উত্তর ভারতের প্রবল শীতের মধ্যে মোহালিতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চতুর্থ ওয়ান ডে খেলতে নামছে ভারত। সিমলাতে গত কয়েক দিন ধরেই ভাল রকম বরফ পড়ছে। হাড়কাঁপানো শীত কাকে বলে ক্রিকেটাররাও ভালই টের পাবে।
দিল্লিতে পাকিস্তানের শেষ ম্যাচের সময় আমি ছিলাম। এক-এক সময় মনে হচ্ছিল ঠান্ডাটা আর সহ্য করা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে এ বারও ওই একই অবস্থা হবে। আর সেই কারণেই ইয়ান বেল হয়তো বলে ফেলেছে যে, ওর মনে হচ্ছে ইংল্যান্ড এখন দেশের মাঠেই খেলছে। একই সঙ্গে বেল নিশ্চয়ই ধোনিদের মনে করিয়ে দিতে চাইল, গত শীতে তোমাদের আমরা দেশে এমনই শীতের পরিবেশে হারিয়েছিলাম। এ বারও এই পরিবেশে পেসারদের সিম মুভেমন্ট পাওয়ার সম্ভাবনা, যা কি না ঝামেলায় ফেলবে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের।
মোহালির কিউরেটর দলজিৎ সিংহ এমনিতে পছন্দ করেন পিচে ঘাস রাখতে। তবে পিচ আর পরিবেশ যেমনই থাক, সিরিজে সমতা ফেরাতে গেলে ইংল্যান্ডের পারফরম্যান্সে প্রচুর উন্নতি দরকার। ওরা রাজকোটে ভাল ব্যাটিং করেছিল ঠিকই, কিন্তু তার পর থেকে ইংল্যান্ডের পারফরম্যান্স পড়তির দিকে। ওরা কোচি ম্যাচটা হারল রান তাড়া করতে নেমে পরপর উইকেট হারিয়ে। রাঁচিতে আবার প্রথমে ব্যাট করতে নেমেও একই জিনিস হল। আসলে ওদের ওয়ান ডে ইনিংসকে সাজাতে সমস্যা হচ্ছে। ওরা জানে যে, ভারতকে ভারতের মাঠে হারাতে হলে প্রতি ম্যাচে তিনশো কী তার তার আশেপাশে স্কোর তুলতে হবে। আর তাই শুরুর দিকেই প্রচুর শট খেলতে গিয়ে উইকেট দিয়ে আসছে। কুক আর পিটারসেনের মনোভাব দেখেই সেটা বোঝা যাচ্ছে। এমন সব শট খেলছে, যার কোনও মানে নেই।
ওদের দু’জন আর বেলকে আমার পরামর্শ, তোমরা কোচিতে ধোনির ইনিংসটা দেখো। রাঁচিতে বিরাটের ইনিংসটা দেখো। তা হলেই বুঝবে, এই পরিবেশে কী ভাবে উইকেট হাতে রেখে স্বাভাবিক ক্রিকেটটা খেলতে হয়। কোনও টিমের যদি কুড়ি ওভারের মধ্যেই চার উইকেট চে ল যায়, তা হলে তাদের ম্যাচে ফিরে আসা খুব মুশকিল হয়ে পড়ে। মনে হয়, বাকি দু’টো ওয়ান ডে-তে জো রুটকে ব্যাটিং অর্ডারে ওপরে তুলে পিটারসেনকে নামিয়ে দেওয়া হতে পারে। রুট ওপরে এলে স্বাভাবিক ক্রিকেটটা খেলতে পারবে, পরে নামলে পিটারসেনের ওপরও চাপ থাকবে না নেমেই বাউন্ডারি মারার।
নিজেদের বোলিং আক্রমণ নিয়েও ইংল্যান্ডের ভাবা উচিত। ডার্নবাখের ব্রেক দরকার। ইংল্যান্ড টিম ম্যানেজমেন্টকে ওর পরিবর্ত ভেবে বার করতে হবে। ওদের সমস্যা হয়ে গেল স্টুয়ার্ট ব্রডকে না পাওয়ায়। ব্রড শুধু গুণগত দিক থেকে ভাল বোলারই নয়, লোয়ার অর্ডারে ব্যাটটাও খুব ভাল করে দিতে পারে। উল্টো দিকে ভারতের বিশেষ কিছু ভাবনাচিন্তা করার দরকার আছে বলে মনে হয় না।
মনে হয় টিম একই থাকবে, যদিও রাহানের বদলে পূজারার ঢোকার একটা সম্ভাবনা আছে। তবে যত দূর ধোনিকে জানি, ও টিম একই রাখবে। রাঁচিতে বিরাট কোহলির রান পেয়ে যাওয়াটাও ভারতকে স্বস্তিতে রাখবে। লোয়ার অর্ডারে অতটা চাপ পড়বে না। যেটা গত কয়েকটা ম্যাচে পড়ছিল। এই মুহূর্তে ভারতকে দেখে অনেক বেশি ভাল টিম বলেই মনে হচ্ছে। আর ইংল্যান্ড যদি অস্বাভাবিক কোনও উন্নতি না করে ফেলে, তা হলে ভারতকে ওদের পক্ষে হারানো কঠিন। |