জেলাপরিষদ সামলনোর পাশপাশি রেজিনগর বিধানসভার উপনির্বাচনী যুদ্ধের আসরেও তিনি এখন রাতিমতো দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি মুর্শিদাবাদ জেলাপরিষদের সহকারি সভাধিপতি সিরাজুল ইসলাম মণ্ডল।
রেজিনগর বিধানসভার উপনির্বাচনে বামফ্রন্টের প্রার্থী হিসাবে সিরাজুল ইসলাম মণ্ডলের নাম সোমবার ঘোষণা করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। আরএসপি-র মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটির ওই সদস্য ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থীর সঙ্গে মুখোমুখি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাত্র সাড়ে ৮ হাজার ভোটের ব্যবধান পরাজিত হয়েছিলেন। এ বারের উপনির্বাচনে তিনি কিন্তু জেতার ব্যাপারে ষোল আনার উপর বিশ আনাই আশাবাদী। ওই আশাবাদের কারণ এক দিকে অকাল নির্বাচন ও অন্য দিকে সেই উপনির্বাচন বামফ্রন্ট, কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা।
২০১১ সালের বিধানসভার নির্বাচনে রেজিনগর কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী হুমায়ুন কবীর তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিরাজুল ইসলাম মণ্ডলকে প্রায় সাড়ে আট হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে বিধায়ক নির্বাচিত হন। গত নভেম্বর মাসে বিধায়ক পদ ত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দিয়ে হুমায়ুন কবীর প্রাণীসম্পদ দফতরের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। তার ফলে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি ওই কেন্দ্রে উপনির্বাচনের দিন ধার্য হয়েছে। বামফ্রন্ট প্রার্থীর দাবি, “মানুষ ৫ বছরের জন্য কংগ্রেস প্রতীকের প্রার্থীকে ওই কেন্দ্রে নির্বাচিত করেছিলেন। ওই বিধায়ক মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে নির্বাচিত হওয়ার পর মাত্র দেড় বছরের মাথায় দলত্যাগ করলেন। ফলে অনভিপ্রেত অকাল ভোটের জন্য মানুষ তাঁর প্রতি বিরূপ। অন্য দিকে উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রতীকের প্রার্থী জয়ী হওয়ার পর ফের দল বদল করে আরও একটি অকাল ভোট ডেকে আনবে না তার নিশ্চয়তই বা কোথায়? তাই এ বার অধিকাংশ মানুষই বামফ্রন্টের পক্ষে।”
জয়ের ব্যাপারে এ হেন আশাবাদী ৫৭ বছরের সিরাজুল ইসলামের রাজনীতির হাতেখড়ি ১৯৭৩ সাল নাগাদ। পেশায় কৃষিজীবী সিরাজুলের শিক্ষগত যোগত্য একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত। প্রায় ১২ বিঘা জমির মালিকের রয়েছে দুই ছেলে, বিবাহিত দুই মেয়ে আর রয়েছে স্ত্রী। সিরাজুলের বাড়ি নওদা থানার চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এলামনগর গ্রামে। থানা নওদা হলেও বিধানসভা কিন্তু রেজিনগর। দলের সর্বক্ষণের কর্মী সিরাজুল বলেন, “তখন আমি একাদশ শ্রেণির ছাত্র। আর এস পি-র নওদা লোকাল কমিটির সম্পাদক আব্দুস সাত্তার ও দলের জেলা নেতা জয়ন্ত বিশ্বাসের হাত ধরে তখন আমার রাজনৈতিক জীবনের শুরু।” ১৯৭৮-এ পঞ্চায়েত ভোটে প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন। তারপর ১৯৯৮ ও ২০০৩-এ পর পর দু’বার নওদা পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা। ২০০৩ সালে দলের নওদা ও হরিহরপাড়া জোনাল কমিটির সম্পাদক হন তিনি। ২০০৮ সালে নির্বাচিত হলে তাঁকে মুর্শিদাবাদ জেলাপরিষদের সহকারি সভাধিপতি করা হয়। বর্তমানে তিনি দলের মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটির সদস্য। |