দিদির শিলার দাম দিতে রাজি নয় সিপিএম |
নুরুল আবসার • উলুবেড়িয়া |
রাজ্যের ‘দিদি’ একের পর এক শিলা পুঁতবেন আর গাঁটগচ্চা দেবেন জেলার দিদি?
আলবত না! অতএব মুখ্যমন্ত্রীর পুঁতে যাওয়া আধ ডজন শিলার টাকা আটকে দিয়েছে সিপিএমের দখলে থাকা হাওড়া জেলা পরিষদ।
গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে উলুবেড়িয়ার বীরশিবপুরে মুখ্যমন্ত্রীর সভামঞ্চে শিলা জুগিয়ে ভারী আহ্লাদ পেয়েছিলেন যে ঠিকাদার, তাঁর এখন মাথায় হাত। যে কর্তার মুখের কথায় তিনি আগুপিছু ভাবেননি, তিনি কবেই জেলা ছেড়ে চলে গিয়েছেন। ঝোপ বুঝে কোপ মেরেছে জেলা পরিষদ!
ঠিকাদারের দাবি, ছ’টি প্রকল্পের শিলা জোগানোর জন্য মৌখিক নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত)। কয়েক দিন পরেই তিনি বদলি হয়ে যান। এর পরেই জেলা পরিষদ বেঁকে বসে। শিলা জোগাতে খরচ হয়েছিল সাড়ে বত্রিশ হাজার টাকা। কিন্তু গত পাঁচ মাস ধরে টাকার জন্য জেলা পরিষদ এবং জেলা প্রশাসনের কাছে দরবার করেও লাভ হয়নি। জেলা সভাধিপতি মীনা ঘোষ মুখোপাধ্যায় উল্টে বলেন, “যে অনুষ্ঠানের কথা আমি জানিই না, তার জন্য টাকা দেব কেন? ওর্য়াক অর্ডার কোথায়? জেদাজেদি করলে একটি পয়সাও দেব না।”
সিপিএম নেত্রীর গোসা করার কারণ আছে অবশ্য। সাধারণত মুখ্যমন্ত্রী সফরে এলে মহাকরণ থেকে জেলা প্রশাসনকে আগেভাগে জানানো হয়। প্রশাসনের কর্তারা জেলা পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সফরের সব আয়োজন করে জেলা পরিষদই। খরচ-খরচা তাদের তহবিল থেকেই মেটানো হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে প্রশাসন সে পথ মাড়ায়নি। মীনাদেবীর ক্ষোভ, “জেলা প্রশাসনের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী যে কয়েক বার বৈঠক করেছেন, আমাকে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি। ২৮ সেপ্টেম্বর তাঁর জেলা সফরের বিষয়েও কিছু জানা নেই। শিলান্যাসের বিল আমরা মেটাতে যাব কেন?”
এই দড়ি টানাটানিতে ফেঁসে গিয়েছে ঠিকাদার। সংস্থার কর্ণধার চুমকি সেন বলেন, “তৎকালীন অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) অশোক দাসের অনুরোধেই সভার আগের দিন অনেক কষ্টে কলকাতা থেকে শিলাগুলি বানিয়ে এনেছিলাম। টাকা পেলাম না।” তাঁর স্বামী তপন সেন যোগ করেন, “জেলাশাসককেও চিঠি দিয়েছি। যদি কিছু হয়!”
অশোকবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। কিন্তু জেলা প্রশাসনের কর্তারা বুঝিয়ে দিয়েছেন, সিপিএমের কোপ ঘাড় পেতে নিতে তাঁরা নারাজ। জেলাশাসক শান্তনু বসুর সোজা কথা, “মোটে তো ৩২ হাজার টাকা! জেলা পরিষদ না-দিলে আমরাই দিয়ে দেব।” |