শ্লীলতাহানি, অভিযুক্ত চিকিৎসক
‘ভিজিটিং আওয়ার’-এর পরও ওয়ার্ডে থাকাকে কেন্দ্র করে রোগীর আত্মীয় এক তরুণীর সঙ্গে অভব্য আচরণ এবং গায়ে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল হাসপাতালের কর্তব্যরত এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের ঘটনা।
হাসপাতালে এক সময় সেবিকার কাজ করতেন। বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত ওই তরণীর মার সঙ্গে ওই চিকিৎসক কৃষ্ণেন্দু দে অভব্য আচরণ করেন বলে অভিযোগ। ঘটনাচক্রে, কৃষ্ণেন্দুবাবু তৃণমূল প্রভাবিত প্রোগ্রেসিভ ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সহযোগী কোষাধ্যক্ষ ও বর্তমানে সদস্য। খবর পেয়েই হাসপাতালে যায় পুলিশ। যান রাজ্যের স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। রোগীর পরিস্থিতি খোঁজ নিয়ে তাঁর মেয়ে এবং স্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেন। পুলিশ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আলাদা করে অভিযোগ দায়ের করেন ওই তরুণী এবং তাঁর মা। তদন্ত কমিটি গড়ে ৭ দিনের মধ্যে ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন রুদ্রবাবু। অভিযুক্ত চিকিৎসক কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, “এ দিন নার্স, ওয়ার্ডে দরজায় থাকা স্বাস্থ্যকর্মীরা নিষেধ করলেও ওই তরুণী শুনছিলেন না। নির্ধারিত সময় পরেও ওয়ার্ডে ঢুকতে জেরাজেরি করছিলেন। আমি সামনে দাঁড়িয়ে তাঁকে বাধা দিলে ঠেলে ঢুকতে যান তরুণী। সে সময় ধাক্কা লেগেছে। শ্লীলতাহানির মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।”
অভিযুক্ত চিকিৎসক।
পরে চিকিৎসকের পরিবারের তরফে অভিযোগ না জানানোর জন্য পীড়াপীড়ি করা হলে অভিযুক্তকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলা হয়। তবে চিকিৎসক তাতে রাজি হননি। কৃষ্ণেন্দুবাবুর দাবি, “রোগীর আত্মীয়রাই ভুল করেছেন। আমাকে বেরিয়ে যেতে বলেছেন ওঁরা। অথচ আমাকে দোষারোপ করা হচ্ছে। এমন হলে হাসপাতালের চাকরি থেকে ইস্তফা দেব। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ ব্যাপারে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির একটি মামলা রুজু হয়েছে। রোগীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন ছয়েক আগে হৃদরোগ-সহ একাধিক সংক্রমণে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তরুণীর বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালের অপর এক চিকিৎসকের অধীনে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি রয়েছেন শিলিগুড়ির পূর্ব চয়নপাড়ার বাসিন্দা ৭০ বছরের ওই ব্যক্তি। ‘ভিজিটিং আওয়ার’-এর পরও রোগীর পাশে যাতে প্রয়োজনে থাকা যায় সে জন্য হাসপাতালের সুপারকে অনুরোধ করে তাঁর অনুমতিও নিয়েছেন ওই তরুণী এবং তাঁর মা। তার পরেও ওই চিকিৎসক ওয়ার্ডে ওই তরুণী এবং তাঁর মাকে দেখলে নানা রকম কটূক্তি করতেন বলে অভিযোগ। এ দিন ১০ টা নাগাদ ওই চিকিৎসক রাউন্ডের এলে ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। সেই মতো তারা বেরিয়ে যান। চিকিৎসক চলে গেলে তারা ওয়ার্ডে রোগীর কাছে যান। অন্য ওয়ার্ডে রাউন্ড দিয়ে কৃষ্ণেন্দুবাবু তাদের ওয়ার্ডে দেখে তরুণীর মাকে গালিগালাজ করেন। তিনি বার হতে রাজি না হলে তরুণীকে গায়ে হাত দেন। মেয়েকে ধাক্কা দিয়ে চিকিৎসক বের করে দিচ্ছেন দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন রোগীও।
প্রয়োজনে রোগীর লোকদের ওয়ার্ড থেকে বাইরে যেতে বলার কাজ নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরাই করে থাকেন। চিকিৎসক তা না করে নিজেই করতে গেলেন কেন? তাঁর জবাব, বারবার বলেও কাজ হচ্ছে না দেখে তিনি বাধা দেন। রোগীর কাছে থাকতে পরিবারের লোকদের ওয়ার্ডে থাকার অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে অবশ্য সুপার সঞ্জীব মজুমদার সংবাদ মাধ্যমের কাছে কিছু বলতে চাননি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবীর ভৌমিক জানান, ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। তাঁরা রিপোর্ট দিলে সেই মতো ব্যবস্থা হবে। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে রোগী এবং তাঁর পরিবারের লোকদের সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ নতুন নয়। কৃষ্ণেন্দুবাবুর ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ আগে ওঠে। প্রত্যক্ষদর্শী ওই ওয়ার্ডের অন্যান্য রোগীরাও চিকিৎসকের ব্যবহার নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.