জমি জটে আটকে থাকা তিস্তা সেচ প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করতে আলোচনার পথেই হাঁটবে রাজ্য সরকার। রবিবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার সেচ দফতরের আধিকারিক এবং প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। বৈঠক শেষে দু’জনেই জানান, উত্তর দিনাজপুরের গুঞ্জরিয়া এবং করণদিঘিতে জমি সমস্যা থাকায় প্রকল্পের কাজ আটকে রয়েছে। জমির মালিকদের সঙ্গে আলোচনায় সমস্যা মেটানো হবে। কিন্তু আলোচনার ওই সমস্যা কতটা মিটবে তা নিয়ে সন্দেহ সেচ দফতরের কর্তাদেরই। বামফ্রন্টের আমলে তিস্তা সেচ প্রকল্পের প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমি অধিগ্রহণ নিয়ে বিভিন্ন আদালতে মামলা বকেয়া পড়ে আছে। নতুন করে ৩ হাজার হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। |
রাজীববাবু বলেন, “২০১৫ সালের মধ্যে তিস্তা প্রকল্পের মেন ক্যানালের প্রায় ৬৮ কিলোমিটারের কাজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়েছি। গুঞ্জরিয়া, করণদিঘি এলাকায় জমি নিয়ে কিছু সমস্যা রয়েছে। কারও জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা মেটানো হবে।” আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী ওই সমস্যা মেটাতে উত্তর দিনাজপুরে যাবেন। সেচ মন্ত্রীর দাবি, “দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা প্রকল্পের কাজ এগোয়নি। ওই কারণে অনেকে জমি দিতে উৎসাহ হারাচ্ছে। রাজ্যে নতুন সরকার এসে প্রকল্পের গতি সঞ্চার করেছে। অনেকে এবার উৎসাহিত হবেন।” দফতরের কর্তারা জানান, মহানন্দা ব্যারেজ থেকে উত্তর দিনাজপুর পর্যন্ত ওই খালে জমি নিয়ে খুব একটা সমস্যা নেই। সমস্যা অন্য খানে॥
মন্ত্রী এই দিন জানান, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে সেচ দফতরের ৮০ কোটি টাকার কাজ চলছে। ওই দুই জেলায় আরও ২৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। শিলিগুড়িতে ৮ কোটি টাকার কাজ চলছে। এ ছাড়া উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে সেচ দফতরকে ২৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ওই টাকায় করলা অ্যাকশন প্ল্যানের কাজ হবে বলে মন্ত্রী জানান। আগামী চার মাসের মধ্যে মহানন্দা মেন ক্যানাল থেকে প্রতিদিন ৪৫ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে বলে মন্ত্রী দাবি করেন। ব্রহ্মপুত্র বোর্ডের ১৪৭ কোটি টাকা কেন্দ্রীয় সরকার দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় জলবিদ্যুৎ মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে ফেব্রুয়ারি মাসে দুই দফতরের একটি প্রতিনিধি দল দিল্লি যাবে বলে মন্ত্রী জানান। শনিবার রাতে জলপাইগুড়িতে এসে সেচমন্ত্রী দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। রেসকোর্স পাড়ায় একটি বাংলোর উদ্বোধন করেন তিনি। |