কর্মচারীর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে টানা দুই ঘণ্টা ধরে লোহার সিন্দুক ভেঙে লক্ষাধিক টাকার গয়না নিয়ে চম্পট দিল ডাকাত দল। রবিবার রাতে ডুয়ার্সের গয়েরকাটা বাজারে ঘটনাটি ঘটে। সোমবার পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের খোঁজ পায়নি পুলিশ। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দোকানের কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জেমস কুজুর বলেন, “কর্মচারীর কথায় কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। তাই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে ওই দোকানের পিছন দিকের কাঠের দরজা খুলে রবিবার রাত দুটো নাগাদ ৮-৯ জনের ডাকাত দল ভিতরে ঢোকো। ওই সময় দোকানে একজন কর্মচারী ঘুমিয়ে ছিলেন। দরজা খোলার শব্দে তিনি জেগে উঠতে দুই দুষ্কৃতী তাঁর মাথায় পিস্তল ঠেকায় বলে অভিযোগ। এর পরে দুষ্কৃতীরা তাঁর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। টানা দুঘণ্টা ধরে দুটি সিন্দুক মেঝেতে ফেলে লোহা কাটার করাত দিয়ে কাটে। সেখানে রাখা সমস্ত গয়না লুঠ করে ডাকাত দলটি ভোর চারটা নাগাদ বেরিয়ে যায়। ওই সময় আওয়াজ করলে গুলি করে মারার হুমকিও দেয়। দুষ্কৃতীরা চলে যাওয়ার পরে দোকান থেকে বেরিয়ে উল্টো দিকের অন্য দোকানের কর্মচারীকে ঘুম থেকে তুলে তাঁর মেবাইল ফোন থেকে মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে কর্মচারী। এর পরে খবর দেওয়া হয় বানারহাট থানায়।
ওই দোকানে বছর তিনেক আগে রাতে রূপোর গয়না চুরির ঘটনা ঘটে। এবার সিন্দুক ভেঙে ডাকাতির ঘটনায় মাথায় হাত পড়েছে দোকান মালিক প্রবীর দাসের। তিনি বলেন, “প্রচুর টাকার গয়না ছিল সিন্দুকে। কী করব বুঝতে পারছি না।” দোকানের কর্মচারী বাপ্পা রায় বানারহাট থানায় বসে জানান, দরজার ডাসা মেঝেতে পড়ার শব্দে তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। খাট থেকে নীচে নামার আগে দু’জন মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দেয় শব্দ করলে মেরে ফেলবে। মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে ব্যাটারি খুলে ফেলে। দুষ্কৃতীরা হিন্দিতে কথা বলছিল।
এ দিনের ঘটনার পরে গয়েরকাটা এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। গয়েরকাটা থেকে বানারহাট থানার দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। এলাকায় অন্তত একশো দোকান রয়েছে। কয়েক বছর ধরে এলাকায় চুরির ঘটনা সহ দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য হেড়ে গেলেও পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারছে না বলে বিভিন্নি মহলে অভিযোগ উঠেছে। গয়েরকাটা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রঞ্জন দত্ত বলেন, “কাছে থানা নেই। ওই কারণে ভয়ে দিন কাটে। এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি থাকলে অনেকটা নিশ্চিন্ত থাকতে পারতাম।” স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ির জন্য তাঁরা আন্দোলনে নামবেন। |