতা নেওয়ার পরিস্থিতি থাকছে না বলে দাবি তাদের। রাজীব হত্যাকাণ্ডের পরে বেশ কিছু এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছিল। কিন্তু অন্যত্র পুলিশ প্রয়োজন হওয়ায় কিছু দিনের মধ্যেই সে পিকেট উধাও হয়ে যায়।
আয়তনের অনুপাতে পুলিশকর্মীর অভাবজনিত সমস্যায় এক সময় ভুগত হাবরা, রাজারহাটও। কিন্তু হাবরা থানাকে ভেঙে অশোকনগর এবং রাজারহাট থানাকে ভেঙে বাগুইআটি ও নিউটাউন থানা করে দেওয়ার পরে সে সমস্যা মিটে গিয়েছে।
২০০১ সালে বারাসত থানাকে ভেঙে মধ্যমগ্রাম ও দত্তপুকুরকে আলাদা দু’টি থানা করে দেওয়ার প্রস্তাব নেওয়া হয়। পরবর্তী কালে নিয়মিত সংঘর্ষ, খুনখারাপি লেগে থাকায় শাসনের আমিনপুর ফাঁড়িকেও থানা করার প্রস্তাব রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরে পাঠান তদানীন্তন পুলিশ সুপার রাহুল শ্রীবাস্তব। কিন্তু তার পরে এক যুগ কাটলেও, প্রস্তাব রয়ে গিয়েছে প্রস্তাব আকারেই। বর্তমান পুলিশ সুপার সুগত সেনের কথায়, “বারাসত থানার উপরে প্রচুর চাপ রয়েছে। থানা ভাগের প্রস্তাবও দেওয়াই রয়েছে। দেখা যাক, কী হয়!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.