প্রথম শ্রেণি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সাঁওতালি ভাষায় অলচিকি লিপিতে শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ণের দাবিতে মঙ্গলবার বাঁকুড়া জেলার বেশ কয়েকটি রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল পশ্চিমবঙ্গ সাঁওতালি শিক্ষার অধিকার রক্ষা মঞ্চ। সকল ছাত্রছাত্রীদের হস্টেলে রাখার ব্যবস্থা, শিক্ষক নিয়োগ, সাঁওতালী শিক্ষা বোর্ড গঠন-সহ মোট ৫ দফা দাবি জানান তাঁরা। দুপুর ১২টা থেকে দু’ঘণ্টা ধরে চলে অবরোধে বেশ কয়েকটি রাস্তায় দীঘ ক্ষণ যান চলাচল ব্যাহত হয়। চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হন পথে বের হওয়া মানুষজন।
খাতড়ার পাম্পমোড়, রানিবাঁধ বাজার, সারেঙ্গা বাজার, পিড়রগাড়ি মোড়, রাইপুর বাজার, ফুলকুসমা, হিড়বাঁধের হাতিরামপুর, ইঁদপুরের বাংলামোড়, শালতোড়া, তালড্যাংরার শিবডাঙ্গা মোড়ে অবরোধ করা হয়। অবরোধের জেরে বাঁকুড়া-পুরুলিয়া, বাঁকুড়া-রানিবাঁধ, বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম সড়কে যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। বড় গাড়ি আটকানোর সঙ্গে মোটরবাইক আরোহীদের চূড়ান্ত হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। ওন্দার রতনপুরের বাসিন্দা অভিজিৎ ঘটকের ক্ষোভ, “এ দিন এক আত্মীয়কে চিকিৎসা করাতে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলাম। জোর করে গাড়ি আটকে দেওয়ায় বিপাকে পড়ি।” |
পশ্চিমবঙ্গ সাঁওতালি শিক্ষার অধিকার রক্ষা মঞ্চ-র সাধারণ সম্পাদক অরুণকুমার সোরেনের অভিযোগ, “গত বছর থেকে বাঁকুড়া জেলার ১৪টি হাইস্কুলে সাঁওতালি মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। কিন্তু পড়ানোর জন্য পূর্ণ শিক্ষক বা পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। ছাত্রছাত্রীদের হস্টেলে থাকার ব্যবস্থাও করা হয়নি। এমনকী ষষ্ঠ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের এখনও বই দেওয়া হয়নি।” তাঁর দাবি, শিক্ষার মৌলিক অধিকার আদায়ের জন্য আমরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে বাধ্য হয়েছি। এতে কিছু মানুষের হয়তো অসুবিধা হয়েছে। কিন্তু আমরা নিরুপায়।”
জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) দেবপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ছাত্রছাত্রীদের হস্টেলে রাখার তাঁরা ব্যবস্থা করেছেন। সাঁওতালি মাধ্যমের শিক্ষক নিয়োগের জন্য তাঁরা শিক্ষা দফতরে চিঠি পাঠিয়েছেন। সমস্ত স্কুলে বইপত্র দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু স্কুলে অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেছেন। তবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক না পাওয়ার জন্যই সমস্যা হচ্ছে। জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, “ছাত্রাবাসগুলিতে সাঁওতালি মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। শিক্ষা দফতর বিষয়টি দেখছে।”
|