সম্পাদকীয় ২...
এত কথা কেন
দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁহার প্রথম ভাষণ। ভাষণটি বারাক হুসেন ওবামার জীবনের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ হওয়াই স্বাভাবিক। ২০০৯ সালের জানুয়ারি তাঁহার কণ্ঠে যে প্রতিশ্রুতি শুনিয়াছিল, গত চার বৎসর তাহার কতখানি পূর্ণ করিল, প্রেসিডেন্ট ওবামার সেই হিসাব দেওয়ার ছিল। আগামী চার বৎসর তিনি কোন পথে চলিতে চাহেন, সেই যাত্রায় কাহাদের সহযাত্রী রূপে চাহেন, তাহাও জানাইবার ছিল। ওবামা উভয় দায়িত্বই পালন করিয়াছেন। তিনি তাঁহার প্রথম দফার সাফল্যের কথা উল্লেখ করিয়াছেন, ব্যর্থতা লুকান নাই। কোন প্রতিশ্রুতি এখনও পূরণ হওয়া বাকি, তাহা স্পষ্ট করিয়াছেন। আগামী চার বৎসরের যাত্রাপথ নির্দেশ করিয়াছেন। এহেন ঐতিহাসিক ভাষণে তাঁহার সময় লাগিয়াছে সাকুল্যে ১৯ মিনিট। ওয়াশিংটনে তিনি ভাষণ আরম্ভ করিবার কিছু আগে পশ্চিমবঙ্গের ক্যানিংয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি ভাষণ দেন। দুপুর তিনটায় আরম্ভ করিয়া সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শেষ। টানা সাড়ে তিন ঘণ্টা বক্তৃতা করিবার পর তিনি শ্রোতাদের বলেন, আপনাদের বাড়ি ফিরিতে হইবে, আমি বেশি কথা বলিব না!
দুইটি ভাষণের গুরুত্বের তুলনা হয় না। ওবামার ভাষণ সর্বার্থে ঐতিহাসিক। দেশের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হিসাবে তিনি দ্বিতীয় বার জয়ী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ তাঁহার প্রাত্যহিকতায় ভরপুর। প্রতিটি জনসভাতেই তিনি যে কথাগুলি বলেন, ক্যানিংয়েও বলিয়াছেন। ওবামা এই ভাষণে আগামী চার বৎসরের কর্মসূচির রূপরেখা জানাইয়া দিয়াছেন। আগামী কাল কী করিবেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সেই কথাটিও বলিতে পারেন নাই। বস্তুত, এইখানেই স্পষ্ট, কেন ওবামা ১৯ মিনিটে ভাষণ সারিয়া ফেলেন আর কেন মমতা সাড়ে তিন ঘণ্টা কথা বলিতে পারেন। প্রথম জনের অনেক কিছু করার আছে। দ্বিতীয় জনের কথামাত্রসার। কাজের তহবিলে কম পড়িলে কথার প্লাবন ডাকে, ইহাই স্বাভাবিক। চিরকালই এমন ঘটিয়াছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দৃশ্যত সেই পথ বাছিয়াছেন। সমস্যা হইল, তিনি এমনকী সুবক্তাও নহেন। ফলে, তাঁহার অবান্তর কথা অনেক ক্ষেত্রেই অপ্রীতিকর কথায় পরিণত হয়। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ক্যানিংয়ে তিনি যাহা বলিয়াছেন, তাহা নিন্দারও অযোগ্য। কথাটি অনিবার্য ছিল না। কিছু কম কথা বলিলেই এই কথাটি উঠিবার অবকাশ পাইত না। কম কথা বলিবার ইহাই এক সুবিধা মনের মণিকোঠায় বিস্তর মণিমুক্তা সঞ্চিত থাকিলেও তাহা প্রকাশ পায় না, ফলে অনেক বিড়ম্বনা হইতে রক্ষা পাওয়া যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দুইটি কথা স্মরণ করাইয়া দেওয়া যাউক।
, তিনি এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, পাড়ার জলসার সূত্রধর নহেন। দর্শক-শ্রোতার মনোরঞ্জন তাঁহার কর্তব্যের তালিকায় পড়ে না।
, কম কথা বলাও এক ধরনের শিল্প। তিনি যে গোত্রের শিল্প পছন্দ করেন, সেই গোত্রের। তিনি অভ্যাস করুন। এক বারে না হইলে শত বার। পশ্চিমবঙ্গে এই শিল্পটির প্রসার হইলেও মন্দ নহে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.