|
|
|
|
জিত্ কখন দিওয়ানা
দর্শক তো তাঁর ছবি দেখে দিওয়ানা। কিন্তু দিওয়ানগিতে
তিনিও যে কম যান না। জানালেন জিত্। শুনলেন ইন্দ্রনীল রায় |
আমার কাজ
এই একটা দিওয়ানগি, সব দিওয়ানগিকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। কাজের ব্যাপারে খুব প্যাশনেট আমি। আমি কোনও দিন পয়সার জন্য কাজ করিনি। ইচ্ছে করেছে কাজ করতে, পয়সা আপনা আপনি এসেছে। আজও কাজের প্রতি এই দিওয়ানগির জন্য ঝুঁকি নিয়ে শট দিতে দু’বার ভাবি না। মনে আছে ‘সাথী’র সময় ২৫ ফুট ওপর থেকে কেব্ল ছাড়া লাফ দিয়েছিলাম। ওই পাগলামিটা আমার মধ্যে আছে। ‘চ্যাম্পিয়ন’ যখন করি শ্যুটিংয়ের সময় রাস্তায় শুয়ে পড়েছিলাম। আমার কব্জির ওপর দিয়ে চারটে মারুতি ভ্যান চলে গিয়েছিল। ‘দুই পৃথিবী’তেও বেশ কয়েকটা ঝুঁকি-র শট দিয়েছিলাম। দিওয়ানার একটা গানে অনেক উঁচু একটা থামের ওপর দাঁড়িয়ে শট দিয়েছি। এটা আমার কাছে একটা নেশা। একটা ‘জশওয়া’। এটার আমি দিওয়ানা।
পরিবারের ব্যাপারে আমি ভীষণ পজেসিভ আর দিওয়ানা
পরিবার অবশ্যই আমার প্রথম প্রেম। আমার কাছে এর থেকে বড় মন্ত্র নেই জীবনে। বাড়ির বড় ছেলে হওয়ার জন্য আমার ওপর অনেক দায়িত্ব। এই দায়িত্বটা বহন করতে খুব ভাল লাগে আমার। আজও শ্যুটিং থেকে বাড়ি ফিরে বাবা-মা, ভাইয়েরা, তাদের বৌয়েরা মিলে রোজ আড্ডা মারি। খাবার টেবিলেও বহুক্ষণ আড্ডা চলে। আসল কথা একটাই, আমরা সবাই বিশ্বাস করি, ফ্যামিলি ইজ ফরএভার।
ন্যাপি বদলানোর দিওয়ানা
মেয়ের ব্যাপারে আমি দিওয়ানা তো বটেই, আরও দিওয়ানা মেয়ের ন্যাপি বদলানোর। এই তো সে দিন যখন আমার স্ত্রী মোহনা খাচ্ছিল, মেয়ে পটি করে ফেলেছে। মোনা আমার দিকে তাকিয়ে হেসে বলেছিল, ‘‘করো এ বার তুমি পরিষ্কার।” এমন করে বলল যেন আমায় চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। আমি কিন্তু চ্যালেঞ্জটা অ্যাকসেপ্ট করে সব পরিষ্কার করলাম। পরে মোহনা বলেছিল, দশে দশ পেয়েছি আমি। মাঝে মাঝে শুধু মনে হয় মিডিয়া হ্যান্ডেল করার সময় আমার দিওয়ানাগিরিটা যেন একটু ডাউন থাকে। আজও বুঝতে পারি না কেন সেটা।
অমিতাভ বচ্চনের দিওয়ানা আমি
যে দিন সিসিএল-এর উদ্বোধন ছিল সে দিন আমি জুহু থেকে বান্দ্রার দিকে যাচ্ছিলাম। রোববার বিকেল। ‘প্রতীক্ষা’ পেরোনোর সময় দেখলাম প্রায় ৫০০ লোক হাজির। তারা অনেকেই ভাল ফ্যামিলির। গাড়ি পার্ক করে দাঁড়িয়ে আছে ভগবানের দর্শনের জন্য। সত্যি বলছি কাজ না থাকলে আমিও দাঁড়িয়ে যেতাম ওই ভিড়ে। ঠিক ভিড় ঠেলে দেখা করে আসতাম ওঁর সঙ্গে। আমার হিরো হওয়া, নাচের স্টাইল সব কিছুর পিছনে ওই একজন মানুষ। অমিতাভ বচ্চন। আমি বিশ্বাস করতে ভালবাসি, সারা পৃথিবীতে আমিই ওঁর সব চেয়ে বড় দিওয়ানা।
তেল-ঝাল ছাড়া খাবারের দিওয়ানা
আমি কিন্তু এত বাইরে শ্যুটিং করি, এত ঘোরাঘুরি করি, কিন্তু সিম্পল খাবারের কোনও বিকল্প নেই আমার কাছে। তেল-ঝালের থেকে আমি শত হস্ত দূরে। আমার হয় একদম বয়েলড্ চিকেন বা বেকড্ ফিস, না হয় বাড়ির রুটি, সবজি আর ডাল। আমার খাওয়া দেখে সবাই বলে আমার থেকে সিম্পল খাবারের দিওয়ানা আর কেউ নেই। তবে বেড়াতে গেলে কিন্তু আমি অ্যাডভেঞ্চারাস। যেখানেই যাই সেখানকার লোকাল কুইজিন আমি খাবই। কিন্তু তার মধ্যেও মশলাদার খাবার চলবে না। আমার খাবারে মশলার নো এন্ট্রি। |
|
পারফিউমস্ আমায় দিওয়ানা করে
আমায় যাঁরা চেনেন, তাঁরা বলবেন আমার সব চেয়ে বড় দিওয়ানাগিরি হচ্ছে পারফিউমস্। আমি যে কত টাকা খরচা করেছি পারফিউমে তা আপনাদের বললে আপনারাই লজ্জা পেয়ে যাবেন। এক সময় আমার ফেভারিট পারফিউম ছিল অ্যামুয়েজের প্রাইভ। সেটা তখন শুধু লন্ডনের হিথরো এয়ারপোর্ট আর হ্যারডস্-এ পাওয়া যেত। কেউ লন্ডন গেলে আমি আনাতাম সেটা। এখন অবশ্য আমার টেস্ট বদলেছে। এই মুহূর্তে আমার পছন্দ লোমানি-র জুবিলেশন আর সেন্ট লঁরা-র লা নুয়ে হোম। দাম কত জিজ্ঞেস করে আর আমায় লজ্জায় ফেলবেন না।
আমি দিওয়ানা সুজয়, অনুরাগের বলিউড জয়ের
এই তো দু’দিন আগে ফিল্মফেয়ার দেখছিলাম। দেখলাম তিন জন বাঙালি কী রকম রাজত্ব করছে সেখানে। সুজয় ঘোষ, অনুরাগ বসু আর সুজিত সরকার। সুজিত আর অনুরাগ প্রবাসী তো কী? বাঙালি তো! আর সুজয় তো একেবারে কলকাতার ছেলে। এই তো সেদিন হাঁটতে হাঁটতে আমার অফিসে চলে এসেছিল। এসে বলছিল ‘কহানি’-র শ্যুটিং-এর জন্য কত দিন ও আমার পুরোনো পাড়া কালীঘাটে শ্যুটিং করেছে। এত গর্ব হল আমার! বলিউডে যে ভাবে এরা রাজত্ব করছে, পাগল হয়ে যাচ্ছি ওদের দেখে আমি। এদের আমি দিওয়ানা।
দিওয়ানা আমি জামাকাপড়ের
আমি সবার গালাগালি খেয়েছি। ভবিষ্যতেও খাব আমার এই দিওয়ানাগিরির জন্য। জামাকাপ ড় পাগল করে দেয় আমাকে। আমার কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে যায় জামাকাপড় দেখলে। ভাল জামাকাপড় দেখলে আমি চেনা লোককেও চিনতে
অস্বীকার করি। মনে আছে হনিমুনে গিয়ে একদিন শপিংয়ে গিয়েছিলাম। মোহনাকে সেদিন বলেছিলাম আজকে আমি তোমাকে চিনি না। তুমি তোমার মতো শপিং করো। আমি আমার মতো শপিং করব। তার পর অবশ্য শেষ দু’ঘণ্টা মোহনা আমার কাছে সময় চেয়ে নিয়েছিল, ওকে শপিংয়ে সাহায্য করার জন্য।
বন্ধুদের ব্যাপারে আমি সাংঘাতিক দিওয়ানা
তিন জন বন্ধু আছে। টাবলু, জয়দীপ আর রঘু। আমার ২০ বছরের বন্ধুত্ব এদের সবার সঙ্গে। এই বছর ৩১ ডিসেম্বরেও আমি ওদের মধ্যে দু’জনের সঙ্গে ছিলাম। এই তিন জনের সঙ্গে বন্ধুত্বের ব্যাপারে পাগল আমি। পুরো দিওয়ানা। এ ছাড়া ফিল্ম লাইনেরও প্রচুর বন্ধু আছে আমার। তাদের অনেকের সঙ্গেই প্রতিযোগিতা আছে। আবার একে অন্যকে সম্মানও করি আমরা। তবু ওঁদের থেকেও এই তিন জনের বন্ধুত্ব অনেক বেশি মূল্যবান আমার কাছে। ওদের জন্য আমি সব সময় আছি। ওরাও তাই।
আধ্যাত্মিকতার দিওয়ানা আমি
আমি অসম্ভব ঈশ্বরবিশ্বাসী। এখনও রোজই মন্দিরে যাই। দক্ষিণেশ্বরে আর কালীঘাটে মাঝে মধ্যেই দেখতে পাবেন আমাকে। সেই ‘সাথী’-র সময় থেকেই এটা করছি। মা কালীর ভক্ত তো বটেই, আমি তিরুপতিরও ভক্ত। এখনও ছবি মুক্তির আগে আমি তিরুপতি যাবই যাব। ওখানে গেলে মনের জোরের সঙ্গে সঙ্গে একটা অদ্ভুত শান্তি পাই আমি। এই ভক্তিটার আমি দিওয়ানা।
ক্রিকেট আর খেলাধুলোর আমি বিরাট দিওয়ানা
গত রোববার আমি মুম্বইতে ছিলাম সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগের উদ্বোধনের জন্য। এ বারেও আমি টিমের ক্যাপ্টেন এবং এই একটা ব্যাপারের আমি খুব দিওয়ানা। কিন্তু এ বারে আমি বনি কপূরকে বলেছি আমার পক্ষে পুরো সিসিএল-এর সব ক’টা খেলায় ক্যাপ্টেন থাকা সম্ভব হবে না। তার কারণ অবশ্যই আমার পরের ছবি, ‘বস’। আমি অবশ্যই আশাবাদী, আমার টিম সামলে নেবে আমার না থাকাটা। তবে শেষ চেষ্টা একটা করব, যাতে সব ক’টা খেলা খেলতে পারি। ব্যালেন্স করার একটা চেষ্টা করবই। |
|
|
|
|
|