শুরু বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষা
পরিবার পিছু অন্তত একটি করে কিষান ক্রেডিট কার্ড
কৃষক পরিবার পিছু অন্তত একটি করে কিষান ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সেই মতো ব্লকে ব্লকে সমীক্ষার কাজে যুক্ত করা হয়েছে কৃষি প্রযুক্তি সহায়কদেরও। তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছেন। যেমন, পরিবারে কতজন সদস্য রয়েছেন, কত জমি রয়েছে, কারও কিষান ক্রেডিট কার্ড রয়েছে কি না প্রভৃতি। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “কৃষক পরিবার পিছু অন্তত একটি করে কিষান ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে সুবিধে হবে কৃষকদেরই। এর ফলে তাঁরা ঋণ পাবেন। শস্য বিমাও মিলবে।”
জানা গিয়েছে, গত ২১ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জেলাশাসকদের এক বৈঠকে প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। পরে জেলাশাসকদের কাছে লিখিত নির্দেশও পাঠানো হয়। ওই নির্দেশ মতোই পদক্ষেপ করা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। কৃষি দফতর সূত্রে খবর, এখনও চাষিদের একাংশ মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে চাষবাস করেন। কেউ কেউ নগদ অর্থের বদলে রাসায়নিক সার-বীজ নেন। এ ক্ষেত্রে ফসল তোলার পর মহাজনদেরই ফসল বিক্রি করতে হয়। অনেক সময় কম দামে ফসল বিক্রি করতে বাধ্য হন কৃষকরা। পরিস্থিতি দেখে কৃষকদের কিষান ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার পরিকল্পনা করে সরকার। ফলে কম সুদে কৃষকেরা ঋণ পেতে পারেন। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আলু চাষ বেশি হয়। এই চাষে খরচও বেশি। তাই ঋণের পরিমাণও বেশি। কিষান ক্রেডিট কার্ড থাকলে একর প্রতি এক জন চাষি ৪৫ হাজার টাকা ব্যাঙ্ক ঋণ পেতে পারেন। আমন ধানের ক্ষেত্রে একর প্রতি ১৬ হাজার ২০০ টাকা। বোরো ধানে ২১ হাজার ৪০০ টাকা। এ ভাবে ফসল পিছু কত ঋণ দেওয়া হয় তার তালিকাও রয়েছে। পাশাপাশি, কিষান ক্রেডিট কার্ড থাকলে কৃষকেরা শস্য বিমাও পাবেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করলে মাত্র ৪ শতাংশ হারে সুদ দিতে হয়। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, একাংশ চাষি এখনও মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে চাষবাস করেন। এঁদের কাছে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড থাকা জরুরি। রাজ্য সরকার তাই প্রতিটি কৃষক পরিবারের হাতেই এই কার্ড তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
জেলায় কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৮ লক্ষের কাছাকাছি। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, গত বছরে মাঝামাঝি জেলায় এসে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন, দু’মাসের মধ্যে কমপক্ষে ১ লক্ষ কৃষক পরিবারকে কিষান ক্রেডিট কার্ড দিতে হবে। তবে এখনও পর্যন্ত সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। সব ব্লকে সমান গতিতে কাজ এগোচ্ছে না বলেও অভিযোগ। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এ ক্ষেত্রে ব্লকে ব্লকে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “আপাতত কৃষক পরিবার পিছু একটি করে কার্ড দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি, যাতে দ্রুত সম্ভব কার্ড বিলি করা যায়। কৃষি দফতর, ব্যাঙ্ক ও ব্লক প্রশাসনকে প্রাথমিক ভাবে এ নিয়ে লক্ষ্যমাত্রাও স্থির করে দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে বলা হয়েছে।” লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্লকস্তরেও ব্যাঙ্ক এবং প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয় রেখে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে শিবির করে কার্ড বিতরণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। ওই আধিকারিকের কথায়, “রাজ্য সরকার চাইছে আপাতত প্রতিটি কৃষক পরিবার পিছু অন্তত ১টি করে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড বিলি করতে। সেই মতো পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ব্লকে ব্লকে সমীক্ষার কাজও শুরু হয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.