আরামবাগে তৃণমলের কার্যালয়ে হামলা, জখম ৬
কলেজে মারধর, প্রতিবাদে অবরোধ
বেঙ্গাই অঘোরকামিনী মহাবিদ্যালয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামার লক্ষণ নেই। মঙ্গলবারও দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। বহিরাগতেরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে পথ অবরোধও হয়। আধ ঘণ্টা অবরোধের পরে বিকেল ৪টে নাগাদ পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিবদমান দু’পক্ষই পুলিশের কাছে মৌখিক অভিযোগ জানিয়েছে। লিখিত অভিযোগ চাওয়া হয়েছে থানার তরফে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও কলেজ সূত্রের খবর, বছর খানেকেরও বেশি সময় ধরে এই কলেজে নানা ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। কখনও সরস্বতী পুজো, কখনও ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি আবার কখনও বা ছাত্র সংসদের নির্বাচনকে ঘিরে সংঘর্ষে জড়িয়েছে দু’পক্ষ। দিন পনেরো আগেও ছাত্র সংসদের নির্বাচনকে ঘিরে রক্তারক্তি কাণ্ড বাধে। সোমবার দুই গোষ্ঠীর ছেলেরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
মঙ্গলবারও পুলিশ এসে কলেজে কিছু ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ পুলিশ চলে যাওয়ার পরে গোলমাল বাধে। টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্রসংসদের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ ঘোষের অভিযোগ, “পুলিশ আমার সঙ্গে কথা বলে চলে যেতেই বহিরাগত কয়েক জন এসে মারধর শুরু করে।” ফের খবর পেয়ে আসে পুলিশ।
বেলা ২টো নাগাদ পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়েছে মনে করে ফিরে যান পুলিশ কর্মীরা। সুদীপবাবুর অভিযোগ, ছাত্র সংসদের দুই সদস্য শেখ জাহাঙ্গির ও তপন ধারাকে কলেজের বাইরে বাসস্ট্যান্ডে ধরে মারধর করা হয়। জাহাঙ্গিরকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ কলেজের সামনে আরামবাগ-কোতুলপুর রাস্তা অবরোধ শুরু করে ছাত্রসংসদের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর ছেলেরা। সেখানে কিছু বহিরাগতও ছিল। সংগঠনের অন্য এক গোষ্ঠীর নেতা সীতারাম ঘোষ বলেন, “ওরা আমাদের কলেজে ঢুকতে দিচ্ছে না। মারধর করছে। অভিভাবকেরা তার প্রতিবাদ করেছেন।”
অন্য একটি ঘটনায় আরামবাগের নৈসরাই গ্রামে তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর কিছু লোককে দলেরই আর গোষ্ঠীর কর্মী-সমর্থকেরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জখম হয়েছে জনা ছ’য়েক। সোমবার রাতে দলের কার্যালয়ে ঢুকে এক গোষ্ঠীর লোকজন হামলা চালায় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ আসে। কিন্তু যারা মারধর করেছে, তাদেরই তরফের লোকজনকে পুলিশ পিটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গ্রেফতার করা হয় প্রহৃত তৃণমূল নেতা গোলাম আম্বিয়া-সহ ৪ জনকে। আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ব্যক্তিগত জামিনে সকলকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশের অবশ্য দাবি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ‘প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ নেওয়া হয়েছে।
আম্বিয়ার অভিযোগ, “এলাকায় একশো দিনের কাজ নিয়ে সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েতকে সাহায্য করার ব্যাপারে দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক করছিলাম। রাত ৯টা নাগাদ আমাদেরই দলের বাবর আলি দলবল নিয়ে ঢুকে বিনা প্ররোচনায় মারধর করেছে। পুলিশ ডাকলাম আমরা। অথচ পুলিশ এসে রাস্তায় ফেলে পেটাল আমাদেরই।”
অন্য দিকে বাবরের দাবি, “মারধরের ঘটনা ঘটেনি। স্থানীয় এক চিকিৎসককে ওরা হেনস্থা করেছিল। তারই প্রতিবাদ করা হয়েছে।” ওই চিকিৎসকের তরফে অবশ্য কোথাও কোনও অভিযোগ করা হয়নি। তা সত্ত্বেও তাঁর পক্ষ নিয়ে ‘প্রতিবাদের’ পথ নেওয়া হল কেন? এ ব্যাপারে স্পষ্ট উত্তর নেই বাবরের কাছে। তৃণমূলের এক জেলা নেতা বলেন, “গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দিকে লক্ষ্য রাখছে দল। সমস্ত বিষয় দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.