দলীয় প্রধান এবং তিন পঞ্চায়েত কর্মীর বিরুদ্ধে সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তৃণমূলের উপপ্রধান। তুফানগঞ্জের নাটাবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুজিত চাকির আবেদনের ভিত্তিতে আদালতের নির্দেশে পুলিশ মামলাও রুজু করেছে। আদালত সূত্রের খবর, তবে ঘটনার একমাস পরেও অভিযুক্তরা হননি। রাজনৈতিক মহলের একাংশ ঘটনাটি প্রধান ও উপপ্রধান শিবিরের গোষ্ঠী কোন্দলের জের বলে মনে করছেন।
পুলিশ ও আদালত সূত্রের খবর, গত বছর নাটাবাড়ির গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুজিতবাবু প্রায় ৫ লক্ষ টাকার আত্মসাতের অভিযোগ প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে জানান। গত ৩ অক্টোবর তুফানগঞ্জ থানাতেও তিনি অভিযোগ করেন। পুলিশ সুপারকে অভিযোগ করেন। কোনও ব্যবস্থা না হওয়ায় তিনি গত ১২ নভেম্বর তুফানগঞ্জ মহকুমা আদালতে মামলা করেন। গত ১৭ ডিসেম্বর পুলিশ আদালতের নির্দেশ মেনে প্রধান ও অন্য তিন পঞ্চায়েত কর্মীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, সরকারি টাকা আত্মসাৎ-সহ চারটি মামলা করে। উপপ্রধান সুজিতবাবু আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা স্বীকার করলেও আর কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “প্রধান পছন্দের লোকদের নিয়ে আর্থিক নয়ছয় জড়িয়ে পড়েছে। দল এবং প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়ে লাভ না হওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।”
সুজিতবাবুর আইনজীবী বিভাস সেন ইশোর বলেন, “অডিট রিপোর্ট ও গ্রাম পঞ্চায়েতের সংসদ সভার রিপোর্টেই প্রায় ৫ লক্ষ টাকার আত্মসাতের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। আদালতের নির্দেশে পুলিশ মামলা রুজু করলেও তদন্তের ব্যাপারে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা কাটেনি।” পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান আদুরি রায় অবশ্য বলেন, “উপপ্রধান গোষ্ঠী রাজনীতি করতে গিয়ে আমাকে হেয় করার চেষ্টা করতে চাইছেন। লেখালেখির ক্ষেত্রে কিছু ত্রুটি আছে।”
দলের তুফানগঞ্জ-১ ব্লক সভাপতি ফজল করিম মিঁয়া বলেন, “উপপ্রধান ও প্রধানের ভুল বোঝাবুঝির জেরে ঘটনাটি ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মেটানোর উদ্যোগ নিচ্ছি।” তবে বিষয়টির কিছুই জানেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা এলাকার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার অনুপ জওসয়াল এবং জেলাশাসক মোহন গাঁধী। তুফানগঞ্জ-১-এর বিডিও তাপস সিংহরায় এ দিন বলেন, “উপপ্রধানের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা তদন্ত করে রিপোর্ট উর্ধ্বতন কর্তাদের পাঠিয়েছি।” দলীয় সূত্রের খবর, নাটাবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান দুই শিবিরই জেলা সভাপতির অনুগামী বলে পরিচিত। এলাকার কর্তৃত্ব নিয়ে দুই শিবিরের কোন্দল নতুন নয়। এর আগেও গ্রাম পঞ্চায়েতে তালা মারার ঘটনাও ঘটেছে। |