চাহিদা মেটাতে বর্ষাতি-পেঁয়াজের চাষ রাজ্যে
চাহিদা মেটাতে বরাবরই ভিন্ রাজ্য থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয় বাংলাকে। প্রতি বছরই বিশেষ বিশেষ সময়ে মহার্ঘ হয়ে ওঠে এই শস্যটি। তাই চাহিদা ও জোগানে ঘাটতির মোকাবিলায় এ বার বর্ষায় পেঁয়াজ চাষ করবে রাজ্য সরকার। গত বর্ষায় বাঁকুড়া জেলায় পরীক্ষামূলক ভাবে এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করে স্বাভাবিক উৎপাদন পাওয়া গিয়েছে। সেই ‘সাফল্যে’ উৎসাহিত হয়েই আগামী বর্ষায় অনেক বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষ করা হবে বলে জানান রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান দফতরের এক কর্তা।
রাজ্যে এখন যতটুকু পেঁয়াজ উৎপন্ন হয়, তাতে মাত্র তিন-চার মাসের চাহিদা মেটে। সেই কারণেই উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছে সরকার। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান দফতরের ওই কর্তা জানান, এ বার ৬০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করা হবে। উৎপাদন হবে প্রায় ১২ হাজার মেট্রিক টন। ৪-৫ বছরের মধ্যে রাজ্যে পেঁয়াজের ঘাটতি এক-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনাই সরকারের লক্ষ্য।
কিন্তু বর্ষায় পেঁয়াজ কেন?
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান দফতরের মন্ত্রী সুব্রত সাহা জানান, তাঁর দফতরের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বর্ষাতি-পেঁয়াজের বীজ তৈরি করেছেন। সেই বীজ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে সাফল্য পাওয়ার পরে গত বর্ষায় চাষিদের মধ্যে এই নতুন সময়ের ফসল নিয়ে প্রচার চালানো হয়। তারই ভিত্তিতে গত বর্ষায় বাঁকুড়ায় এক বিঘা জমিতে চাষ করে ভাল ফলন পাওয়া গিয়েছে। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে, এ বার বর্ষায় বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বর্ধমানের আসানসোল ও দুর্গাপুর মহকুমা আর বীরভূমের একাংশে বর্ষাতি-পেঁয়াজ চাষ করা হবে।
বর্ষাতি-পেঁয়াজের জন্য কেন ওই জেলাগুলিকেই বেছে নেওয়া হল?
মন্ত্রী বলেন, “জল জমে না বলে ওই সব জেলায় অনেক ঢালু ও শুখা জমি পতিত থেকে যায়। কিন্তু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই ধরনের জমিতেই ‘এগ্রিফাউন্ড ডার্ক রেড’ জাতের নতুন পেঁয়াজের চারা ভাল ফলন দিতে পারে। জল না-জমলেও বর্ষার তিন মাস ওই জমি ভিজে থাকে।” তিনি জানান, জুনের শেষ থেকে অগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ওই নতুন জাতের পেঁয়াজ চাষ করতে হবে। ফসল উঠবে অক্টোবরে। ওই সময় এমনিতেই পেঁয়াজের দাম বেশ চড়া থাকে। অন্য রাজ্য সেই সুযোগটা নেয়। তখন বর্ষাতি-পেঁয়াজ উঠলে চাহিদার কিছুটা পূরণ করা যাবে।
বর্ষাতি-পেঁয়াজের চাষে দু’ভাবে সুবিধা হবে বলে জানান খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের এক কর্তা। তাঁর ব্যাখ্যা:
• অসময়ের ফসল হিসেবে বর্ষাতি-পেঁয়াজের ভাল দাম পাওয়া যাবে।
• আবার পতিত জমিকে চাষের কাজেও লাগানো যাবে। ফলে জমির মালিক-চাষিরা দু’দিক থেকে উপকৃত হবেন। সুব্রতবাবু জানান, এ রাজ্যে এখন গড়ে বছরে ২১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়। উৎপন্ন হয় তিন লক্ষ চার হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ। এই পরিমাণে রাজ্যের তিন-চার মাসের চাহিদা মেটে। বাকিটা আমদানি করতে হয়। বর্ষাতি-পেঁয়াজ ব্যাপক হারে চাষ করা গেলে আমদানির ঝক্কি কমবে।
কৃষকদের বর্ষাতি-পেঁয়াজ চাষে উৎসাহ দিতে চিহ্নিত জেলাগুলিতে প্রচার শুরু হয়েছে। কী ভাবে চাষ করতে হবে, তার প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। মন্ত্রী জানান, নতুন জাতের পেঁয়াজ রাখার জন্য বিশেষ ধরনের হিমঘর তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.