|
|
|
|
যুবক খুনের ঘটনায় কাছাড়ে উত্তেজনা
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলচর |
মাছ ব্যবসায়ী এক যুবক খুনের ঘটনায় ক’দিন থেকে উত্তেজনায় টানটান কাছাড় জেলার গুটিবাড়ি এলাকা। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে গ্রেফতারের দাবিতে এলাকায় মিছিল-মিটিং চলছে। পুলিশের দাবি, প্রাথমিক তদন্তে যাদের দোষী বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের সবাইকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঘটনা ১৩ জানুয়ারির, মকর সংক্রান্তির আগের রাতের। চার দিকে যুবকরা যখন পিকনিক করছে, সে সময় মাছ ব্যবসায়ী সুনীল দাসকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যায় এলাকারই এক যুবক। পরদিন ভোরে বাড়ির কাছেই ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। প্রথমে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। ১৭ জানুয়ারি মারা যায় সুনীল।
পুলিশ সুপার দিগন্ত বরা জানিয়েছেন, তদন্তে নেমে তাঁরা দ্বিজ দাস ও বাদল দাস নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছেন। পরে নরেশ দাস নামে আরও একজন আত্মসমর্পণ করে। সুনীল-সহ চারজনই সে রাতে মদ্যপানের আসরে হাজির ছিল। খুন করার কথা বাদল স্বীকার করেছে। কেন কী ভাবে খুন করেছে, তাও জানিয়েছে তদন্তকারী অফিসারকে। তাই এ সময়ে আর কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন পড়ে না। দিগন্তবাবু জানান, বছর দেড়েক আগে বাদলের দাদা সুধাংশুকে নিয়ে বাইকে বেরিয়েছিল বছর পঁচিশের সুনীল। পথে গরুর সঙ্গে ধাক্কা লাগায় দুজনেই ছিটকে পড়ে রাস্তায়। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় সুধাংশু। সুনীলকে বেশ কিছু দিন চিকিৎসাধীন থাকতে হয়। ১৩ জানুয়ারি মদের আসরে ছোটখাটো বিষয়ে সুনীল-বাদলের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। ক্রমে তা বড় আকার নেয়। সুনীল ভোজালি হাতে বাদলের দিকে তেড়ে যায়। মদের নেশায় বলে, ‘‘তোর ভাইকে আগে মেরেছি, আজ তোকে মারব।” বাদল তখন ওই ভোজালি কেড়ে নিয়ে একের পর এক কোপ বসায় সুনীলের বুকে-পিঠে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, যে ভাবে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে সুনীলকে তা বাদলের একার পক্ষে সম্ভব নয়। পূর্বপরিকল্পিত ভাবেই তাকে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনায় আরও অনেকের ইন্ধন রয়েছে বলে তাঁদের সন্দেহ। দাবি উঠেছে, গ্রেফতার করতে হবে তাদেরও। এ দিকে সুনীলের মৃত্যুর পর থেকেই শয্যাশায়ী তার বাবা-মা এবং নববধূ। বাবা শ্যামাচরণ দাসকে বৃহস্পতিবার থেকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। মা পুরো বাকরুদ্ধ। স্ত্রী কাঁদতে কাঁদতে প্রায়ই মূর্ছা যাচ্ছেন। তাদের অবস্থা দেখে প্রতিবেশী ও ঘনিষ্ঠদের মধ্যে উত্তেজনার পারদ বেড়ে চলেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অরাজনৈতিক সংগঠন তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। পুলিশ সুপার অবশ্য স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, আইন আইনের পথেই চলবে। স্রেফ এলাকাবাসীর আন্দোলনের হুমকিতে যাকে-তাকে গ্রেফতার করা যায় না। |
|
|
|
|
|