তলবি সভা ডেকে নিজেদের প্রার্থীকে ধুলিয়ান পুরসভার পুরপ্রধান নির্বাচিত করলেন বামফ্রন্টের কাউন্সিলরেরা। মঙ্গলবারের ওই সভায় ৯ জন কংগ্রেস কাউন্সিলরের কেউই হাজির ছিলেন না। বাকি ১০ জন বাম কাউন্সিলরের সমর্থনে পুরপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন মহম্মদ এশাহাক আলি। জঙ্গিপুরের মহকুমাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা বলেন, “পুর আইন অনুযায়ী তলবি সভা ডেকে পুরপ্রধান নির্বাচন করা যায়। কিন্তু ধুলিয়ান পুরসভা ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে। সেখানে আপাতত উপ-পুরপ্রধানই কাজ চালাচ্ছেন।”
এর আগে গত ৭ জানুয়ারি উপ-পুরপ্রধানের ডাকা একটি সভায় কংগ্রেস ও বাম কাউন্সিলরেরা পুরপ্রধান হিসেবে পৃথক ভাবে দু’জনকে নির্বাচিত করেছিলেন। ওই নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ধুলিয়ান পুরসভায় দুই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে ঘটনার তদন্ত করে রিপোর্ট পাঠান। জেলা প্রশাসন তদন্ত রিপোর্ট ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের কাছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছে। যতদিন না নতুন পুরপ্রধান শপথ নিচ্ছেন, ততদিন উপ-পুরপ্রধানকে পুরসভার দৈনন্দিন জরুরি কাজ চালানোর নির্দেশ দেয় প্রশাসন। ওই সময়ের মধ্যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতেও উপ-পুরপ্রধানকে বারন করা হয়। মহকুমাশাসক বলেন, “ওই সভার বৈধতার ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানা নেই।”
এই অবস্থায় তলবি সভা ডেকে ১৯ সদস্যের মধ্যে ১০ জনের সমর্থন নিয়ে বাম প্রার্থীকে পুরপ্রধান করেন। সিপিএমের প্রাক্তন পুরপ্রধান সুন্দর ঘোষের কথায়, “পুরসভায় ৩০ নভেম্বর অনাস্থা এনেছিল বামেরা। এ দিন পুরপ্রধান নির্বাচন করে সেই অনাস্থার পদ্ধতিগত ব্যবস্থার চূড়ান্ত পরিণতি হল।” তিনি জানান, পুরসভায় বামেদের গরিষ্ঠতা থাকলেও কংগ্রেস নানা ভাবে জটিলতা সৃষ্টি করে সব ভেস্তে দিতে চাইছে। প্রশাসনও দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। এর ফলে যাবতীয় উন্নয়নকাজ আটকে আছে। আটকে আছে কর্মী নিয়োগের বিষয়টিও।
তিনি বলেন, “এ দিনের সভায় কংগ্রেসের কেউই হাজির ছিলেন না। স্বভাবতই সংখ্যাগরিষ্ঠ বামেরা পুরপ্রধান নির্বাচন করেছে। কংগ্রেস কাউন্সিলরদের নিয়ম মেনে ডাক যোগে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তাঁরা আসেননি।” উপ-পুরপ্রধান দিলীপ সরকার অবশ্য বলেন, “তলবি সভার কোনও চিঠি আমরা কেউ পাইনি। তাই যাইনি। তা ছাড়া এই তলবি সভার কোনও বৈধতা নেই। কারণ রাজ্য সরকার ৭ জানুয়ারির নির্বাচন সম্পর্কে এখনও কোনও সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেননি।” |