শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন চিকিৎসাধীন রোগী। অভিযোগ, বারবার ডাকা সত্ত্বেও সাহায্যে এগিয়ে আসেননি কর্তব্যরত নার্সেরা। সেই রোগীর মৃত্যুতে সোমবার উত্তেজনা তৈরি হল বোলপুর হাসপাতালে। অক্সিজেনের না মেলাতেই ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে এই অভিযোগে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন রোগীর পরিজনেরা। পরে বোলপুর থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ দিন সকালেই সকালেই মৃতের পরিবার হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। হাসপাতাল সুপার সুদীপ মণ্ডল বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ওয়ার্ড মাস্টারের কাছে কর্তব্যরতদের জবাবদিহি চাওয়া হয়েছে। উত্তর পাওয়ার পর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বর্ধমানের আউশগ্রাম থানা এলাকার ভেদিয়া-ব্রাহ্মণখণ্ডের বাসিন্দা, পেশায় চাষি শেখ ইলিয়াস (৪২)। চিকিৎসক নরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আওতায় ছিলেন তিনি। একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার বরাদ্দ হয়েছিল ইলিয়াসবাবুর জন্য। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত আড়াইটে নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত শেখ ইলিয়াসের ছেলে গিয়াসউদ্দিনের অভিযোগ, “রাতের দিকে হঠাৎ করেই বাবার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন। আমাদের আশঙ্কা সিলিন্ডারের অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়াতেই বাবার শরীর খারাপ হতে থাকে।” তাঁর দাবি, “ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নার্সদের বারবার ডেকেও সাড়া মেলেনি।” ওই অবস্থায় ইলিয়াসবাবুর পরিজনেরা বাধ্য হয়ে তাঁকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার ভাবনাও শুরু করেন। কিন্তু রাত আড়াইটের দিকে নিথর হয়ে যান ইলিয়াসবাবু। তাঁর স্ত্রী মেহেরুন্নেশা বিবি বলেন, “ঠিক মতো চিকিৎসা না পেয়েই আমার স্বামী মারা গেলেন। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।”
রোগীর মৃত্যুর পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন আত্মীয়েরা। খবর যায় সুপারের কাছে। ভোরের দিকে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। তত ক্ষণে রোগীর পরিজনদের বিক্ষোভে শোরগোল পড়ে যায় হাসপাতাল চত্বরে। দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবিতে তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে দেখে খবর যায় পুলিশের কাছে। হাসপাতালে পুলিশ পৌঁছলে তাঁরা রোগীর আত্মীয়দের ক্ষোভের মুখে পড়েন। প্রয়োজনীয় পরে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস মেলায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। |