কাজ করেও সাত মাস ধরে বেতন না পাওয়ার অভিযোগ তুলে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের নির্বাহী বাস্তুকারের অফিসে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন পাম্প অপারেটররা। সোমবার সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে দফতরের শিলিগুড়ির নির্বাহী বাস্তুকারের অফিসে। অফিসের কর্মীদের বাইরে বের করে দিয়ে তালা ঝোলানো হয়। শেষপর্যন্ত রাত ৮টা নাগাদ দফতরের প্রধান বাস্তুকার বাসব সরকারের হস্তক্ষেপে আন্দোলন তুলে নেওয়া হয়। উত্তরবঙ্গ পিএইচই মেকানিক্যাল ওয়ার্কাস ইউনিয়নের অভিযোগ, বেতন না পেয়ে কর্মীরা পরিবার নিয়ে সঙ্কটের মধ্যে পড়েছেন। ৩ জন পাম্প অপারেটর অসুস্থ হয়ে মারা যান।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত গুপ্ত বলেন, “কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে আমাদের দিন কাটাতে হচ্ছে। এমন দিন যাচ্ছে আমাদের আধপেটা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তে হচ্ছে। ৩ জন কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের চিকিৎসার টাকা জোটেনি। সে কারণে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। এই অবস্থায়, চরম আন্দোলন ছাড়া আমাদের পথ নেই। প্রধান বাস্তুকার সাতদিনের টাকা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন। তাই আন্দেোলন তুলে নেওয়া হল। টাকা না পেলে ফের আন্দোলনে নামব।” বিষয়টি নিয়ে শিলিগুড়ি অফিসের নির্বাহী বাস্তুকার অরূপ ভট্টাচার্য মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সংগঠনের দাবি, উত্তরবঙ্গে প্রায় সাড়ে তিন হাজার চুক্তিভিত্তিক পাম্প অপারেটর রয়েছেন। প্রতিদিন জল ছাড়া থেকে পাম্পের খুঁটিনাটি রাজ সামলান তাঁরা। দৈনিক হিসেবে তাদের টাকা দেওয়া হয়। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত দৈনিক ১৯৬ টাকা করে তাঁদের পাওয়ার কথা। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ওই টাকা বেড়ে ২১৭ হয়েছে। কিন্তু গত সাত মাস ধরে তারা কোনও টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা কয়েক দফায় দফতরের আধিকারিকদের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। অবস্থান বিক্ষোভও হয়েছে। কাজ না হওয়ায় তাঁরা দফতরের অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন।
কয়েকজন পাম্প অপারেটর বলেন, “পানীয় জল সরবরাহের কাজে কোনওরকম সমস্যা যাতে না হয় তা আমরা দেখি। আমরা কাজ না করলে সাধারণ মানুষ পানীয় জল পাবেন না। সেটা দফতরের কর্তারাও জানেন। তার পরেও আমাদের বিষয়টি নিয়ে কোনও আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এর পরিনাম ভয়ঙ্কর হবে।” এদিন সকালে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েকশ পাম্প অপারেটর নির্বাহী বাস্তুকারের অফিসে গিয়ে কর্মীদের বাইরে বের করে দেন। এর পরেই সেখানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পরে ভক্তিনগরের পুলিশ ঘটানস্থলে যায়। রাতে পুলিশ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিক এবং সংগঠনের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠকের পর তালা খুলে দেওয়া হয়। |