কয়লা আটক করতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাঁকরতলা |
অবৈধ কয়লা মজুত রয়েছে। খবর পেয়ে অভিযানে গিয়ে গ্রামবাসীদের ছোড়া ইট-পাটকেলের ঘায়ে জখম হলেন বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী। ইটের ঘায়ে কাচ ভাঙল পুলিশ ভ্যানের। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে পিছু হটতে হয় পুলিশকে। মঙ্গলবার সকাল ১০-১০.৩০ নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে কাঁকরতলা থানা এলাকার সাহাপুর গ্রামে। জেলা পুলিশ সুপার মুরলীধর শর্মা বলেন, “ওই গ্রামে বেশ কিছু অবৈধ কয়লা মজুত করা হয়েছে, খবর পেয়ে অভিযানে গিয়েছিল পুলিশ। গ্রামবাসীদের ছোড়া ইটের আঘাতে কয়েকজন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। তবে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কোনও সংঘাতে যায়নি পুলিশ।” |
হামলার পরে। মঙ্গলবার তোলা —নিজস্ব চিত্র। |
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই গ্রামে অবৈধ কয়লা মজুত রয়েছে খবর পেয়ে এ দিন সকালে খয়রাশোল ও কাঁকরতলা থানার ওসি, দুবরাজপুরের সিআই-সহ ৫০-৬০ জন পুলিশকর্মী অভিযানে গিয়েছিলেন। গ্রামে ঢুকতে না ঢুকতেই তাঁদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করেন ওই গ্রামের বেশ কিছু বাসিন্দা। তখনই ইটের ঘায়ে জখম হন পুলিশকর্মীরা। খয়রাশোলের নাকড়াকোন্দা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিএমওএইচ সরূপ মাড্ডি জানান ১৬ জন জখম পুলিশকর্মী চিকিৎসার জন্য এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে তিন জনের মাথায় চোট লেগেছে। এ দিন আভিযানে সামিল পুলিশকর্মীদের কথায়, যে গ্রামে মঙ্গলবার আভিযান চালানো হল, এমনিতেই কায়লা কারবার নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিবাদ, মারামারি, বোমাবাজি খুব পরিচিত ঘটনা। এ দিন গ্রামে ঢুকতে না ঢুকতেই ইট-পাটকেল ছোড়া শুরু হয়ে যায়। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে আর না এগিয়ে তাঁরা গাড়ি ঘুরিয়ে নেন এবং নিজেদের জীবন বাঁচাতেই যে যেদিকে পেরেছেন, পালিয়েছেন। পুলিশি অভিযান হতে পারে, আন্দাজ করেই গ্রামবাসীরা প্রস্তুত ছিলেন বলে পুলিশের অনুমান। এই অনুমান যে অমূলক নয়, তা এলাকাবাসীর কথায় স্পষ্ট। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে কাঁকরতলা থানার পুলিশ ওই গ্রাম থেকে কিছু কয়লা আটক করেছিল। গ্রামবাসীদের কথায়, ফের পুলিশ এলাকায় আসতে পারে, এই ভেবে তাঁরা সতর্ক ছিলেন।
কাঁকরতলা, খয়রাশোল, দুবরাজপুরে আবৈধ কয়লা কারবার নতুন কোনও বিষয় নয়। এই বছরেই অবৈধ কয়লা বোঝাই গরুরগাড়ির নীচে পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক স্কুল পড়ুয়া-সহ দু’জনের। পুলিশ প্রশাসনের দাবি, আবৈধ কয়লা আসে মূলত ঝাড়খণ্ড থেকে এবং বর্ধমান থেকে আজয় নদ পেরিয়ে খয়রাশোলের কাঁকরতলা অঞ্চল দিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে এই কারবার চলছে এবং এই সমস্যা একটি বড় সমস্যা বলে মেনে নিয়েছেন খোদ পুলিশ সুপার। কেন না এসপি আগেই জানিয়েছিলেন, এই বেআইনি কারবার বন্ধে তৎপরতা বাড়ানো ছাড়াও বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সেই তৎপরতার কারণেই এ দিনের অভিযান ছিল বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
|