ঠান্ডার দাপটে ধরা পড়ে গেল সর্ষের তেলের ভেজাল।
মালদহের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে ওই তেল সরবরাহ করেছিল খোদ রাজ্য সরকারের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিগমের অনুমোদিত একটি সমবায় সংস্থা। বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে ওই ভোজ্য তেল পান প্রসূতি ও শিশুরাও। কিন্তু মোট ৫১৩টি বোতলে তেলের ভেজাল ধরা পড়ার পরেও ওই সমবায় সংস্থাকে কেবল সতর্ক করেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মালদহের মানিকচকের বিধায়ক তথা রাজ্যের নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র অবশ্য বলেছেন, “জেলার প্রায় চার লক্ষ শিশু ও অন্তঃসত্ত্বারা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে ওই ভেজাল তেল খেয়েছেন। যদি এই তেল খেয়ে কেউ অসুস্থ হন, তার দায় কে নেবে?”
বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী ও সহায়িকারাই প্রথমে বুঝতে পারেন তেলে ভেজাল রয়েছে। তাঁরা জানান, তবে ঠান্ডা না পড়লে এত সহজে কিন্তু ভেজাল ধরা পড়ত না। এ বার প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়ার পরে তাঁরা দেখতে পান অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে মজুত সর্ষের তেল বোতলেই জমে গিয়েছে। এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী বলেন, “ঠান্ডার সময়ে দেখি বোতলের মধ্যে সর্ষের তেল জমে সাদা হয়ে গিয়েছে। তেল এ ভাবে জমাট বাঁধে না। তখনই বুঝতে পারি তেলে ভেজাল রয়েছে।” বিভিন্ন কেন্দ্র থেকেই সে কথা জেলা আধিকারিকদের কানে পৌঁছয়।
আইসিডিএসের জেলা প্রকল্প আধিকারিক প্রত্যর্পণ সিংহ রায়ের বক্তব্য, “তেলের গুণমান নির্ধারণ করে রাজ্যের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিগম। ওই সংস্থাই স্থির করে কোন কোন সংস্থা কোন কোন জেলায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে ওই তেল সহ অন্য খাদ্য সরবরাহ করবে। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সব জানিয়েছি। তাঁরা যে ব্যবস্থা নিতে বলবেন তাই হবে।” ইতিমধ্যে যে বোতলগুলির তেলে ভেজাল মিলেছিল সেগুলিকে বদলে দিতে বলা হয়েছে ওই সমবায় সংস্থাকে। তাঁদের সতর্কও করে দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনও এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে। মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক ১৭ জানুয়ারি বিষয়টি অত্যবশ্যকীয় পণ্য নিগমের অধিকর্তাকে জানিয়েছেন।
খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকই অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিগমের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “এ রকম কোনও ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে শাস্তি দেওয়া হবে।” |