গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা স্বীকার ব্লক নেতার, অস্বীকার মন্ত্রীর
ভেড়ির দখল নিয়ে হাড়োয়ায় বোমা-গুলি, ভাঙচুর, আগুন
মেছোভেড়ির দখল নিয়ে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর সংঘর্ষে চলল বোমা, গুলি। সেই সঙ্গে বাড়িতে ভাঙচুর, লুঠপাট ও আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাড়োয়ার লেবুতলা এলাকা। প্রায় কয়েক লক্ষ টাকার মাছ লুঠ হয়। সংঘর্ষে জখম হয়েছেন চারজন। আহতদের কলকাতায় আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তৃণমূলের এক পক্ষের দাবি, তাঁদের দলে সিপিএম থেকে আসা লোকজনই এ দিন ভেড়ি দখলে নামে। পুলিশকে খবর দেওয়া হলেও তারা আসেনি। অন্য পক্ষের বক্তব্য, এতদিন জোর করে গরিব চাষিদের জমি দখল করে রাখা হয়েছিল। মানুষ এখন তা মুক্ত করছে। সময়ে পুলিশ না যাওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে পুলিশের বক্তব্য, ওই অভিযোগ সত্যি নয়। খবর পাওয়া মাত্র ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। দু’পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে ভেড়ির দখলদারি নিয়ে গোপালপুরে দলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদ ভাল চোখে দেখছেন না হাড়োয়া পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ তথা ব্লক তৃণমূল নেতা সঞ্জু বিশ্বাস। তিনি বলেন, “আমরা চাই পুলিশ দোষীদের গ্রেফতার করে শাস্তি দিক। এলাকায় শান্তি থাকুক। দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। বিষয়টি জেলা নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে।” যদিও দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পর্যবেক্ষক ও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “ওখানে দু’দল দুষ্কৃতীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এর সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই। দলের কেউ জড়িতও নয়।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গোপালপুর-১ নম্বর পঞ্চায়েতের লেবুতলার কাঁকড়াকাটি, বিজতলা এবং ৪ নম্বর কাঁকড়াকাটিএই তিনটি ভেড়ির দখল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগের সরকারের আমলে সিপিএমের লোকজন ওই সব ভেড়ি দখল করে রেখেছিল। নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেগুলি এখন তৃণমূলের দখলে। এ নিয়ে সংঘর্ঘ লেগেই রয়েছে। মাঝখান থেকে তাঁরা আতঙ্কে ভুগছেন।
এ দিন বেলা ১টা নাগাদ ভেড়ির দখল নিয়ে তৃণমূলের দুই নেতা মনিরুল মণ্ডল ও আবু খায়ের ওরফে ছোটন মুন্সির গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বেধে যায়। দু’পক্ষই পরস্পরকে লক্ষ্য করে বোমা, গুলি ছুড়তে থাকে। মেছোভেড়ির তিনটি আলাঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। লুঠ করা হয় মাছ। রাম বাগ নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাঙচুর ও লুঠপাট করা হয়। বাধা দিতে গেলে মহিলাদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, প্রায়ই ভেড়ির দখল নিয়ে সংঘর্ষ বাধে। বোমা, গুলি চলে। ভয়ে গ্রামের মানুষ রাস্তায় বেরোতে ভয় পান। অথচ এ সব বন্ধে পুলিশ কোনও ব্যবস্থাই নেয় না।
পুলিশের বক্তব্য, দু’পক্ষই ভেড়ি তাদের দখলে বলে দাবি করায় এ দিন গোলমালের সূত্রপাত। তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির নেতা ছোটন মুন্সি বলেন, “আমরা ৩০ জন মিলে ভেড়ি চালাচ্ছিলাম। এক সময় সিপিএমে থাকা মনিরুল মণ্ডল এখন তৃণমূলে ভিড়েছে। এ দিন তার নেতৃত্বে শতাধিক লোক বোমা, গুলি ছুড়তে ছুড়তে আমাদের ভেড়ির আলাঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। কয়েক লক্ষ টাকার মাছ লুঠ করে। পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও তারা আসেনি।” মনিরুলের পাল্টা অভিযোগ, “ছোটন ও তার দলের লোকেরা জোর করে গরিব মানুষের জমি দখল করে রেখেছে। জমির লিজের টাকা চাইতে গেলে এ দিন সিপিএমের লোকজনকে নিয়ে আমাদের উপরে হামলা করে ছোটন। ওদের বোমা, গুলিতে আমাদের দু’জন জখম হয়েছে। পুলিশকে পুরো ঘটনা জানানো হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.